৮৯ বছর বয়সে পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি
চিকিৎসাখাতে সফল ক্যারিয়ার গড়েছিলেন ম্যানফ্রেড স্টেইনার। কয়েক প্রজন্মের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের হেমাটোলজি পড়ান তিনি। তবে সবসময়ই মনে আক্ষেপ ছিল কেন পদার্থবিজ্ঞানে ক্যারিয়ার গড়তে পারলেন না। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পূরণ হয়েছে তার স্বপ্ন। ৮৯ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন স্টেইনার।
কয়েক সপ্তাহ পর ৯০-এর কোঠায় পা রাখতে চলা স্টেইনার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "এটি আমার তৃতীয় ডক্টরেট ডিগ্রি। কিন্তু এর জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এই বয়সে এসে হলেও শেষ পর্যন্ত তা অর্জন করতে পেরেছি।"
"আমি সত্যিই হাওয়ায় ভাসছি," বলেন তিনি।
পদার্থবিজ্ঞান প্রীতি ছিল শুরু থেকেই
বোসন কণার ওপর গবেষণা করেন ম্যানফ্রেড। তার থিসিস পেপারের নাম 'কারেকশনস টু দ্য জিওমেট্রিকাল ইন্টারপ্রিটেশন অব বোসোনাইজেশন'।
স্টেইনার বলেন, "কোনো একদিন পদার্থবিদ হব, এই স্বপ্ন আমি চিরকাল দেখেছি।"
ভিয়েনায় বেড়ে ওঠা স্টেইনারের ভাষায় অস্ট্রিয়ান টান এখনো রয়েছে। পদার্থবিজ্ঞানের কোন বিষয়টি উপভোগ করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'প্রিসিশন'।
"কোয়ান্টাম বিদ্যায় ফেমটোমিটারের দূরত্ব নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। বিষয়টি আমাকে বরাবরই মুগ্ধ করেছে। এছাড়া, অ্যাস্ট্রনমির কথাই ধরুন। এখানে আলোকবর্ষের হিসাবে পরিমাপ করা হয়," বলেন তিনি।
স্টেইনার আরও বলেন, "কিন্তু এই বিশাল ব্যবধান সত্ত্বেও পদার্থবিজ্ঞানের নীতি বিষয়গুলোকে একসূত্রে জুড়েছে। এই সূক্ষ্মতাই আমাকে বরাবর মুগ্ধ করেছে। আমি সবসময়ই গণিত ভালোবাসতাম। একে পদার্থবিজ্ঞানের ভাষা বলা চলে।"
স্বপ্নকে অনুসরণ কর
চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে জীবনের দীর্ঘ সময় ব্যয় করা নিয়েও আক্ষেপ নেই ম্যানফ্রেড স্টেইনারের। কিন্তু, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নির্ভুলতার বিষয়টি সুনিশ্চিত কিছু নয় বলেও মনে করেন তিনি।
পুরোনো কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, "একসময় আমি মেনে নিয়েছিলাম যে পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে আর কাজ করা সম্ভব হবে না। আর তাই আমি মেডিসিনেই নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। আর সেজন্য আমি গবেষণা বেছে নেই। আমি গবেষণা করা পছন্দ করতাম।"
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "কোনো স্বপ্ন থাকলে তা অনুসরণ কর। হাল ছেড়ে দিও না। কিন্তু তাতেও না হলে অন্য কিছুতে মন দিও।"
"কিন্তু সবার আগে নিজের স্বপ্নকেই অনুসরণ কর," বলেন ম্যানফ্রেড স্টেইনার।
- সূত্র: এনপিআর