গ্রিসে ট্রেন দুর্ঘটনা: নিহত প্রবাসী বাংলাদেশির পরিচয় শনাক্ত
গত ১ মার্চ গ্রিসে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৫৭ জন যাত্রীর মধ্যে ছিলেন একজন প্রবাসী বাংলাদেশি। গতকাল (সোমবার) তার পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তার নাম মো. ইদ্রিস মিয়া। তিনি দশ বছর ধরে গ্রিসে বসবাস করছিলেন।
সেদিন গভীর রাতে গ্রিসের লারিসা শহরের কাছে মর্মান্তিক এ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। ৩৩ বছর বয়সী নিহত ইদ্রিস ইন্টারসিটি আইসি-৬২ ট্রেনে করে এথেন্স থেকে থেসালোনিকি যাচ্ছিলেন।
গ্রিক গণমাধ্যম সিটি টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত মো. ইদ্রিসের এক বন্ধু তার এ যাত্রা সম্পর্কে জানতেন। তিনি ইদ্রিসের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার ব্যবহৃত একটি টুথব্রাশ দেশটির লারিসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে টুথব্রাশে প্রাপ্ত ডিএনএ নমুনার সাথে দুর্ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত মরদেহের ডিএনএ'র সাথে মিলিয়ে নিহত ইদ্রিসকে শনাক্ত করা হয়। গ্রিসে বিক্রয়কর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন ইদ্রিস।
গ্রিসে ট্রেন দুর্ঘটনাটির পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না বাংলাদেশি অভিবাসী ইদ্রিসের। দেশটিতে থাকা পরিচিতজনেরা তাকে না পেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন। গ্রিসের বাংলাদেশ দূতাবাসেও এ বিষয়ে জানানো হয়। সোমবার ইদ্রিসের মৃত্যুর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে দূতাবাস।
নিহত ইদ্রিস চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ৮ নম্বর ইউনিয়নের মৃত সাহেব মিয়ার ছেলে। ভাগ্য বদলের আশায় প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি জমান তিনি। পরে সেখান থেকে ইদ্রিস ইউরোপের দেশ গ্রিসে চলে যান।
ট্রেন দুর্ঘটনাটিকে গ্রিসের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা বলে অভিহিত করা হয়েছে। প্রায় ৩০০ যাত্রীবাহী ট্রেনটির সাথে একটি মালবাহী ট্রেনের সজোরে ধাক্কা লাগে।
সংঘর্ষের পর যাত্রীবাহী ট্রেনটির প্রথম দুটি বগিতে আগুন ধরে সেগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। এ ঘটনার ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন দেশটির অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী কোস্টাস কারামানলিস। এছাড়াও, দুর্ঘটনার পরপরই লারিসা শহরের স্টেশন মাস্টারকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।