গুলিস্তানে ভবন বিস্ফোরণ: উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী- র্যাবের ডগ স্কোয়াড
রাজধানীর গুলিস্তানে বিস্ফোরণ হওয়া ভবনটিতে দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো।
মঙ্গলবার বিকেলে এ ভবনেই এক বিস্ফোরণে অন্তত ১৮ জন নিহত ও ১২০ জনের অধিক আহত হন।
বুধবার (৮ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি দল ঘটনাস্থলে প্রবেশ করে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালেদ।
তিনি বলেন, "মোট চারটি ফায়ার ফাইটিং ইউনিট এই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে রয়েছে। শিগগিরই আরও দল যোগ দেবে।"
গতকাল রাত ১১টার দিকে উদ্ধার কাজ স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস। দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছেন সেনা সদস্যরাও।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল রশিদ টিবিএসকে বলেন, "আমরা র্যাব, রাজউক এবং ফায়ার সার্ভিসের সাথে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছি। ভবনটির হেলথ এসেসমেন্ট করা হচ্ছে। ফলাফলের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"
"এছাড়াও ধ্বংসস্তূপের নিচে কেউ চাপা পড়ে আছে কিনা ট্যাঁ খুঁজে দেখছে র্যাবের ডগ স্কোয়াড।ভবনটির অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। আমাদের উদ্ধার অভিযান চলাকালীনই এটি ধসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।"
এদিকে বিস্ফোরণের উৎস সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ এখনও কিছু বলতে পারছেনা। বিস্ফোরণের কারণ শনাক্ত করতে দুটি তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, 'ঝুঁকিপূর্ণ' হওয়ায় ভবনের বেসমেন্টে এখনও উদ্ধার অভিযান সম্ভব হয়নি।
কর্মীরা আশংকা করছেন, ভবনের বেসমেন্টে পানির ট্যাংক ফেটে গিয়ে ভিতরে আরও মানুষ আহত অবস্থায় থাকতে পারে।
গতকাল বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। গুলিস্তানে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ঠিক পাশেই অবস্থিত ব্র্যাক ব্যাংকের গুলিস্তান শাখা।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত মোট ১৭টি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজন, মোহাম্মদ সিয়াম (২০) গত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, গুলিস্তানের আলুবাজার এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে ভবনে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটি বাণিজ্যিক ভবন ছিল।
'নিচতলায় বিভিন্ন স্যানিট্যারি সামগ্রী ছিল। পাশেই ব্র্যাক ব্যাংক ছিল। এছাড়া বিভিন্ন কমার্শিয়াল দোকান ছিল,' বলেন তিনি।
গোলাম ফারুক বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনাটি নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা, তা তদন্ত করে জানানো হবে।
এদিকে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গুলিস্তানের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন করতে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গুলিস্তানে বিস্ফোরণে নিহতদের অধিকাংশই মাথায় আঘাত পেয়ে রক্তক্ষরণে মারা গেছেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, 'এত বড় বিস্ফোরণ কী কারণে হলো তা তদন্তের পর জানা যাবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।'