নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্পিডবোটে লক্ষ্মীপুর-ভোলা যাতায়াত করছে শত যাত্রী
১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর মেঘনা নদীর বিপদচিহ্নিত এলাকায় ছোট নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও লক্ষ্মীপুরে মজুচৌধুরীর হাট থেকে স্পিডবোটে মেঘনা নদী হয়ে ভোলায় যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে এ ঘাটে যাত্রী চাপ শুরু হয়েছে। আর ইজারাদাররা তৈরি করছে স্পিডবোটের সিন্ডিকেট। তারা যাত্রীদের বাধ্য করছে স্পিডবোটে চলাচল করতে।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাট থেকে ২০টি স্পিডবোট যোগে ভোলার উদ্দেশে যাত্রী পারাপার হতে দেখা গেছে।
এসময় সেখানে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দুইজনকে স্পিডবোট ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের উপস্থিতিতেই স্পিডবোটের চালকদের যাত্রীদেরকে ওঠাতে দেখা গেছে। পুলিশ সদস্যদের মধ্যে একজন ছিলেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর উত্তাল থাকায় মেঘনা নদীকে 'ডেঞ্জার জোন' হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ সময় এই নদীতে স্পিডবোট, ট্রলারসহ ছোট আকারের সকল যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট থেকে স্পিডবোট বা ট্রলারযোগে যাত্রী পারাপার করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, "সবাইকে ম্যানেজ করেই প্রভাবশালী এ চক্র নির্বিঘ্নে অবৈধভাবে যাত্রী পারাপার করছে।"
এসময় স্পিডবোটের একজন চালককে ভোলার ভাড়া কত তা জানতে চাইলে তিনি জানান, যাত্রীপ্রতি এখন ৬০০ টাকা। তবে আগেরদিনও ছিল যাত্রীপ্রতি ৪০০ টাকা। ঈদ সামনে রেখে ২০০ টাকা ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অন্যদিকে একই ঘাট থেকে বিআইডব্লিউটিসির ৩টি সি-ট্রাক এবং ২টি জাহাজ চলছে, যেগুলোতে ভাড়া ২০০ টাকা। একই ঘাটে ৫টি ফেরি যাতায়াত করছে তাতে যাত্রী ভাড়া ৮০ টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মজুচৌধুরীর হাট নৌ-পুলিশের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. আবু তাহের মিয়া বলেন, "ঘাট এবং নদীর নিরাপত্তায় নৌ-পুলিশের সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। স্পিডবোট চলাচলের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব বিআইডব্লিউটিএ এর। তারা বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করলে আমরা তাদের সহযোগিতা করি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা ট্রলার এবং স্পিডবোট চালকদের ডেকে সতর্ক করেছি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তারা যাতে যাত্রী পারাপার না করে।"
তিনি জানান, গত ১১ এপ্রিল ট্রলারযোগে যাত্রী পারাপার করায় সোহাগ নামে একজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অন্যদিকে মজুচৌধুরীরহাট ঘাটে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা না থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায় নি। তবে বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা মোঃ কাউছার বলেন, "আমরা চলাচলটা দেখি কিন্ত নিরাপত্তা দেখে চাঁদপুরের বিআইডব্লিউটিএ। তাই স্পিডবোট বা ছোট যানে যাত্রী পরিবহনে আমাদের কিছু করার নেই।"