ফেসবুক, গুগলকে পুরোপুরি করের আওতায় আনার সুপারিশ সিপিডি’র
ফেসবুক, গুগলসহ অন্যান্য গ্লোবাল টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোকে পুরোপুরি করের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সিপিডি করবিষয়ক এক গবেষণায় এই সুপারিশ উঠে এসেছে। শনিবার ঢাকায় সিপিডি আয়োজিত 'ট্যাক্সিং দ্য ডিজিটাল ইকোনমি: ট্রেড অফ অ্যান্ড অপরচুনিটিজ' শীর্ষক সংলাপে এই সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় সিপিডি এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান গবেষণা সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, ফেসবুক, গুগলসহ বিশ্বের বড় বড় টেক জায়ান্ট কোম্পানির নিকট থেকে ভ্যাট আদায় করা গেলেও আয়কর আদায় করা যাচ্ছে না। কারণ বাংলাদেশে তাদের অফিস না থাকায় কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইন) নেই। ফলে আয়কর নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অথচ বিশ্বের বড় বড় এসব টেক জায়ান্ট প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিপুল অংকের অর্থ আয় করছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি করের আওতায় আনার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) প্রয়োজনীয় নীতি গ্রহণের সুপারিশ করে তিনি।
তিনি আশা করেন আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এনবিআর এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফেসবুক, গুগলসহ অন্যান্য গ্লোবাল টেক জায়ান্ট কোম্পানিকে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। কিন্ত এর বিপরীতে প্রদেয় কর আমরা পাচ্ছি না। তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বাড়াতে নতুন নতুন এসব সেবার বিপরীতে করারোপ করতে হবে।
সরকারের ভিশন অনুযায়ী দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে দেশে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর বিকল্প নেই উল্লেখ করে সিপিডি কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে ধাপে ধাপে বেরিয়ে আসার সুপারিশ করে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কর রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং ডিজিটাল অর্থনীতির আরও কিভাবে প্রসার ঘটানো যায়, সেজন্য সুচিন্তিত উদ্যোগ নেওয়াটা জরুরি। তিনি বলেন, প্রতিবছর যদি কর অব্যহতি চলতে থাকে, তাহলে দেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মত প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় বাড়াবো কিভাবে। সেজন্য যেসব জায়গায় কর অব্যহতি আছে-তার কিছু জায়গায় ধাপে ধাপে কর আরোপ করতে হবে। সে বিষয়ে একটা রোডম্যাপ থাকাটা জরুরি।
একইসঙ্গে তিনি স্টার্টআপ কোম্পানির প্রসারের জন্য তাদেরকে প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেন। তবে এও বলেন, স্টার্টআপকে এমনভাবে ইনসেনটিভ দিতে হবে, তারা যেন নতুন নতুন খাত তৈরি করে। যার ফলে কর আহরণের নতুন জায়গা তৈরি হবে।
সিপিডির এই বিশেষ ফেলো বলেন, ডিজিটাল ইকোনমির কিছু জায়গায় দ্বৈত কর বিদ্যমান রয়েছে। এসব পরিহার করতে হবে। একইসঙ্গে তিনি ই-কমার্স, ই-বিজনেস প্রসারে নীতি সহায়তা প্রদানের সুপারিশ করেন।
সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ও আহসান আদেলুর রহমান, সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্ষ ও নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, বেসিস পরিচালক হাবিবুল্লাহ এন করিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।