জাতীয় দলের সঙ্গে আর কাজ করবেন না সিডন্স
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে ফিরেছিলেন জাতীয় দলের সাবেক প্রধান কোচ জেমি সিডন্স। চুক্তি অনুযায়ী জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়েই বেশি কাজ করার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ান এই কোচের। কিন্তু ব্যাটিং কোচ না থাকায় বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু সিরিজে জাতীয় দলে ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে তাকে। তবে এবার সিডন্স নিজেই জানিয়ে দিলেন, জাতীয় দলের হয়ে আর কাজ করবেন না তিনি।
ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সুপার লিগের তিনটি ম্যাচ খেলতে দুই ভাগে দেশ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল। প্রথম ফ্লাইটে টিম ম্যানেজমেন্টের বেশিরভাগ সদস্য গেছেন, পরের ফ্লাইটে গেছেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু দলের সঙ্গে যাননি সিডন্স। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন, জাতীয় দলের সঙ্গে আর কাজ করবেন না তিনি। বাংলাদেশে আসার প্রধান উদ্দেশ্য পূরণে জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করবেন বিসিবির এই ব্যাটিং পরামর্শক।
সিডন্স তার পোস্টে লিখেছেন, 'জাতীয় দলের সঙ্গে আমি আর কাজ করব না। আমার মনে হয় বিসিবিকে আমি সেরাটা দিতে পারি পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গে কাজ করে, যেন জাতীয় দলের পাশেপাশে থাকা ক্রিকেটারদের দেখভাল ভালোভাবে করা এবং দেশের জন্য পরবর্তী সুযোগটা কাজে লাগানোর জন্য তাদের প্রতিটি দিন উন্নতি করা নিশ্চিত করা যায়। তরুণ ক্রিকেটারদের স্কিল নিয়ে কোচিং করাতে আমি ভালোবাসি এবং বিসিবিও এটা চায়। এ জন্যই এটা সম্ভব করতে পেরেছি।'
জাতীয় দলে কাজ করলে বেশি খ্যাতি মেলে, যা পছন্দ করেন সিডন্স। কিন্তু 'এ' দল ও টাইগার্সের হয়ে কাজ করতে মুখিয়ে আছেন জানিয়ে অজি এই কোচ তার পোস্টে আরও লিখেছেন,'জাতীয় দলে কাজ করলে খ্যাতি বেশি এবং সেটিও আমি পছন্দ করি, কিন্তু স্কিল গড়ে তোলা, উন্নতি এবং অনুশীলন হয় নেটে এবং মিরপুরের নেটে প্রচণ্ড গরমে ঘাম ঝরিয়ে। 'এ' দল ও টাইগার্সের হয়ে ভবিষ্যতের ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করতে মুখিয়ে আছি।'
জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের উন্নয়নে যে সিডন্সকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, সেটা মনে করালেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীও। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, 'বিসিবির ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ হয় জেমির। কেবল জাতীয় দলের হয়ে কাজ করবেন, এমন ছিল না। শুরুতে জাতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জেমির বেশি আগ্রহ তরুণ প্রতিভা নিয়ে কাজ করায়। এ জন্যই তাকে 'এ' দল ও টাইগার্সে কাজে লাগানো হয়েছে।'
২০২১ সালের ডিসেম্বরে সিডন্সকে ব্যাটিং পরামর্শক করার ঘোষণা দেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে আসেন ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করা সিডন্স। অ্যাশওয়েল প্রিন্স দায়িত্ব ছাড়ায় ব্যাটিং কোচ করা হয় তাকে। বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু সিরিজে এই দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।
সিডন্সকে এই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ায় আবারও ব্যাটিং কোচহীন হয়ে পড়লো বাংলাদেশ। তবে আপাতত এই পদটি পূরণ করার পরিকল্পনা নেই বিসিবির। নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'জাতীয় দলের জন্য নতুন ব্যাটিং কোচ নেওয়ার চিন্তা আমাদের এই মুহূর্তে নেই। জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে যারা আছেন, আপাতত তারাই চালিয়ে নেবেন। ব্যাটিং কোচ নিতে হবে, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে এ রকম কোনো চাহিদার কথা আমাদের জানানো হয়নি। তাই ব্যাটিং কোচ নেওয়ার চিন্তা আমরা এখন করছি না। ভবিষ্যতে দলের প্রয়োজনের ভিত্তিতে কোচ বা পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে।'