সুদান সংঘাত: আটকে পড়া বাংলাদেশিরা খাদ্য ও পানির সংকটে
পোর্ট সুদানের একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে আটকে পড়া প্রায় সাড়ে ৭০০ বাংলাদেশি খাদ্য ও পানির সংকটে পড়েছেন। গেল এপ্রিলে সুদানে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হওয়ার পর দলটিকে রাজধানী খার্তুম থেকে সরিয়ে পোর্ট সুদানে আনা হয়; সপ্তাহখানেক যাবত তারা সমুদ্রপথে নিরাপদে সৌদি আরবের জেদ্দায় যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে আরব নিউজ (এএন)-এর এক প্রতিবেদনে।
তবে অস্থায়ী শিবিরে খাবার ও পানির সংকটের পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মরিয়া হয়ে উঠেছেন আটকে পড়া মানুষেরা।
মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, "আমাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার পানি নেই। পানি কতটা কিনে পারা যায়? খাবার পানির ব্যবস্থায়ই করতে পারছি না, আর গোসলের কথা তো বাদই দিলাম।"
খুব দ্রুতই অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে তাদেরকে উদ্ধার করার আশাও দেখছেন না তারা।
বাহাদুর বলেন, "প্রতিদিনই আমাদের বলা হয়, আমাদের উদ্ধার করতে নাকি শিগগিরই জাহাজ আসবে। কিন্তু তা এখনও দেখা যাচ্ছে না।"
বাংলাদেশ-সুদান ফ্রেন্ডশিপ কাউন্সিলের সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, "বেতন না পাওয়ায় তারা খালি হাতেই পোর্ট সুদানে এসে পৌঁছেছেন। খাবার পাওয়া গেলেও কেনার সামর্থ্য তাদের নেই। খার্তুমে সবকিছু ছিনতাই হয়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ মানুষই এখানে কোনো জিনিসপত্র ছাড়া এসেছেন।"
গত ১৫ এপ্রিল সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনীগুলোর মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে হাজারো প্রবাসী সুদান ছাড়ার চেষ্টা করছেন।
সংঘাতে এ পর্যন্ত কয়েকশো মানুষ নিহত এবং কয়েক হাজার আহত হওয়ার পাশাপাশি লাখখানেক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে দেশটির রাজধানী খার্তুমের আবাসিক এলাকা।
এমন অবস্থায় সেখানে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা বর্তমানে একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। ছোট একটি শ্রেণিকক্ষের মেঝেতে রাত কাটাচ্ছেন তারা।
এদিকে, অস্থায়ী শিবিরে অবস্থানরতদের কবে নাগাদ সরিয়ে নেওয়া হতে পারে সে বিষয়ে এখনও নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার উইংয়ের মহাপরিচালক শাহ মোহাম্মদ তানভীর মনসুর বলেন, "আটকে পড়াদের জন্য যা যা করা দরকার সুদানে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে তা-ই করতে বলা হয়েছে।"
তবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদূতের ক্ষমতারও কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে বলে উল্লেখ করেন তিনি।