বৈদেশিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৪৩%, অর্থছাড় ২১%
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড় ও প্রতিশ্রুতি দুই-ই কমেছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ ফেলতে পারে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-মার্চ সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড় ২১% কমেছে। জুলাই-মার্চে উন্নয়ন সহযোগীরা বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করেছে ৫.৩৬ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছিল ৬.৭৯ বিলিয়ন ডলার।
এ সময়ে প্রতিশ্রুতি কমেছে ৪৩%। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে প্রতিশ্রুতি এসেছে ৩.০৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫.৪৩ বিলিয়ন ডলার।
একইসময়ে গত বছরের তুলনায় ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৯%।
ইআরডির কর্মকর্তারা আরো জানান, উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন সক্ষমতার অভাবে অর্থছাড় বাড়েনি। এছাড়া গত অর্থবছরের বাজেট সহায়তা ও টিকা কেনার অর্থ ছাড় করেছিল উন্নয়ন সহযোগীরা।
চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত শুধুমাত্র এআইআইবির কাছ থেকে ২৫০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-মার্চ সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে জাপান সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী (জাইকা)। এই সংস্থাটি ছাড় করেছে ১.৩ বিলিয়ন ডলার।
অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ৮৫৪.২৯ মিলিয়ন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ৮০১.৯৩ মিলিয়ন ডলার, রাশিয়া ৭৪৭.২ মিলিয়ন ডলার, চীন ৬৩৭.৬৭ মিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে।
ইআরডি সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রতিশ্রুতি কমেছে ২.৩৫ বিলিয়ন ডলার।
উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে এসওএফআর রেট বেশি হওয়ার কারণে সরকার বাজার ভিত্তিক সুদে ঋণ কম নিচ্ছে। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমেছে।
বর্তমানে এসওএফআর রেট ৪ শতাংশের ওপরে।
ইআরডি তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে জাইকার কাছ থেকে। সংস্থাটির কাছ থেকে জুলাই-মার্চ সময়ে প্রতিশ্রুতি এসেছে ১.২৯৩ বিলিয়ন ডলারের।
এছাড়া এডিবির কাছ থেকে ৮৪৪.৭৫ মিলিয়ন ডলার, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৩০০ মিলিয়ন এবং এআইআইবির কাছ থেকে ২৫৩.৫ মিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।
রাশিয়ার কাছ থেকে রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঋণের আসল ও সুদ বাবদ ৩২৯ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করায় মার্চে সরকারে মোট ঋণ পরিশোধ বেড়েছে।
রূপপুরের ঋণ পরিশোধসহ চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে সরকার ঋণ পরিশোধ করেছে মোট ২.০৫৯ বিলিয়ন ডলার, যা এর আগের বছর একই সময়ে ছিল ১.৫৯৫ বিলিয়ন ডলার।