'মার্কিন বিনিয়োগ পেতে প্রতিযোগী দেশগুলোর মতো সহজ বিনিয়োগ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে'
বাংলাদেশকে নিয়ে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের প্রচুর আশাবাদ ও আগ্রহ রয়েছে, তবে তার আগে কিছু বিষয়ে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
সোমবার (৮ মে) দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড কার্যালয় পরিদর্শনের পর টিবিএস সম্পাদক ইনাম আহমেদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় অংশ নেন রাষ্ট্রদূত হাস। সেখানে তিনি দেশে মার্কিন বিনিয়োগ আকর্ষণ, ডি-ডলারাইজেশন প্রসঙ্গ, রোহিঙ্গা ইস্যু ও যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থী ভিসালাভে জটিলতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী দেশ আমেরিকা। কিন্তু পরিবর্তিত এ বৈশ্বিক দৃশ্যপটে আরও বেশি মার্কিন বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ কী করতে পারে?
এইতো গেল সপ্তাহে আমি ওয়াশিংটনে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল-এর নির্বাহী বোর্ডের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। বাংলাদেশে যারা প্রথমবারের মতো বিনিয়োগের কথা ভাবছেন অথবা এখানে বিনিয়োগ বাড়ানোর সম্ভাবনার কথা চিন্তা করছেন, তাদের মধ্যে বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি অবিশ্বাস্যরকমের আশাবাদ ও আগ্রহ রয়েছে। তারা এখানে তাকালে প্রবৃদ্ধির হার, দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসা কয়েক মিলিয়ন মানুষ, ও ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে দেখতে পান। তাই বাংলাদেশ নিয়ে প্রচুর উৎসাহ রয়েছে।
কিন্তু মানুষ তো আর সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে তারপর সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় না যে তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে; তারা ভাবে তাদেরকে বিদেশে কোথাও বিনিয়োগ করতে হবে। এরপর তারা বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, ভারতের কথা ভাবে। তারা আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের কথা খোলামনে ভাবে। এরপর তারা তুলনা শুরু করে: কোথায় বিনিয়োগের সবচেয়ে ভালো পরিবেশ আছে, কোথায় আমি সবচেয়ে দ্রুত পণ্য আনা-নেওয়া করতে পারব, কোথায় সবচেয়ে উপযুক্ত পরিবহন সংযোগ রয়েছে, সরবরাহ চেইনের পরিস্থিতি কী, অর্থ কি দ্রুতই প্রবেশ করা ও বের করে আনা যাবে, আমি কি পারিশ্রমিক পাব — আসলে বাংলাদেশ যেহেতু আরও বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চাইছে, তাই তাকে এসব প্রশ্নগুলোর দিকেই তাকাতে হবে।
বাংলাদেশকে কেবল নিজের চমৎকার উন্নয়নের দিকগুলোর দিকে তাকালেই হবে না, সেই সঙ্গে প্রতিযোগীদের বিরুদ্ধে কীভাবে তাল মেলাবে তাও বিবেচনায় রাখতে হবে। আর বাংলাদেশ যেহেতু স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে শীঘ্রই বেরিয়ে যাচ্ছে, তাই এ বিষয়টি দেশটির জন্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে। তবে মার্কিন কোম্পানিগুলো নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের দিকে নজর রাখছে। যেমনটা আপনি বলছিলেন, আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) এখানে সর্ববৃহৎ বৈদেশিক বিনিয়োগকারী, আমার মনে হয় এ ধারা চলমান থাকবে… এটা স্রেফ সফলভাবে চুক্তিগুলো নিশ্চিত করার বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে অনেকগুলো কোম্পানি চীন থেকে সরে এসেছে। আপনি কি মনে করেন মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশ একটি ঈপ্সিত বিনিয়োগ গন্তব্য হতে পারে?
অবশ্যই। আমার মনে হয়, আপনি যখন উৎপাদনের জন্য কেবল একটি দেশের ওপর বেশিমাত্রায় নির্ভর করে থাকেন, তখন কী হয় তা কোভিডের সময় পুরো বিশ্বই দেখেছে। তাই সরবরাহ চেইন বহুমুখী করার প্রয়োজনীয়তাও টের পাওয়া গিয়েছে। সেক্ষেত্রে কোভিডের মতো কোনো দুর্যোগের সময়ও সরবরাহের জন্য আপনার হাতে একাধিক উৎস থাকবে। বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে এমন একটি দেশ যার ওপর মানুষজন ভরসা করবে। এমনকি কোভিডের সময়ও আমরা বাংলাদেশকে পিপিই ও অন্যান্য দরকারি ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে এগিয়ে আসতে দেখেছি। তাই আমি এখানে হাই-এন্ড টেক্সটাইল ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনাগুলো দেখতে পাই। আবারও বলতে হয়, এটা কেবল বাংলাদেশের এমন একটা পরিবেশ তৈরি করার ব্যাপার যেটা দেখে কোম্পানিগুলো বলবে, 'আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছি।'
টেক্সটাইলের ক্ষেত্রে আমরা আগে মার্কিন বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতাম যা ২০১৩ সালে স্থগিত করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশ মার্কিন তুলার বাধ্যতামূলক ফিউমিগেশন বন্ধ করেছে। পোশাকশিল্পের মালিকেরা মনে করছেন, এটা জিএসপি সুবিধা ফেরতের দাবি করার একটি ভিত্তি। আপনি কীভাবে দেখবেন?
এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় রয়েছে। প্রথমত, জিএসপি কখনো আরএমজি বা টেক্সটাইল কাভার করেনি, এটা কখনোই এ খাতের অংশ ছিল না। আর দ্বিতীয়ত, যদিও আমরা তুলার ফিউমিগেশনের ক্ষেত্রে খুব কাছাকাছি পর্যায়ে রয়েছি, তবে বিষয়টির এখনো নিষ্পত্তি হয়নি — আমরা এখনো বাংলাদেশ সরকারের একটি চূড়ান্ত সমঝোতার জন্য অপেক্ষা করছি, যেটা আমরা হবে বলে বিশ্বাস করি। এটা মার্কিন তুলা রপ্তানিকারকদের জন্য — যাদের সংগ্রহে বিশ্বের সবচেয়ে ভালো তুলা রয়েছে — দারুণ একটি সুবিধা হবে।
আমি অনেক আলোচনায় অংশ নিয়েছি। গতকাল বিজিএমইএ-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। তাই আমি জানি বাংলাদেশ চাইছে মার্কিন তুলা এনে, পোশাক তৈরি করে সে পোশাক শুল্কমুক্ত পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় রপ্তানি করতে। এর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনে একটি পরিবর্তন আনতে হবে। আর যেকোনো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আইনের পরিবর্তন আনা কখনোই সহজ কাজ নয়। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে আমি যা নিয়ে কথা বলেছি তা হলো, আমার কংগ্রেসের সঙ্গে এ আইন কীভাবে পরিবর্তন করা যায় সেটা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আর তাছাড়া, আমরা এখনো বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য সবচেয়ে বড় বাজার, তাই একটা খুবই, খুবই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এভাবে টিকে থাকার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দুর্দান্ত চমক দেখিয়েছে।
বেশ কয়েকটি দেশ তাদের বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আপনি এ ডি-ডলারাইজেশনের ব্যাপারটি কীভাবে দেখেন?
কত মানুষ ডি-ডলারাইজেশন নিয়ে কথা বলছে এবং অন্য মুদ্রায় স্থানান্তর হচ্ছে বনাম এটি কতটা সম্ভব ও কতটি দেশ আদতে তা করছে — আমার মনে হয় এ দুইয়ের মধ্যকার পার্থক্যের দিকে নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তো, সাধারণভাবে, এবং বাংলাদেশও এভাবে দেখে — ধরুন আপনি রপ্তানি আয়ের চেয়ে বেশি ডলার খরচ করে ফেললেন, তাহলে আপনার ঘাটতি তৈরি হবে এবং আপনি রিজার্ভ নিয়ে সমস্যায় পড়বেন। একই কথা সত্য হবে ইউয়ান বা অন্য যেকোনো মুদ্রার ক্ষেত্রেও। বাংলাদেশ চীন থেকে রপ্তানির তুলনায় অনেক বেশি আমদানি করে। তাই দায় মেটাতে ইউয়ান সংকটে পড়বে এটি।
দ্বিতীয়ত দেখতে হবে আন্তর্জাতিকভাবে কোন মুদ্রাটি সবচেয়ে বেশি স্বীকৃত, কোন মুদ্রাটির সবচেয়ে বেশি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, সবচেয়ে স্বাধীন ব্যাংক আছে বলে আপনার মনে হয়, কোন মুদ্রার ওপর আপনি দীর্ঘমেয়াদে নির্ভর করতে পারবেন। এটা একদম ক্রিপ্টোর মতো। কয়েক বছর আগে ক্রিপ্টো দিয়ে ডলারকে প্রতিস্থাপনের কথা উঠেছিল — আমার মনে হয় এখনকার পরিস্থিতিও কিছুটি ওরকম এবং অনুমেয় ভবিষ্যতের জন্য ডলার গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রা হিসেবেই থাকবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একটি বড় ধাক্কা হলো বাংলাদেশের মতো কম উন্নত দেশগুলোর ওপর এ যুদ্ধের প্রভাব। আমরা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সমস্যায় পড়েছি। আপনার রাশিয়ান তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, কিন্তু ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে। বাংলাদেশও কি পারে না? যুক্তরাষ্ট্র তো এটাও বলেছে যে তুলনামূলক দরিদ্র দেশগুলোকে রাশিয়ান তেল পেতে সহায়তা করবে এটি। তার কী হচ্ছে?
প্রথমত, আমি শেখ হাসিনা ও জাপানে তার সফরের সময় দেওয়া যৌথবিবৃতির প্রশংসা করতে চাই। ওই বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, জাতিসংঘের স্থাপিত আন্তর্জাতিক রীতিনীতির বিরুদ্ধে গিয়ে রাশিয়া অবৈধভাবে ইউক্রেনে আক্রমণ চালিয়েছে। দ্বিতীয়ত, তিনি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। রাশিয়ার অনৈতিক আক্রমণের জন্য এসবের শুরু হয়েছে — এ ধরনের আলোচনার জন্য এটা সত্যিই একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা পয়েন্ট বলে আমার মনে হয়।
দ্বিতীয় পয়েন্টটি হলো, আমাদের কখনো তেল, গ্যাস, সার ও কৃষির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না, এখনো নেই। ওগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই। রাশিয়ান তেল পাওয়া সহজ নয়, তবে এ নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞাও জারি নেই।
আর তৃতীয়ত, আমরা ভারতসহ রাশিয়ান তেল আমদানিকারক দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করেছি। সুতরাং, হ্যাঁ, তারা এখনো রাশিয়ান তেল কিনছে। কিন্তু বাজারের দামের চেয়ে অনেক কম দামে কিনছে। তারা যখন এটিকে পরিশোধন করে পুনরায় রপ্তানি করছে, তখনো তা বাজারের দামের চেয়ে কম হচ্ছে। কীভাবে বাকি বিশ্বকে রাশিয়ার অনৈতিক ইউক্রেন আক্রমণের প্রভাব থেকে রক্ষা করা যায়, এ নিয়ে চিন্তা করতে আমারা অনেক সময় ব্যয় করেছি।
সম্প্রতি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমার সফর করেছেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করতে। এটি ছিল চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টার অংশ। আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
গত প্রায় ছয় বছর ধরে বাংলাদেশের উদারতার কথা আমি প্রথমেই স্বীকার করতে চাই। বাংলাদেশ যখন রোহিঙ্গাদের জন্য এর হৃদয় ও সীমান্ত খুলে দিয়েছিল, তখন কেউই চিন্তা করেনি রোহিঙ্গারা এত দীর্ঘসময় ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ২.১ বিলিয়ন ডলার প্রদানের মাধ্যমে এ প্রচেষ্টায় সবচেয়ে বড় দাতা এবং সবার চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো প্রত্যাবাসন। আমিও চীন, মিয়ানমার, ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিবেদন দেখছি। তবে একটা কথা আমি বলব যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউএনএইচসিআর, ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় দাতা দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করা এবং এগুলোকে এ আলোচনার অংশ রাখাটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।
মিয়ানমার নিয়ে আমি যা দেখছি তার ভিত্তিতে বলি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের পরিস্থিতি এখনো উপযুক্ত নয়… তাদেরকে এমন জায়গায় ফিরতে হবে যেখানে তারা নিরাপদ থাকবেন, মর্যাদাসহ বাঁচতে পারবেন, নিজেদের কাগজপত্র ও নাগরিকত্ব পাবেন এবং আরেকবার গণহত্যার মুখে পড়ার ভয়ে থাকবেন না। তাই আমি মনে করি প্রত্যাবাসনের চেষ্টা যেমন বজায় রাখতে হবে, তেমনিভাবে যথাসময়ে এটি নিয়ে একটি পরিষ্কার প্রক্রিয়াও প্রস্তুত রাখতে হবে।
প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে যায় পড়াশোনা করতে। কিন্তু ভিসা প্রক্রিয়া জটিল এবং দূতাবাসে অনেক ভিসা আবেদন জমে আছে। এ পরিস্থিতি সহজ করতে আপনারা কী করছেন?
এ নিয়ে দু-একটা মিথ প্রচলিত আছে। প্রথমটি হচ্ছে ভিসা নিয়ে, দ্বিতীয়টি হচ্ছে ভিসার সহজলভ্যতা নিয়ে। আমাদের এডুকেশনইউএসএ-এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখা নিয়ে মানুষজনকে জানানো হয়। আর সত্যিটা হলো, এখানে বৃত্তির পরিমাণও বেশি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা বাংলাদেশির সংখ্যা বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি গতিতে বাড়ছে। এটি এখন ১৩তম বৃহৎ গোষ্ঠী… এক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটানোর আরও অনেক জায়গা আছে। আমরা সত্যিই এটিকে উৎসাহ দেই এবং যেসব বাংলাদেশি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ পান — তারা সবাই যেন ক্লাস শুরু হওয়ার আগে যোগ্যতার সাপেক্ষে সাক্ষাৎকারের সুযোগ পান তা নিশ্চিত করতে আমরা সবরকম চেষ্টা করি। গত বছর আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থী ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। আমরা সুপার ফ্রাইডে নামক একটি সিরিজ তৈরি করেছি। এক্ষেত্রে আমরা শুক্রবারে কনস্যুলার কর্মীদের নিয়ে আসি এবং তারা সবাই মিলে শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। এটা করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে ক্লাসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পেতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র কি সর্ববৃহৎ দল বিএনপিকে নির্বাচনের আনতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে?
সোজা কথায় বললে, না। আমরা কোনো মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছি না। এটা আমাদের কাজ বা কর্তব্য নয়। এটা গোপন কোনো বিষয় নয় যে আমরা বাংলাদেশে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান করি। আমরা শেখ হাসিনা ও তার নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু করার ইচ্ছাকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন পন্থার খোঁজ করছি… কিন্তু এ সমীকরণে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিয়ে আসার মতো কোনো কাজ আমরা করি না। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটা শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোরই সিদ্ধান্ত। সুতরাং এখানে আমাদের ভূমিকা নেই। কিন্তু আমরা আশা করি এমন নির্বাচনের যেখানে অংশগ্রহণকারী সব দলই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী থাকবে এবং বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করা হবে।