প্লাস্টিকের বিনিময়ে ডিসকাউন্ট! যেভাবে চলছে পরিবেশবান্ধব ই-কমার্স প্লাটফর্ম বাজার ৩৬৫
ধরুন, আপনার বাসায় তেলের বোতল, চিপসের প্যাকেট কিংবা হারপিকের খালি বোতল জমে আছে। কেমন হবে, যদি আপনার কাছে জমে থাকা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি সুপারম্যান বা স্পাইডারম্যানের মতো কোনো কমিক চরিত্রের মিনিয়েচার আপনার সামনে আসে কিংবা প্লাস্টিকের বিনিময়ে কিছু অর্থপ্রাপ্তির সুযোগ ঘটে? বাসায় অনাদরে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের বিনিময়ে যদি কিছু প্রাপ্তি হয়, তাহলে বোধহয় মন্দ লাগার কথা না। প্লাস্টিক যে মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সেটি সম্পর্কে তো প্রায় সকলেই অবগত। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিক ছাড়া চলারও কোনো জো নেই। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির মাধ্যমে ক্ষতিকর প্লাস্টিক দূরীভূত করার উপায় নিয়েই কার্যক্রম শুরু করেছে 'বাজার ৩৬৫'।
'বাজার ৩৬৫'- পরিবেশবান্ধব ই-কমার্স প্লাটফর্ম হিসেবে পরিচিতি পাওয়া একটি প্রতিষ্ঠান। যার পেছনে বটবৃক্ষের মতো দাঁড়িয়ে আছেন এলেক মিথুন ও মুনতাসির রশিদ ভুঁইয়া নামক দুজন ব্যক্তি। যাদের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর আলয়- যাদের লক্ষ্য প্লাস্টিক ব্যবহার কমিয়ে নিরাপদ পৃথিবী গড়ে তোলা।
"ম্যাজিকের শুরু এখানেই"- 'ম্যাজিক' শব্দটিকে প্রাধান্য দিয়েই ২০২২ সালে শুরু হয়েছিলো এক নতুন পদযাত্রা। এই ম্যাজিক অবশ্য যেমন তেমন ম্যাজিক নয়- এই ম্যাজিক পরিবেশ বাঁচানোর লড়াই। এই ম্যাজিক ধরিত্রীকে দূষণমুক্ত করার প্রতিজ্ঞা। জাদুর মতো প্লাস্টিক মুক্ত নতুন পৃথিবী গড়ার শপথ নিয়ে একদল তরুণের হাত ধরে শুরু হয় 'বাজার ৩৬৫' এর যাত্রা।
প্লাস্টিক দিয়ে শুরু
করোনা মহামারীর ক্রান্তিকালে পৃথিবী সম্পর্কিত একটি ভাবনা দাগ কাটে 'বাজার ৩৬৫' এর স্বত্বাধিকারীদের মনে। মানবসৃষ্ট সমস্যা তো অহরহই ঘটছে আমাদের চারপাশে। এর ফল যেমন ধরিত্রীকেও ভুগতে হচ্ছে, তেমনি মানুষের কাছেও বুমেরাং হয়ে সেসব ফেরত আসছে। তাই পরিবেশ রক্ষার তাগিদে বাংলাদেশ তথা বিশ্বকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতেই এলেক মিথুন ও মুনতাসির রশিদ ভুঁইয়ার হাত ধরে শুরু হয় 'বাজার ৩৬৫' এর পথচলা। ক্রমশ পরিবেশ দূষণের ত্রাহি ত্রাহি রব থামাতে তারা নিয়েছেন মুদি সামগ্রীর মাধ্যমে প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করার উদ্যোগ।
প্লাস্টিকেই কেন মনোনিবেশ এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিষ্ঠাতা এলেক মিথুন বলেন, 'আমরা দেখলাম যে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী (গ্রোসারী) এমন একটা জিনিস, যেখানে প্রতিনিয়ত সবকিছু আপনাকে কিনতে হবে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় আমরা আসলে অনেক প্লাস্টিক আইটেম কনজিউম করে ফেলি। আমাদের এখানে এটা একটা স্বাভাবিক বিষয় যে তেল কিনলে তেলের সাথে প্লাস্টিকের বোতল আসে। তখন আমরা চিন্তা করলাম- ব্যবসায়ের একটা লক্ষ্য যদি না থাকে, একটা ইতিবাচক দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব যদি তৈরি করতে না পারে- তাহলে ব্যবসা করার থেকে না করা ভালো।'
নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে গিয়ে 'বাজার ৩৬৫' এর কর্ণধারদের প্রথমে মাথায় আসে প্লাস্টিকের কথা। সেই সময় ব্যবসায়ের ডিজাইন তারা এমনভাবে করে- গ্রাহক তাদের কাছ থেকে যেসব দৈনন্দিন সামগ্রী কিনে নেবে, সেগুলোতে থাকা প্লাস্টিক ফেরত দিলেই পাবে কিছু পয়েন্ট তথা ডিসকাউন্ট। যে ডিসকাউন্ট তারা পরবর্তী কেনাকাটায় ব্যবহার করতে পারবে। 'বাজার ৩৬৫' এর লক্ষ্য ছিলো, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মাধ্যমে জমাকৃত প্লাস্টিকের একটা পরিণতি নিয়ে আসা। সেগুলো যাতে পরিবেশের ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে নজর রাখা।
স্বত্বাধিকারী এলেক জানান, 'যারা প্লাস্টিক ফেরত দিচ্ছে, তাদেরকে আমরা ধন্যবাদ স্বরূপ একটা রিওয়ার্ড পয়েন্ট দেই। সুতরাং আপনি আমাকে তেলের বোতল যখন ফেরত দেবেন সেটার জন্য আপনার অ্যাকাউন্টে একটা রিওয়ার্ড পয়েন্ট জমা হবে। সেটা দিয়ে আপনি আসলে আবার প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন আমাদের কাছ থেকে। যে প্লাস্টিক ফেরত দিচ্ছে তার জন্য সুবিধা হচ্ছে দুটো। একটা হচ্ছে- সে নিশ্চিত করছে যে প্লাস্টিক হস্তান্তরিত করছে আমাদের মাধ্যমে, সেটা আসলে ভাগাড়ে যাচ্ছে না। একইসাথে তিনি রিওয়ার্ডেডও হচ্ছেন, যেটা দিয়ে তিনি শপিং করতে পারবেন আমাদের স্টোর থেকে।'
বছরের ৩৬৫ দিনেই সাধারণ মানুষের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন বলে এলেক মিথুন ও মুনতাসির রশিদ ভুঁইয়া প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন 'বাজার ৩৬৫'।
যেভাবে কাজ করেন তারা
প্লাস্টিকের খুঁটিনাটি জানার মাধ্যমে প্রথম পদক্ষেপ রাখে 'বাজার ৩৬৫'। কর্ণধার এলেক মিথুন বলেন, 'আমরা প্লাস্টিকের বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে জানতে পারি প্রথমে। এরপর আমরা একটা এক্সপার্ট টিমের সাথে নেটওয়ার্ক করি। প্রাথমিকভাবে পুরো বিষয়টিকে ডিজাইন করার পর যারা প্লাস্টিক নিয়ে কাজ করে- তাদের সাথে যোগাযোগ করি। তখন আমরা জানলাম, কিছু প্লাস্টিক আছে যেগুলো রিসাইকেল করা যায় না। আবার কিছু প্লাস্টিক আছে যেগুলো দিয়ে নতুন কিছু তৈরি করা যায়। এরপরেই আমরা একটা বিজনেস ডিজাইন করলাম যে গ্রাহক আমাদের মাধ্যমে যেই পণ্যটি কিনুক, সেখানে যে প্লাস্টিক আসবে- সেগুলো আমাদের কাছে ফেরত দিতে পারবে।'
এখানেই প্রশ্ন উঠে আসে আদতে জমাকৃত প্লাস্টিকের পরিণতি কী হয়। এলেক মিথুনের ভাষ্যমতে, যেসব প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করার যোগ্য সেগুলোকে তারা পুনর্ব্যবহার প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসেন। যেসব প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করার যোগ্য নয় সেগুলো তারা তাদের 'রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট' এর পার্টনারদের কাছে চলে যায়। তাদের কাছে জমাকৃত প্লাস্টিক যাতে কোনো ভাগাড়ে গিয়ে জমা না হয়, সেটা নিশ্চিত করার কাজও তারা করে থাকে।
রিসাইক্লিং পার্টনার হিসেবে 'বাজার ৩৬৫' এর সাথে কাজ করে 'গারবেজম্যান'। বর্তমানে আমাদের দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করেন গারবেজম্যান। সাধারণ ময়লা-আবর্জনাও যে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার হতে পারে সেটিই তাদের কাজের বিষয়। গারবেজম্যান তাদের নিজস্ব ইকো সিস্টেমে পুনর্ব্যবহারের কাজ করে থাকে।
'বাজার ৩৬৫' এর ওয়্যারহাউজে জমাকৃত প্লাস্টিক ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দুটি আলাদা বিভাগ রয়েছে। জমাকৃত প্লাস্টিকগুলোই তারা তাদের রিসাইকেল পার্টনারের কাছে প্রেরণ করেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহের জন্য 'বাজার ৩৬৫' যে ব্যাগ ব্যবহার করে তা যাতে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখে তারা। একবছরের মধ্যে মাটির সাথে মিশে যাবে এমন ব্যাগ তারা সরবরাহকার্যে ব্যবহার করেন।
চাল, ডাল থেকে হাঁড়িপাতিল- সব পাবেন এখানে!
বর্তমানে ৪০০০টির মতো সামগ্রীর সন্ধান পাওয়া যাবে 'বাজার ৩৬৫' এ। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী অর্থাৎ চাল, ডাল, ফলমূল, মাছ, মাংস, মশলা, ডিম, চকলেট থেকে শুরু করে সাবান, শ্যাম্পু তথা রূপচর্চা বিষয়কসামগ্রী, শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখার পণ্য এমনকি হাঁড়ি-পাতিলও পাওয়া যায় এখানে। মূলত সোর্সিং টিমের মাধ্যমেই নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি সামগ্রী সংগ্রহ করেন 'বাজার ৩৬৫'।
'বাজার ৩৬৫' এর পার্টনারশিপ ও সাসটেইনেবিলিটি ম্যানেজার লামিয়া জাহিন বলেন, "আস্তে আস্তে আমরা চেষ্টা করছি আমাদের প্রোডাক্ট লাইনটাকে বড় করার। কিছু পণ্য আছে যেগুলো আমরা এখনো ডেভেলপ করছি। 'জিরো ওয়েস্ট' নামে একটা ক্যাটাগরি রাখা হবে। আমরা নিশ্চিত করবো এই প্রোডাক্টগুলো আমাদের কাছ থেকে যারা কিনছে, ওগুলো থেকে যেন কোনো আবর্জনা তৈরি না হয়। যেমন আমরা ব্যাম্বু ব্রাশ তৈরি করছি এখন।"
'বাজার ৩৬৫' সবসময় চেষ্টা করে কম দামে ভালো পণ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার। অনেকসময় তাদের ওয়েবসাইটে নানানরকম অফারের সম্ভার দেখা যায়। তবে একজন ব্যক্তি যাতে একটিই পণ্য অতিরিক্ত পরিমাণে নিতে না পারে সেজন্য তারা জুড়ে দেন শর্ত। কারণ তাদের লক্ষ্য একাধিক মানুষ যেন অফারের নির্ধারিত পণ্য গ্রহণ করতে পারে। এ প্রেক্ষিতে পার্টনারশিপ ও সাসটেইনেবিলিটি ম্যানেজার লামিয়া জাহিন বলেন, 'মার্কেট অনেক ওঠানামা করে। যেমন একটা অফার এখন দিলাম, এরপর দাম আরো কমতে-বাড়তে পারে। তার কারণে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অফার দিয়ে থাকি। এই কারণে শর্তের বিষয় উল্লেখ থাকলে সবার জন্য বুঝতে সুবিধা হয়।'
গ্রাহকের প্রয়োজনকে সবসময় গুরুত্বের শীর্ষে রাখে 'বাজার ৩৬৫'। গ্রাহক অর্ডার করতে চাইলে বাজারের তালিকা হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করে কিংবা ফোনে জানিয়ে দিলেই হবে। ২ ঘণ্টার মধ্যেই পণ্য পৌঁছে যাবে গ্রাহকের বাসার দরজার সামনে। প্রতিদিন আনুমানিক ১৫০ থেকে ২০০ জনের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেন তারা। প্রতিমাসেই ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ গ্রাহকের দেখা তারা পান, যারা একাধিকবার কেনাকাটা করে থাকেন।
গ্রাহকের থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহের পর সেগুলো দিয়ে প্ল্যান্ট পট, বিভিন্ন কমিক চরিত্রের মিনিয়েচার যেমন- সুপারম্যান, স্পাইডারম্যান, ব্যাটম্যান তৈরি করেন 'বাজার ৩৬৫' এর সদস্যরা। এগুলো সাধারণত গ্রাহকদের উপহার হিসেবে দেওয়ার জন্যই তৈরি করছেন তারা।
গ্রাহকদের ভালোবাসায় মুগ্ধ তারা
একবছরের পাইলটিং শেষে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৮ জনের একটি দল নিয়ে শুরু হয়েছিলো 'বাজার ৩৬৫'। বর্তমানে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ কাজ করে এখানে। বর্তমানে নিরবচ্ছিন্নভাবে অপারেশনাল টিম, ডেলিভারি টিম, সোর্সিং করার টিম, কোয়ালিটি চেকার টিম, সিএসএ টিম সহ ৫টি টিম কাজ করছে 'বাজার ৩৬৫' এ। সিএসএ টিম মূলত কল সেন্টার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার কাজ করে। তাছাড়া কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স টিম, মার্কেটিং টিম, ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করা টেক টিম, এডমিন ও এইচআর টিমও নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে।
ঈদুল ফিতরের তিন দিন আগে সাইবার অ্যাটাকের শিকার হয়েছিলো 'বাজার ৩৬৫'। সেসময় তারা বুঝতে পেরেছিলেন, সাধারণ মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কতটা বেশি। 'বাজার ৩৬৫' এর কর্ণধার এলেক মিথুন বলেন, 'মানুষজন ওয়েবসাইট ডাউন হওয়ায় কলসেন্টারে আমাদের ফোন দিয়ে অর্ডার দিয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপে লিস্ট পাঠিয়ে অর্ডার দিয়েছে, ম্যাসেঞ্জারে অর্ডার দিয়েছে। এই যে মানুষের ভালোবাসা, এটা হচ্ছে আমাদের জন্য সব সময় ভালো লাগার একটা জিনিস।'
চ্যালেঞ্জের বিষয়ে বলতে গিয়ে এলেক মিথুন বলেন, 'আমাদের জন্য সবচেয়ে প্রথমে এবং সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যেটা ছিল যে এই যে প্লাস্টিকগুলো আমরা সংগ্রহ করছি, সেটার একটা সমাধান বের করা। এখনো আমাদের কাছে কিছু প্লাস্টিকের কোনো সমাধান নেই। যেগুলো নিয়ে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট টিমে কাজ চলছে। আশা করছি, আমরা খুব দ্রুতই এর একটা সমাধান বের করে ফেলবো।'
সচেতনতা সৃষ্টিতে ক্যাম্পেইন
প্লাস্টিক ফেরত দেওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য অনেকটা সময় ব্যয় করতে হয়েছে 'বাজার ৩৬৫'-কে। এজন্য প্রতিনিয়ত কম বেশি প্রচারণা চালাতে হয়েছে তাদের। লামিয়া জাহিন বলেন, 'আমরা প্রতিনিয়তই চেষ্টা করতে থাকি। আমরা যেখানে সরাসরি যোগাযোগ করি, সেখানে আমরা লিখে দিই যে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ফেরত দিলে রিওয়ার্ড পয়েন্ট পাওয়া যাবে। ওখানে আমরা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছি, আমাদের পোস্টগুলোতে উল্লেখ করে দিচ্ছি। আমরা এখনো তেমন কোনো অফলাইন ক্যাম্পেইন সেরকমভাবে করিনি যে মাঠে গিয়ে মানুষজনকে বলা প্লাস্টিক ফেরত দিতে হবে। আমাদের অধিকাংশ ক্যাম্পেইন এখন আমরা অনলাইনেই রেখেছি। কারণ অনলাইনে আমরা কম সময়ে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি।'
অনলাইনে প্রচারণার জন্য তারা বিভিন্ন ইনফ্লুয়েন্সারদের বেছে নিয়েছেন। প্লাস্টিক ফেরত সংক্রান্ত ভিডিও তৈরির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত তাদের চেষ্টা চলছে দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরি করার। রমজান মাসে তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত 'বি ফিট' নামে একটি প্রচারণাও চালিয়েছিলেন। ব্যক্তি নিজে যাতে সুস্থ থাকে এবং পরিবেশ যাতে সুস্থ রাখে তার জন্যই নিয়েছিলেন এমন উদ্যোগ।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভার্টাইজিং অ্যাসোসিয়েশনের (আইএএ) উদ্যোগে ২০২৩ সালে 'অলিভ ক্রাউন অ্যাওয়ার্ড' অর্জন করে 'বাজার ৩৬৫'। যারা মূলত 'গ্রিন ইনিশিয়েটিভ' নিয়ে কাজ করে তারাই এই অ্যাওয়ার্ডের আওতাভুক্ত হয়। এই জায়গা থেকে নতুন উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে এই পুরস্কার পান তারা। যারা সবুজ পরিবেশ নিয়ে কাজ করে তাদেরকে স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যেই দেওয়া হয় এই পুরস্কার।
'বাজার ৩৬৫' এর ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রযুক্তির ব্যবহার আরো বৃদ্ধি করা। তাদের ইচ্ছা 'বাজার ৩৬৫' এর সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যুক্ত করা। তাছাড়া যারা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার তারা যাতে সহজে অর্ডার করতে পারেন, তার জন্যও কাজ করার ইচ্ছা আছে তাদের। আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুদিনের মধ্যে অ্যাপের উদ্বোধন করার পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে। বর্তমানে একটি ওয়্যারহাউজ থাকলেও আরো তিনটি ওয়্যারহাউজের কাজ চলছে। এখন তাদের পরিকল্পনা সারা ঢাকা শহরজুড়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা পৌঁছে দেওয়া। তবে আগামী দুই বছরের মধ্যে যাতে দেশজুড়ে সেবা প্রদান করতে পারে- এমন লক্ষ্যেই কাজ করছে তারা।