মাথায় কুমিরের কামড়! হাত দিয়ে চোয়াল সরিয়ে প্রাণে বাঁচলেন এক ব্যক্তি
মাথায় কুমির কামড় দেওয়ার পরেও হাত দিয়ে চোয়াল সরিয়ে সৌভাগ্যবশত প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন এক ব্যক্তি। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের এক রিসোর্টের পাশে ডুবসাঁতারের সময় মারকাস ম্যাকগোয়ানের সাথে এ ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির।
৫১ বছর বয়সী মারকাস কুমিরের মুখ থেকে জীবন বাঁচাতে পারলেও মাথায় বেশ আঘাত পেয়েছেন।
প্রথমে তাকে বিমানে করে দ্বীপটির কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে অধিকতর চিকিৎসার জন্য কেয়ার্নসে পাঠানো হয়।
ভয়ংকর এ অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মারকাস জানান, হ্যাগারস্টোন দ্বীপ থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে একটি দলের সঙ্গে পানিতে নামেন তিনি। পানিতে সাঁতারের এক পর্যায়ে তিনি অনুভব করেন, একটি প্রাণী পেছন থেকে তার মাথায় কামড় বসিয়েছে।
মারকাস বলেন, "প্রথমে আমি ভেবেছিলাম প্রাণীটা হাঙ্গর। কিন্তু যখন উপরে তাকালাম, তখন বুঝতে পারলাম এটি কুমির। তখন আমি কোনোমতে হাত দিয়ে তার চোয়াল দুটি ফাঁক করে আমার মাথা বের করে আনি।"
মারকাস ধারণা করছেন, কুমিরটির বয়স কম ছিল। প্রথম প্রচেষ্টায় বাধা পেয়ে কুমিরটি আবারো তার দিকে এগিয়ে আসে। তখন মারকাস ফের কুমিরটিকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হন। তবে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় কুমিরটি তার হাতে কামড় দেয়।
অন্যদিকে কুইন্সল্যান্ডের পরিবেশ বিভাগ এ বিষয়টি তদন্তের কথা জানিয়েছেন। তবে তাদের পক্ষ থেকে এও বলা হয়, "খোলা সাগরে সুনির্দিষ্ট করে কোনো একটি কুমিরকে চিহ্নিত করা খুবই ঝামেলার। এসব প্রাণী পানিতে দৈনিক প্রায় ১০ কিলোমিটারের মতো দূরত্ব অতিক্রম করে।"
গত কয়েক মাসে কুমিরের আক্রমণে অস্ট্রেলিয়ায় একাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
কুইন্সল্যান্ডের ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের অধীনে, যেসব এলাকায় মানুষের জন্য কুমির হুমকিস্বরূপ আচরণ করতে পারে সেসব এলাকা থেকে তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। ক্ষেত্রবিশেষে কুমিরের বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে তাদেরকে ইউথানাইজ (ব্যথাহীনভাবে মৃত্যু) করা হয়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির কেয়ার্নসের এক প্রত্যন্ত এলাকায় সাড়ে ৪.২ মিটার লম্বা একটি কুমির এক ব্যক্তির ওপর হামলা চালায়। কুমিরটি তার পোষা কুকুর খেয়ে ফেলে।
আবার চলতি মাসের শুরুতে দেশটির কেনেডি নদীতে ৪.১ মিটার লম্বা একটি কুমিরের দেহের ভেতরে ৬৫ বছর বয়সী কেভিন দারমোদি নামে এক জেলের মরদেহের অংশবিশেষ খুঁজে পাওয়া যায়।
১৯৭৪ সালে কুইন্সল্যান্ডে কুমির শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সময়ে অঙ্গরাজ্যটিতে কুমিরের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার। বর্তমানে এই অঙ্গরাজ্যে কুমিরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার।