ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে যুক্ত হলো আধুনিক কোচ
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা আধুনিক উচ্চগতির নতুন কোচ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের বিরতিহীন ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস। মঙ্গলবার (৬ জুন) সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে লাল-সবুজের নতুন কোচে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে সুবর্ণ এক্সপ্রেস।
রেলওয়ের তথ্যমতে, গত ৪ এপ্রিল সকালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার টঙ্গীর উদ্দেশে কোরিয়ার নতুন কোচ নিয়ে সুবর্ণ এক্সপ্রেস পরীক্ষামূলকভাবে চলে। সবকিছু ঠিক থাকায় আজ সকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ১৮টি নতুন আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত কোচ নিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে ৭টি শোভন চেয়ার, ৪টি এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা), একটি পাওয়ার কার, দুটি গার্ডব্রেক, খাবার গাড়ি রয়েছে। এই ট্রেনে মোট আসন সংখ্যা ৮৯০।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জাফর আলম টিবিএসকে বলেন, 'কোরিয়া থেকে আমদানি করা আধুনিক দ্রুতগতির ১৮টি কোচ সংযোজন করা হয়েছে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে। নতুন কোচ সংযোজিত হলেও ভাড়ার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। আধুনিক কোচে সংযুক্ত হওয়ায় যাত্রী সেবার মান বাড়বে।'
রেলওয়ের তথ্যমতে, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জন্য ১৫০টি মিটারগেজ কোচ সরবরাহ করছে দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ কোম্পানি সুংশিন আরএসটি-পসকো ইন্টারন্যাশনাল। এ লক্ষ্যে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই চুক্তি স্বাক্ষর হয় উভয় পক্ষের মধ্যে। 'বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ এবং ১৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ' শীর্ষক প্রকল্পটি ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫৮ কোটি ৮১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রকল্পটিতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক। আমদানিকৃত কোচগুলো স্টেইনলেস স্টিল বডি, বায়ো-টয়লেট সংযুক্ত, স্বয়ংক্রিয় এয়ার ব্রেক, স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং ডোরসহ অনেক আধুনিক সুবিধা এই যাত্রীবাহী ক্যারেজের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
প্রকল্প পরিচালক পার্থ সরকার বলেন, প্রকল্পটির সময়সূচি অনুযায়ী কোচগুলো আসছে। ১৫০ কোচের মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৮টি কোচ দেশে এসে পৌঁছেছে। বাকিগুলোও সময়মতো আসবে।
১৫০টি কোচের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্লিপিং বার্থ ৩০টি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কোচ ৩৮টি, শোভন চেয়ার ৪৪টি, খাবার গাড়িসহ শোভন চেয়ার কোচ ১৬টি, পাওয়ার গাড়িসহ শোভন চেয়ার কোচ ১২টি, খাবার গাড়ি একটি এবং পরিদর্শন গাড়ি একটি।
কোচ সংগ্রহ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে অতি পুরোনো ১৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ প্রতিস্থাপন এবং মিটারগেজ ও ডুয়েলগেজ সেকশনে যাত্রীবাহী ক্যারেজের স্বল্পতা দূর করা, উন্নতমানের আধুনিক ও নিরাপদ যাত্রীবাহী ক্যারেজের মাধ্যমে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করা, বর্ধিত যাত্রী চাহিদা মেটানোর জন্য নতুন ট্রেন চালু করা, বাংলাদেশ রেলওয়েতে মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মিটারগেজ ও ডুয়েলগেজ সেকশনে নিরাপদ ও উন্নত ট্রেন পরিসেবা নিশ্চিত করা, বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা এবং ক্রমবর্ধমান যাত্রী ও মালামাল পরিবহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিষেবা বৃদ্ধি করা।