৮৬ বছর বয়সে মারা গেছেন আধুনিক ইতালির রূপকার বারলুসকোনি
ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনি ৮৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। সোমবার (১২ জুন) দেশটির মিলানে সান রাফায়েল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন কিংবদন্তিতুল্য এ রাজনীতিবিদ।
লিউকেমিয়া ও ফুসফুসের সংক্রমণের জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বারলুসকোনি। গত শুক্রবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বারলুসকোনির মৃত্যুর সংবাদে টুইটারে শোক প্রকাশ করেছেন ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইডো ক্রসেটো। তিনি লেখেন, "বারলুসকোনির মৃত্যু একটি 'বিশাল শূন্যতা' তৈরি করেছে। একটি যুগের অবসান ঘটল। বিদায় সিলভিও।"
বারলুসকোনি মূলত মধ্য-ডান ফোরজা ইতালিয়া পার্টির নেতা। দক্ষ এ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী তিন দশক ধরে ইতালীর রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছেন। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনদফায় তিনি দেশটির সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন।
মিডিয়া মোঘল হিসেবে পরিচিত বারলুসকোনির ২০১১ সালে সরকার থেকে বিদায় বেশ সুখকর ছিল না। শেষ দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তার বিরদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে।
এমনকি তখন বেড়ে চলা বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায়ও বারলুসকোনিকে বেশ হিমশিম খেতে হয়। তবে প্রতিবারই সকল বিতর্ক সামলিয়ে নিজেকে নতুন করে তুলে ধরেছেন তিনি।
ইতালির ফুটবল জগতেও বিচরণ ছিল বারলুসকোনির। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বিখ্যাত ক্লাব এসি মিলান-এর মালিক ছিলেন তিনি।
ইতালির গত শতাব্দীর শেষ ভাগের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব বারলুসকোনি। তিনি দেশটির সংবাদ ও বিনোদনভিত্তিক চ্যানেলগুলোতে নিজের নিয়ন্ত্রণ তৈরি করেছিলেন। এছাড়া তিনি দেশটির সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ব্রডকাস্টার কোম্পানি মিডিয়াসেট-এরও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
একইসাথে বারলুসকোনি একজন চৌকস ব্যবসায়ী হিসেবে দেশটির যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছেন এবং টেলিভিশনের আধুনিকীকরণের পেছনেও অবদান রেখেছেন। তবে সেটির প্রভাব কতটা ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক; তা নিয়ে বিতর্কও রয়েছে।
বারলুসকোনির বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ থাকলেও শেষমেশ তিনি শুধু কর জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। এ কারণেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে তাকে অনেকটা বিদায় নিতে হয়েছিল। তবে পর্দার আড়ালে থেকেই তিনি শেষদিন পর্যন্ত ইতালির রাজনীতিতে প্রভাব সৃষ্টি করেছিলেন।