তাইওয়ানে নতুন খাবারের উন্মাদনা; কুমিরের পা দিয়ে বানানো হচ্ছে র্যামেন!
সম্প্রতি তাইওয়ানে কুমিরের মাংস দিয়ে তৈরি ভিন্নধর্মী এক র্যামেন জনপ্রিয় হয়েছে। মূলত কুমিরের পা আস্ত সেদ্ধ করে নুডলসের সঙ্গে মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয় 'গডজিলা র্যামেন' নামের এ খাবার।
তাইওয়ানের ইউনলিনা কাউন্টির ডউলিউ সিটির উইচ ক্যাট রেস্তোরাঁয় খাবারটি পরিবেশন করা হচ্ছে। এক বাটি ভিন্নধর্মী এই র্যামেনের দাম ৫০ মার্কিন ডলার।
গডজিলা মূলত প্রাগৌইতিহাসিক যুগের ডাইনোসর টি-রেক্সকে কেন্দ্র করে তৈরি কমিক ও মুভি সিরিজ চরিত্র। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই কুমিরের আস্ত পা থাকা র্যামেনটির নাম রাখা হয়েছে 'গডজিলা র্যামেন'।
রেস্তোরাঁর মালিক চিয়েন জানান, র্যামেনটি তৈরিতে সাধারণত কুমিরের সামনের পায়ের মাংসই বেশি নেওয়া হয়। এছাড়াও সাথে কোয়েলের ডিম, শুকরের মাংস, বেবি কর্ন, শুকনো বাঁশের অঙ্কুর, ছত্রাক এবং মাছ ব্যবহার করা হয়।
তবে কুমিরের পা সহজলভ্য না হওয়ার এই খাবারটি বেশ সীমিত পরিমাণে তৈরি করা সম্ভব হয়। বহু চাহিদা থাকা সত্ত্বেও রেস্তোরাঁটির পক্ষ থেকে প্রতিদিন মাত্র দুই বাটি 'গডজিলা র্যামেন' পরিবেশন করা হয়।
ভিন্নধর্মী এ খাবারটি তৈরি করা বেশ কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ। প্রথমে কুমিরের পা ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়। এরপর সেগুলো অ্যালকোহল এবং আদা, রসুন ও পেঁয়াজের সংমিশ্রণে তৈরি মশলার সাথে মেশানো হয়।
পরবর্তীতে মিশ্রণটি রেস্তোরাঁটির তৈরি স্বতন্ত্র ঝোলে দুই ঘন্টা ধরে সিদ্ধ করা হয়। সব মিলিয়ে পুরো খাবারটি তৈরি হতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লাগে।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণী চপস্টিক দিয়ে খাবারটি খাচ্ছেন। র্যামেনের প্লেট থেকে বেরিয়ে রয়েছে কুমিরের আস্ত একটি পা। তরুণী খেতে খেতেই জানাচ্ছেন, খাবারটি দারুণ সুস্বাদু।
আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন এ খাবারটি ঘিরে তৈরি হয়েছে উন্মাদনা; নেটিজেনরা প্রকাশ করছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন, তারা কোনোভাবেই এই খাবারের স্বাদ নিতে চান না। আবার অনেকের বক্তব্য, এমনভাবে কুমিরের কাটা পা থাকা এ খাবারটি দেখলেই ভয় লাগছে।
রেস্তোরা মালিক চিয়েন বলেন, "অনেক গ্রাহকই কুমিরের মাংসের স্বাদকে অনেকটা মুরগির মাংসের মতো বলেছেন। কিন্তু এটি অপেক্ষাকৃত আরও নরম ও স্থিতিস্থাপক। আমার কাছে মনে হয় স্বাদের দিক দিয়ে এটি অনেকটা মুরগির সেদ্ধ করা পায়ের মতো।"
অন্যদিকে গতমাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাইওয়ানের আরেকটি রেস্তোরাঁর খাবার জনপ্রিয় হয়েছিল। এটি রান্না করা হয়েছিল ১৪টি পা বিশিষ্ট বিশালাকার সামুদ্রিক জীব আইসোপড দিয়ে।
যদি কেউ উইচ ক্যাট রেস্তোরাঁয় 'গডজিলা র্যামন' এর স্বাদ নিতে চায় তবে তাকে বেশ কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। কেননা রেস্তোরাঁ মালিক চিয়েন জানান, ইতোমধ্যেই তাদের কাছে খাদ্যরসিক বহু গ্রাহক খাবারটির জন্য আগস্টের শেষ পর্যন্ত বুকিং নিশ্চিত করেছে।
তাইওয়ানে কুমির চাষ ও খাওয়া আইনত বৈধ। কেননা দেশটিতে প্রাণীটিকে সংরক্ষিত প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।