এনআইডি তথ্য সুরক্ষায় সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজরদারিতে রাখবে ইসি
নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগের সার্ভার সেবা নেয়া ১৭১টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাওঁয়ে নির্বাচন ভবনে প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সানবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
ইসির এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর বলেন, 'বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও টেকনিক্যাল পারসনদের নিয়ে বসেছিলাম। তাদের মতামত, পরামর্শ নিয়েছি। আমরা এগুলো বাস্তবায়নের জন্য ১৭১টি পার্টনারের সঙ্গে কথা বলব।'
বাংলাদেশে সরকারি একটি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার খবর আসার পর এনআইডি সার্ভারের সুরক্ষার এই উদ্যোগ নিল ইসি।
ইসির সার্ভারে ভোটারদের ছবি, আঙুলের ছাপসহ অন্তত ৪০টি তথ্য সংবলিত তথ্যভান্ডার সংরক্ষিত রয়েছে।
নানা ধরনের নাগরিক সেবা দিতে ১৭১টি সংস্থার সঙ্গে ইসির চুক্তি অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কয়েকটি তথ্যের 'ভেরিফিকেশন সার্ভিস' চালু রয়েছে।
হুমায়ূন কবীর বলেন, বিশেষজ্ঞরা পিরিয়ডিক্যাল অডিট করার এবং ফিজিক্যাল ও টেকনিক্যাল সিকিউরিটি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'যদিও ওনারা বলেছেন, আমাদের এখান থেকে কোনো কিছু হয়নি।'
তিনি বলেন, এ ঘটনায় আইসিটি বিভাগ একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছে।
'সেখানে আমাদের লোকজনকে সহযোগিতা জন্য বলেছি। যাতে আমরা প্রিভেন্টিভ ব্যবস্থা নিতে পারি,' বলেন তিনি।
হুমায়ূন কবীর আরও বলেন, 'পার্টনার সার্ভারগুলোর সঙ্গে যখন চুক্তি হয় তখন সিকিউরিটির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। তারা আইসিটি থেকে একটি সনদপত্র নিয়ে আসেন। এখন আমরা ম্যানডেটরি করব।'
পার্টনার প্রতিষ্ঠানগুলো চুক্তি ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'আমরা ব্যবস্থা নেব। আইনে বিধি-বিধান আছে। কমিশনের অনুমোদন নিয়ে ব্যবস্থা নেব।'
প্রযুক্তিবিদরা ডিজাস্টার রিকভারি সিস্টেমের (ডিআরএস) সিস্টেমে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, 'গতকাল বিসিসির সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি। আমাদের ডেটাগুলো আগামী মাস থেকে চলে যাবে কালিয়াকৈর ডিআরএস-এ প্রিজারভেশনের জন্য। এতে কোনো ডিজাস্টার হলে আমরা সেখান থেকে রিকভারি করতে পারব। আমরা একটা টেকনিক্যাল কমিটি করব। তারা আমাদের যে সাজেশন দেবেন সে অনুযায়ী আমরা অ্যাকশন নেব।'
এক প্রশ্নের জবাবে এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, 'এনআইডি সার্ভারে কোনো দুর্বলতা নেই। এটা সবাই স্বীকার করেছেন। এনআইডি নম্বর তো ব্যাংকও চাইলে পাবে। এটা গোপন কিছু নয়। বেতন নেওয়ার জন্য, পাসপোর্ট করার জন্য দিতে হয়। এটা তো না পাওয়ার মতো কিছু না।'
বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোসাদ্দেক হোসেন কামাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শকের প্রতিনিধি, র্যাবের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের রেজিস্টার জেনারেল, এনআইডি সার্ভারের ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি প্রধান, বুয়েট ও আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।