বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে দুইশ’ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি চীনের
জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সদর দপ্তরে শুরু হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন। এই সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়েছেন ১৯৪টি সদস্যের হু'ভুক্ত দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা।
গতকাল সোমবার এই সম্মেলনের প্রথমদিনেই করোনাভাইরাসের প্রাথমিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়া নিয়ে নানা দেশের সমালোচনার মুখে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার করেছেন, তার দেওয়া উদ্বোধনী ভাষণে।
এসময় তিনি চীন কোনো প্রতিশধক বা টিকা আবিষ্কার করলেই, তা পুরো বিশ্ববাসীকে নিঃশর্তে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
করোনার বিশ্ব মহামারিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন সোয়া তিন লাখের বেশি মানুষ। এই অবস্থায় বিশ্বের ক্ষোভ আঁচ করতে পেরে বৈঠকের শুরুতে শি জিনপিং একথা বলেছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন মূলত হু'র পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকা পালন করে। সেখানে গতকালই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। শি জিনপিংয়ের উদারহস্ত হওয়ার এটাও আরেক কারণ।
তদন্তে প্রথমদিকে ভাইরাস নিয়ে লুকোচুরি খেলা চীনের বেশ কিছু সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার হুমকি রয়েছে। এতে করে দেশটি বিবৃতকর অবস্থায় পড়তে পারে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে।
এসব কিছু বিবেচনা করে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে হু বা ডব্লিওএইচও'কে আগামী দুই বছরে দুইশ' কোটি ডলার তহবিল দেওয়ার ঘোষণা দেন শি জিনপিং। এসময় তিনি, বিশ্ব মহামারি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবধ্য হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন।
শি বলেন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন যখন চীনে উৎপাদন শুরু হবে, তখন আমরা এটিকে পুরো বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত এক পণ্যে পরিণত করব। স্বল্পমূল্যে এবং সহজেই এই প্রতিষেধক যেন দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলো পায় চীন তা নিশ্চিত করবে। এটাই হবে বিশ্বকে দেওয়া চীনের আন্তরিক সহযোগিতা।
এদিকে ইইউয়ের তদন্তের প্রচেষ্টাকে চীন তার বিরুদ্ধে নেওয়া পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের জাল হিসেবে বিবেচনা করছে। চীনের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক সময়ের নানা বক্তব্যও সেদিকে ইঙ্গিত দেয়।
সোমবারের বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন বৈশ্বিক বিভাজন এবং কূটনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার এক রণমঞ্চ হয়েও ওঠে। এদিন চীনের আপত্তির মুখে ফের তাইওইয়ান তার সদস্যপদের আহ্বান প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। তাইওয়ানকে এভাবে দূরে সরিয়ে রাখার তীব্র সমালোচনা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।