৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে সুন্দরবনে পর্যটকের ভিড়
তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে সুন্দরবন ভ্রমণ শুরু করেছেন দর্শনার্থীরা। প্রথমদিনেই বনে ভ্রমণে গিয়েছেন প্রায় সাড়ে চারশ'র বেশি পর্যটক।
তিন মাস বন্ধ থাকার পর বন বিভাগ শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন পুনরায় চালু করেছে। প্রতিবছর সুন্দরবনের প্রজনন মৌসুমে তিন মাস পর্যটক ও বনজীবীদের বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকে।
শুক্রবার সকাল থেকে করমজলসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন পর্যটকেরা।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, 'শুক্রবার থেকে সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটকদের জন্য পারমিট দেওয়া শুরু হয়েছে। সকাল থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত সাড়ে চারশ'র বেশি দর্শনার্থী করমজল ভ্রমন করেছেন।'
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অভ সুন্দরবন (টোয়াস)-এর সহ-সাধারণ সম্পাদক মাঝহারুল ইসলাম কচি বলেন, 'নিষেধাজ্ঞা শেষের প্রথমদিনই পর্যটকবাহী নয়টি লঞ্চ সুন্দরবন গেছে।'
এদিকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় ভোর থেকে জেলেরা সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে মাছ ধরতে শুরু করেছেন।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, 'প্রতিবছর সুন্দরবনের প্রজনন মৌসুমে তিন মাস পর্যটক ও বনজীবীদের বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময় বন কোলাহলমুক্ত থাকায় বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজাতি অবাধে চলাফেরা ও নির্বিঘ্নে প্রজনন করতে পারে।'
তবে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে হলে সবাইকে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।
'প্লাস্টিকের পানির বোতল, চিপসের প্যাকেটের মতো একবার ব্যবহার করা হয় এমন প্লাস্টিক সঙ্গে নেওয়া যাবে না। বন বিভাগ থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি নেওয়ার সময় পর্যটক, ট্যুর পরিচালক ও বনজীবীদের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে,' দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন বেলায়েত হোসেন।
এর আগে গত ৩১ মে বন বিভাগ ১ জুন থেকে সুন্দরবনে তিন মাসের জন্য পর্যটন ও মাছধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
বন বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, সুন্দরবনের বৈচিত্র্যময় বাস্তুতন্ত্রে ১১৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী, সুন্দরী গাছসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। এছাড়া এ বন ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড ও ৩০০ প্রজাতির পাখিরও আবাসস্থল।
অন্যদিকে বনটির ১,৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার জলজ পরিবেশে কুমির, ডলফিনসহ মাছের ২৯১টি প্রজাতি পাওয়া যায়।