উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা
পায়ের উপরে করা বল ডিপ স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে দুই রান পূর্ণ করে নিলেন চারিথ আসালাঙ্কা। ফেরার সময় মাঝ উইকেট বরাবর পাকিস্তানের অভিষিক্ত পেসার জামান খানের সামনে শূন্যে ভেসে তার বুনো উদযাপন, ততোক্ষণে যে শ্রীলঙ্কার বিজয় গাথা লেখা হয়ে গেছে। এর আগের ১১ বলে যে ক্ষণে ক্ষণে ম্যাচের রং বদলালো, রোমাঞ্চ ছড়ালো; পাকিস্তান কেবল সেটার অংশই হয়ে থাকলো। রোমাঞ্চে ঠাসা ম্যাচে শেষ হাসি হাসলো শ্রীলঙ্কা।
বৃহস্পতিবার কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সুপার ফোরে নিজেদের শেষ ম্যাচে বৃষ্টি আইনে পাকিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের আসরে এ নিয়ে একাদশতম বারের মতো ফাইনালে উঠলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর কলম্বোতে শিরোপার লড়াইয়ে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা।
বৃষ্টির কারণে ঠিক সময়ে টস হয়নি, ওভারও কমিয়ে আনা হয়। ৪২ ওভারের ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে আবদুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাফ সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ২৫২ রান তোলে পাকিস্তান। বৃষ্টি আইনে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্যও দাঁড়াূয় ২৫২ রান। ম্যাচসেরা কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমার ব্যাটে জয়ের পথে থেকেও হঠাৎ দিক হারায় তারা। চাপের মুখে দারুণ ব্যাটিং করে শেষ বলে দলে জয় নিশ্চিত করেন আসালাঙ্কা।
এক ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলে ভারত। বাংলাদেশের ব্যাপারটি ঠিক উল্টো, ভারতের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার হারে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের। তবু সুযোগ ছিল লঙ্কানদের, একইভাবে পাকিস্তানেরও। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এই দুই দলের মধ্যে লড়াই হলো হাড্ডাহাড্ডি, কিন্তু বিজয় নিশান উড়ালো লঙ্কানরা।
শেষ ওভারে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ছিল ৮ রান। জামানের করা ওভারের প্রথম বলে লেগ বাই থেকে এক রান পায় তারা। পরের বলে আসালাঙ্কা রান নিতে পারেননি, তৃতীয় বলে এক রান নেন তিনি। চতুর্থ বলে কোনো রান নয়, উল্টো প্রমোদ মাদুসান আউট। শেষ দুই বলে দরকার তখন ৬ রান। পঞ্চম বলে আসালাঙ্কা শট খেলার চেষ্টা করলেও সেভাবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি, তবে এজ হয়েও চার। আর শেষ বলে সহজেই প্রয়োজনীয় ২ রান নিয়ে নেন তিনি।
শ্রীলঙ্কা জয়ের পথে থাকে কুশল ও সামারাবিক্রমার ব্যাটে। দারুণ ছন্দে থাকা কুশল তুলে নেন এবারের এশিয়া কাপের তৃতীয় এবং ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৪তম হাফ সেঞ্চুরি। ৮৭ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় ইনিংস সেরা ৯১ রান করেন ডানহাতি উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। সামারাবিক্রমরা ৫১ বলে ৪টি চারে ৪৮ রান করেন। ৪৭ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় হার না মানা ৪৯ রান করেন আসালাঙ্কা। এ ছাড়া পাথুম নিসাঙ্কা ২৯ ও কুশল পেরেরা ১৭ রান করেন। পাকিস্তানের ইফতিখার আহমেদ ৩টি ও শাহিন শাহ আফ্রিদি ২টি উইকেট নেন। একটি উইকেট পান শাদাব খান।
এর আগে ব্যাটিং করা পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন রিজওয়ান। উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান ৭৩ বলে ৬টি চার ও ২টি ছঠক্কায় অপরাজিত ৮৬ রান করেন। ওপেনার শফিক ৬৯ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় করেন ৫২ রান। সাতে নেমে ৪০ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৭ রান করেন ইফতিখার। এ ছাড়া অধিনায়ক বাবর আজম ২৯ ও মোহাম্মদ নওয়াজ ১২ রান করেন। শ্রীলঙ্কার মাথিসা পাথিরানা ৩টি ও মাদুসান ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান মাহিশ থিকশানা ও দুনিথ ভেল্লালাগে।