নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক সংঘাত-সংঘর্ষ কখনো প্রশ্রয় দেব না: সিইসি
দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেন কোন সহিংসতা বা সাম্প্রদায়িক সংঘাত-সংঘর্ষ না ঘটে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে ও এ ধরনের অমানবিকতাকে কখনো প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
আজ রাজধানীর নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের সাথে এক মতবিনিময় শেষে এমন কথা বলেন সিইসি।
তিনি বলেন, "তাদের সাথে আমাদের মতবিনিময় হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে মূলত বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে অনেক সময় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক সংঘাত বা সহিংসতা হয়েছে। এখনও ওনারা আশঙ্কা করছেন যে আগামীতেও এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সংঘাত বা সহিংসতা হতে পারে।"
"তারা আমাদের কাছে আবেদন রেখেছেন আমরা যেন বিষয়টা বিবেচনায় নেই এবং আমাদের পক্ষ থেকে যা কিছু করণীয় আছে তা আমরা করি", যোগ করেন হাবিবুল আউয়াল।
তিনি আরও বলেন, "আমরা বিষয়টা খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়েছি এবং বলেছি যে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন থেকে নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট হবে, সে পর্যন্ত আমাদেরও সংশ্লিষ্টতা এসে যায়। আমরা চিঠিপত্র দিয়ে সরকারকে, ডিসি-এসপিদেরকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ও যারা যারা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন তাদেরকে অবহিত করব।"
"দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেন কোন সহিংসতা বা সাম্প্রদায়িক সংঘাত-সংঘর্ষ না হয় আমরা কঠোরভাবে তাদেরকে সতর্ক করে দেবো। এটা কখনোই কাঙ্ক্ষিত নয়। বাঞ্ছনীয় নয়। এটা কখনোই সভ্য আচরণ হতে পারে না । অমানবিক একটা বিষয়। আমরা এ ধরনের অমানবিকতাকে কখনো প্রশ্রয় দেব না।"
তিনি যোগ করেন, "নির্বাচন পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণ যেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর থাকে আমরা সেদিকে নজর রাখবো।"
"আমরা তাদেরকে (ঐক্য পরিষদের নেতাদের) অনুরোধ করেছি আপনারাও সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে সাক্ষাৎ করে আপনাদের শঙ্কার কথা, আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেন", সিইসি জানান।
এদিকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত বলেন, "আমরা ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সহিংসতামুক্ত নির্বাচন চাই।"
তিনি যোগ করেন, "নির্বাচনী প্রচারণায় যে সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করা হয় আমরা তার অবসান চাই। সাম্প্রদায়িক গুজব ছড়িয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দানের পরিবেশ বিঘ্ন করার যে অপচেষ্টা হয়, এটা কারো জন্য সুখকর ফল আনেনি। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই।"
কমিশন এসব নিরসনের আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, "অতীতেও নির্বাচনের আগে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছি। কিন্তু সবসময় আশ্বাসের মধ্যেই থেকেছে।"
তিনি বলেন, "কমিশন জানিয়েছে এই বিষয়গুলো আইনে বলা আছে। কিন্তু আইন আছে কেতাবে, আইনের প্রয়োগ হয়নি কখনও। আমরা প্রয়োগটা চাই। এবং আমরা সুষ্ঠু অবাধ ও একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই যেখানে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় শুধু নয়, সব নাগরিক যারা ভোটার নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।"
তিনি বলেন, "আমরা দুঃখের সাথে বলতে চাই, অতীতে মামলা নেওয়া হতো, তদন্ত করা হতো, এখন মামলা নেয় বিচার হয় না। আর সরকারি দলের সাথে যারা যুক্ত দুর্বৃত্ত হিসেবে অবস্থান নেয়, তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয় না।"
এখন সহিংসতার আশঙ্কা করছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আশঙ্কা করছি বলেই আমরা এখানে এসেছি। কারণ আমরা রাজনৈতিক নেতাদের উপরে কোন আশা ও আকাঙ্ক্ষা রাখতে পারছিনা।"