জমে উঠেছে আম ও লিচু বেচা-কেনা
রাজশাহী ও পাবনার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাষিদের মতে গাছ থেকে অর্ধেক আম ও লিচু ঝরে গেলেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহীতে ঝড়ে ১৫ শতাংশ আম ও লিচু এবং পাবনায় ২২ শতাংশ লিচু ঝরে গেছে।
সেই ক্ষতি মাথায় নিয়েই রাজশাহীর ৮৬ হাজার চাষি ও ব্যবসায়ী আম ও লিচু বাজারে তুলছেন। রাজশাহীতে লিচু বিক্রি শেষের দিকে। পাবনায় বিক্রি চলছে পুরোদমে। তবে দাম কম থাকায় ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে চাষিদের।
দিনাজপুরের লিচুর উৎপাদন ভালো হলেও করোনার কারণে বিক্রি নিয়ে চাষিরা সংকটে পড়েছেন। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা আসতে না পারায় কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছেন।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব জানান, রাজশাহীতে দুয়েকটি জাতের আম বিক্রি শেষের দিকে হলেও আরও মাসখানেক বাজারে পাওয়া যাবে বিভিন্ন জাতের আম। বলা যায়, রাজশাহীতে জমে উঠেছে আমের বেচা-কেনা। চাষিরা চাইছেন, ভালো দামে বিক্রি করে আম্পানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে। সরকারিভাবেও আমচাষিদের সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে চালু করা হয়েছে স্বল্প ভাড়ায় 'স্পেশাল ম্যাঙ্গো ট্রেন সার্ভিস' ও 'নিখরচায় ট্রাক সার্ভিস'। এই সেবাগুলো ব্যবহার করে চাষিরা অল্প খরচে ঢাকায় নিয়ে আম বিক্রি করে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে।
রাজশাহীর বানেশ্বর হাট দেশের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম আম বেচা-কেনার মোকাম। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এই হাটে এসে আম কেনেন। এছাড়া রাজশাহী শহরের বিভিন্ন পয়েন্টেও আম বেচা-কেনা হচ্ছে। প্রচুর আম বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে অর্ডারের মাধ্যমেও।
বানেশ্বর বাজার ঘুরে আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে গোপালভোগ জাতের আম শেষের দিকে। বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে লখনা ও গুটি আম। অল্প পরিমাণে ওঠা শুরু হয়েছে হিমসাগর ও ল্যাংড়া। আমচাষিরা বলছেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে ল্যাংড়া ও হিমসাগর আম পুরোদমে বাজারে বিক্রি হবে।
বাজারে মানভেদে গোপালভোগ আম বিক্রি হয়েছে দুই হাজার টাকা থেকে ২৪০০ টাকা মণ হিসেবে। মানভেদে লখনা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা মণ, হিমসাগর বা খিরসাপাত ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা, ল্যাংড়া ১৬০০ টাকা এবং গুটি আম ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ হিসেবে।
রাজশাহীর কাটাখালীর আম ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ বছর আমের দাম গত বছরের চেয়ে ভালো। ফলন কম হলেও দাম ভালো থাকায় চাষিরা লাভবান হবেন। এ বছর আম ঝরে গেলেও গোপালভোগ আমের ফলন ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাওয়া গেছে।
'বুধবার ২০ মণ গোপালভোগ আম বিক্রি করেছি ২১০০ টাকা মণ হিসেবে। গুটি আম ও লখনা আমের দামও ভালো। হিমসাগর, ল্যাংড়া আম পরিপক্ক হতে আরও সপ্তাহখানেক লাগবে। তখন আমের দাম ভালো পাওয়া যাবে', যোগ করেন তিনি।
তবে রাজশাহীর আড়ানীর আমচাষি আলতাফ হোসেন বাদশা বলেন, 'এ বছর আম বিক্রি করে লোকসানে রয়েছি। এখন পর্যন্ত এক হাজার মণ আম বিক্রি করে এক লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।' আমের চাহিদা কম থাকায় লোকসান হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'প্রতি বছর আমের মৌসুমে আমি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় প্রতিদিন এক ট্রাক করে আম দিতাম। এখন সেখানে তিন-চার দিন পর এক ট্রাক করে আম যাচ্ছে। এখন লখনা ও হিমসাগরের দাম কিছুটা কম রয়েছে। তবে আশা করছি, সপ্তাহখানেকের মধ্যে পুরোদমে বাজারে উঠলে এসব আমের দামও ভালো পাওয়া যাবে।'
লিচু চাষিরাও বলছেন, 'দাম ভালো থাকলেও ফলন কম হওয়ায় লোকসানে গুণতে হচ্ছে। রাজশাহীর বড় বনগ্রাম এলাকার লিচু চাষি আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার ২০ বিঘা লিজ নেওয়া ও নিজস্ব ১৫ বিঘা জমিতে লিচু চাষ করেছিলাম। এবার ঘূর্ণিঝড় আম্পানে অর্ধেক লিচুই ঝরে গেছে।'
তিনি জানান, 'আমাদের এলাকায় পাঁচ থেকে ছয় কোটি লিচু উৎপাদন হয়। এবার আম্পানে অর্ধেক লিচুই ঝরে গেছে। ফলে দাম ভালো পেলেও ফলন কম হওয়ায় লোকসান গুণতে হয়েছে। আমাদের সব লিচু ঢাকায় হাজারে ১৮০০ টাকা থেকে ২৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে।'
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুল হক জানান, রাজশাহীতে এ বছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ১৫ শতাংশ আম ঝরে গেছে। ক্ষতি হয়েছে ১১০ কোটি টাকা। সে হিসেবে এ বছর আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। তবে গাছে আম সংখ্যায় কম থাকলে আমের আকার বড় হয়। তখন আমের ওজনও বেশি হয়। ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও কাছাকাছি যাবে। এছাড়া দাম ভালো থাকায় চাষিদের খুব একটা লোকসান হবে না।
এখন পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আম গাছ থেকে পাড়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'গোপালভোগ আম শেষের দিকে। হয়তোবা বাজারে আর ৩-৪ দিন পাওয়া যেতে পারে। এখন বাজারে অল্প পরিমাণে উঠতে শুরু করেছে খিরসাপাত, হিমসাগর ও লখনা।'
তিনি আরও বলেন, 'রাজশাহীতে মোট ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদন হয়। এ বছর লক্ষণভোগ বা লখনা ৬২৭১ হেক্টর, খিরসাপাত ২৬১৭ হেক্টর, ফজলি ২২৬৬ হেক্টর, আশ্বিনা ১৬৭৬ হেক্টর, আম্রপালি ১০৫০ হেক্টর, গোপালভোগ ৫৯৪ হেক্টর এবং বাকি জায়গায় গুটি আমসহ অন্যান্য জাতের আম উৎপাদন হয়েছে।'
লিচুর বিষয়ে তিনি বলেন, 'রাজশাহীতে মোট ৫০০ হেক্টর জমিতে লিচু উৎপাদিত হয়। লিচুপ্রতি উৎপাদন খরচ ৬০ থেকে ৭০ পয়সা। সে হিসেবে বাজারে লিচু ২০০ থেকে ২৪০ টাকা শ' হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। তার মানে চাষিদের লাভই হচ্ছে।'
ভালো দাম পাওয়ায় আশা চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিদের
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, 'রাজশাহীর সপ্তাহখানেক পর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম ওঠা শুরু হয়। সে হিসেবে আর দুই-চার দিন লাগবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজারে উঠতে।'
তিনি বলেন, 'এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের ফলন ভালো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আমের দামও ভালো। আশা করছি কৃষকরা এ বছর আম বিক্রি করে লাভবান হবেন।'
'আগামি ১৩ জুন থেকে ডাকবিভাগের ট্রাকে বিনা ভাড়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম ঢাকায় যাবে। এছাড়া শুক্রবার থেকে স্পেশাল ম্যাঙ্গো ট্রেনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম ঢাকায় পৌঁছানো হবে' বলে জানান তিনি।
খরচ কমাবে 'স্পেশাল ম্যাঙ্গো ট্রেন'
এদিকে সরকারিভাবেও আমচাষিদের সহায়তা করতে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে শুক্রবার বিকেল থেকে চালু হয়েছে স্পেশাল ম্যাঙ্গো ট্রেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কেজিপ্রতি এক টাকা ৩০ পয়সা আর রাজশাহী থেকে কেজিপ্রতি এক টাকা ১৭ পয়সা দরে আমব্যবসায়ী ও চাষিরা প্রতিদিন ২৪০ মেট্রিক টন আম ঢাকায় পৌঁছাতে পারবেন। এছাড়া গত মঙ্গলবার থেকে ডাক বিভাগের একটি ট্রাকে করে সর্বোচ্চ পাঁচ টন আম প্রতিদিন বিনা ভাড়ায় ঢাকায় বিক্রির জন্য নিয়ে যেতে পারছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক আমচাষিরা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ফুয়াদ হোসেন বলেন, 'এ পর্যন্ত ৬৫ ক্যারেটের মতো বুকিং হয়েছে। এক এক ক্যারেটে ২০ থেকে ২৫ কেজি আম রয়েছে। প্রক্রিয়াটি নতুন বলে এখনো সেভাবে আমরা চাষিদের কাছ থেকে সাড়া পাইনি। চেষ্টা করছি বিভিন্ন হাটে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রচার-প্রচারণা চালাতে। এছাড়া ব্যানার ফেস্টুনও করা হয়েছে। আশা করছি দুয়েক দিনের মধ্যে কৃষকদের ভালো সাড়া পাব।'
তিনি বলেন, 'ট্রেনে ভাড়া কম নেওয়া হচ্ছে। আবার ক্যারেটপ্রতি কুলিদের ফিও ২৭ টাকা থেকে কমিয়ে ১০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।'
রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, 'বিনা ভাড়ায় ট্রাকে আম পরিবহনের মূল উদ্দেশ্য সরাসরি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সহায়তা করা। প্রতিদিন ট্রাকে আম যাচ্ছে। চেষ্টা করছি ট্রাক সংখ্যা বাড়ানোর।'
পাবনার লিচুতে আম্পানের প্রভাব
পাবনা প্রতিনিধি পার্থ হাসান জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে পাবনায় কৃষকদের মতে দেড়শো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ২২ শতাংশ লিচু গাছ থেকে ঝরে গেছে।
পাবনার বাজারে লিচু খুচরা বিক্রি হচ্ছে, ১৮০ থেকে ২০০ টাকা শ' দরে। আর হাজার বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা দরে।
পাবনার বাঁশেরবাদা লিচু ব্যবসায়ী মো. শিপন আহমেদ বলেন, 'এ বছর গাছে যে পরিমাণ লিচু ধরেছিল, তাতে পাবনায় এবার বাম্পার ফলন হতো। কিন্তু আম্পানের তাণ্ডবে বাগানের অর্ধেক লিচু ঝরে গেছে। ফলে বাজারে গত বছরের দামে লিচু বিক্রি হলেও আমাদের লোকসানটা থেকেই যাচ্ছে। দাম বেশি হলে সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হতো।'
পাকশী গ্রামের লিচু বাগান মালিক রাসেল হোসেন বলেন, 'লাভের আশায় ব্যাংক থেকে টাকা ঋণ নিয়ে ১০টি বাগান কিনেছিলাম। কিন্তু আমপানের তাণ্ডবে এবার লিচুর বাগানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমার প্রায় ৫০ লাখ টাকার লিচুর ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আমাদের এলাকাসহ আশেপাশের আওতাপাড়া, দাপুনিয়া, আটঘোড়িয়া, একদন্ত গ্রামের সব বাগান মিলিয়ে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজহার আলী বলেন, 'পাবনা জেলার মাঠে ধান আম-লিচু ও সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাবনায় চলতি মৌসুমে ৪৬০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। সাইক্লোন আম্পানের তাণ্ডবে প্রায় ৮০০ থেকে ১০০০ হেক্টর লিচু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনো ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।'
করোনার প্রভাবে দিনাজপুরের লিচুর দাম কম
দিনাজপুর প্রতিনিধি সানি সরকার জানান, দিনাজপুরের বাজারে পুরোদমে আসতে শুরু করেছে লিচু। তবে করোনার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা আসতে না পারায় গত বছরের তুলনায় লোকসানে পড়েছেন বাগানী, চাষি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, লকডাউন শিথিল হওয়ায় বাগানী ও চাষিরা লাভবান হবেন।
অন্যান্য জেলার চেয়ে অধিক সুমিষ্ট ও সুস্বাদু হওয়ায় দিনাজপুরের লিচুর বেশ সুখ্যাতি রয়েছে। এ জেলায় বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না থ্রি, বেদেনা, কাঠালি, হাড়িয়াসহ বিভিন্ন জাতের লিচুর ফলন হয়। সেগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। তবে করোনার কারণে গত বছরের তুলনায় এবারে লিচুর দাম কম পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন বাগানীরা।
বর্তমানে দিনাজপুরের বাজারে প্রতি হাজার মাদ্রাজি জাতের লিচু ১৫০০-১৮০০ টাকা, বোম্বাই জাতের লিচু ১৪০০-১৮০০ টাকা, বেদেনা জাতের লিচু ৩৫০০-৪২০০ টাকা ও চায়না থ্রি জাতের লিচু ৪৫০০-৫০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কৃষক ও বাগানীদের দাবি, গত বছরের তুলনায় এবারে দাম অনেক কম। যদিও লিচুর বাজার দর আমদানি ও আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে উঠা-নামা করে।
দিনাজপুরের লিচু বাজারে লিচু বিক্রি করতে আসা বিরল উপজেলার মাধববাটী এলাকার কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারে দাম অনেক কম। তবে এবারে ফলন ভালো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'যদি করোনার প্রভাব না থাকত, তাহলে ভালো দাম পাওয়া যেত।'
বাগানী রফিকুল ইসলাম বলেন, 'গত বছরের তুলনায় এবারে দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। আম্পানেও বেশ কিছু লিচুর ক্ষতি হয়েছে।'
লিচুর স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রশান্ত কুমার বলেন, 'এখান থেকে যেসব লিচু ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে, সেগুলোর চালানের টাকা ঠিকভাবে আসছে না। করোনার কারণে ট্রাক ভাড়াও বেড়েছে, আবার ঢাকায় লিচু সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না। তাই কম দামেই লিচু কিনতে হচ্ছে।'
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ১৩টি উপজেলায় প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে রয়েছে রয়েছে লিচুবাগান। যেখানে প্রতিবছর ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন লিচু উৎপাদন হয়। আর জেলায় উৎপাদিত ৮০ শতাংশ লিচুই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত হয়ে থাকে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তৌহিদুল ইকবাল বলেন, 'লকডাউন শিথিল হওয়ায় পরিবহন খুলেছে। এখন অনায়াসেই পরিবহনে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে লিচু পাঠানো।'