দুই বছরের বেশি দণ্ডিত ব্যক্তির দণ্ড বাতিল না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: হাইকোর্ট
হাইকোর্ট এক পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, দুর্নীতির মামলায় দুই বছরের বেশী সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির জামিন বা সাজা আপিলে স্থগিত থাকলেও তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যদি না তার সাজা উপযুক্ত আদালত কর্তৃক বাতিল না হয়।
আদালত বলেছেন, আপিল বিচারাধীন থাকা মানে দণ্ডিত ব্যক্তি নির্দোষ নয়। একমাত্র উপযুক্ত আদালত কর্তৃক সাজা বাতিল হলে দণ্ডিত ব্যক্তি নির্দোষ হবেন। দণ্ড বাতিল না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।
আদালত সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলেছেন, দুর্নীতির মামলায় দুই বছরের বেশী সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাংবিধানিকভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য হবেন।
রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৪৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর বিএনপির পাঁচ নেতার দুর্নীতির পৃথক মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ড ও সাজা স্থগিতের আবেদন খারিজ করে ঘোষণা করা রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দেন হাইকোর্ট। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
আবেদনকারী ওয়াদুদ ভুইয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফখরুল ইসলাম, মো.আব্দুল ওহাবের পক্ষে ছিলেন মো.ওয়াজেদ আলী, মো.মশিউর রহমানের পক্ষে ছিলেন মো.আমিনুল হক, কেএইচ বাহার রুমি ও মাহবুব শফিক, এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পক্ষে ছিলেন রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আহসানুল করিম, খায়রুল আলম চৌধুরী ও তানভীর হোসেন খান, আমান উল্লাহ আমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো.আরিফুল ইসলাম।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, তৎকালীন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো.খুরশীদ আলম খান, এ কে এম ফজুলল হক খান।
রোববার খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, নৈতিক স্খলনের মামলায় দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের অযোগ্য হন। সংবিধানের এ সংক্রান্ত ৬৬(২)(ডি) এর ব্যাখ্যা দিয়ে আদালত একটি রায় দিয়েছেন। রায়ে বলেছেন-সাজা কখনো স্থগিত হয় না। দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কিছু ব্যক্তি বিচারাধীন আপিলে একটি দরখাস্ত দিয়েছেন সাজা স্থগিতের জন্য। কারণ স্থগিত না হলে তারা সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সেটার ব্যাখ্যা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দণ্ড বহাল থাকবে কাজেই সাজা কখনো স্থগিত হয় না।
এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান টিবিএসকে বলেন, সাজা স্থগিতে থাকার বিষয়টি হলফনামায় উল্লেখ করে প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনকে ভুল মেসেজ দিয়ে বৈধতার সুযোগ অনেক সময় নেয়ার চেষ্টা করে। এই রায়ের ফলে সেই সুযোগ বন্ধ হলো।