বগুড়ায় বিএনপি-জামায়াতের ৮৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
বগুড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ৮৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অধিকাংশকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে এ প্রতিবেদন প্রস্তুতকালে (রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত) পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করে বলা হয়নি– তাদের কোন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যেই তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে এই ৮৮ নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আটক দেখানো হয়।
পুলিশ জানায়, নন্দীগ্রাম উপজেলায় বঙ্গবন্ধু চত্বরে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ছয় বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়াও পুলিশের বিশেষ অভিযানে বগুড়াসহ আরও ১১ উপজেলা থেকে ৮২ জন বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে নন্দীগ্রামে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ-সংগঠনগুলো। এরপর রাতে বঙ্গবন্ধু চত্বর এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে রাতেই এ ঘটনায় বিএনপির ৪ নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার পরপর রাতেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নন্দীগ্রাম পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নন্দীগ্রাম পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বাচ্চু মিঞা (৪৬), ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি যোবায়ের আহম্মেদ রাজা (৩৪), সদস্য আশরাফুল ইসলাম (৩৮), বিএনপি কর্মী আলমগীর হোসেন (৪৫), জিয়াউল হক (৩৬) ও ফুলবর রহমান (৪৫)।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নন্দীগ্রাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, শনিবার রাতে বঙ্গবন্ধু চত্বর এলাকায় হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বিএনপির চার নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। সেই মামলায় আজ ছয়জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়াও রোববার শেরপুরের তিন বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। তাদের মধ্যে শনিবার উপজেলায় পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তার হন বিএনপি নেতা মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে পাশা, আব্দুর রাজ্জাক ও মাহবুব রহমান।
শেরপুর থানার ওসি বাবু কুমার সাহা জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বরের উপজেলার হাসপাতাল রোড এলাকায় মোজাহার স্মৃতি সংসদে এক হামলা ও বিস্ফোরণ মামলার আসামি।
রোববার দুপচাঁচিয়াতে গত জুলাই মাসে দায়ের হওয়া নাশকতার মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের ১৬ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আর শিবগঞ্জে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার হয়েছেন জামায়াত-শিবিরের ১১ জন নেতা-কর্মী। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তাদের উপজেলার আমতলী বন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান শিবগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রউফ। আগের নাশকতা মামলায় আরও তিনজকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
বগুড়ায় নাশকতা সংক্রান্ত ঘটনায় এপর্যন্ত কতজনকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলেও রিসিভ করেননি জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র শরাফত ইসলাম। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতারকে (প্রশাসন) ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। পুলিশ সুপার সুদীপ চক্রবর্ত্তীকে ফোন করলে তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে তাকে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও– কোনো সাড়া দেননি।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুর রশিদকে ফোন করলে তিনি জানান, 'এপর্যন্ত বগুড়ায় বিভিন্ন উপজেলার ৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে কোন মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে তা আগামীকাল (৩০ অক্টোবর) জানাতে পারব।'