ছাড়ছে না দূরপাল্লার বাস, ফাঁকা টার্মিনালে ক্রিকেট খেলছে শ্রমিকেরা
যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগসহ একদফা দাবিতে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) থেকে বিএনপির ডাকে টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও পিকেটিং করেছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
অবরোধকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বিভিন্ন বাস কাউন্টার থেকে ছাড়েনি দূরপাল্লার বাস।
গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, কাউন্টার খোলা রাখা হলেও যাত্রী নেই তেমন। শ্রমিকদের অনেকে ফাঁকা টার্মিনালে ক্রিকেট খেলে সময় কাটাচ্ছে।
সকালে কল্যাণপুর কাউন্টার থেকেও কোনো দূরপাল্লার গাড়ি ছাড়তে দেখা যায়নি। কাউন্টারে কথা বলে জানা যায়, যাত্রী নেই তাই গাড়ি ছাড়ছে না।
নাবিল পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার সাইফুল ইসলাম বলেন, "যাত্রী দুয়েকজন করে আসছে। এই সংখ্যক যাত্রী নিয়ে তো গাড়ি ছাড়া যায় না। যাত্রী নেই তাই গাড়ি ছাড়ছি না।"
চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশে কাউন্টারে আসা যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, "সকাল সাড়ে আটটা থেকে দেড় ঘণ্টা যাবত অপেক্ষা করছি। কোন কাউন্টারের গাড়ি চলছে না। ভোগান্তিতে পড়লাম। এখন দেখি ট্রেনে যেতে পারি কি-না।"
মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকেও দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে না। অবরোধে গাড়ি চালানোর অনিশ্চয়তা এবং যাত্রী সংকটে দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
শুধুমাত্র এনা পরিবহনের কয়েকটি বাস ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া আজ রাজধানীর সড়কে যান চলাচল দেখা গেছে তুলনামূলক বেশ কম।
সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মগবাজার মোড় থেকে বাংলামোটর হয়ে শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, সোবহানবাগ, শ্যামলী, কল্যাণপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বাস অনেক কম। অফিসে যাবার এই সময়টাতে সাধারণত এই এলাকায় যানজট দেখা গেলেও আজ রাস্তা ফাঁকা। এছাড়াও অন্য সময় প্রধান সড়কে রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আজ তা চলছে।
আব্দুল মান্নানের সঙ্গে কথা হয় সায়েন্সল্যাব এলাকায়। ৬০ বছর বয়সী মান্নান শ্যামলীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি বলেন, "খুব ভয়ে বের হয়েছি বাসা থেকে। চাকরি করি যেতেই হবে। কোন সময় বাসে আগুন দিয়ে দেয় ভয় করে। আমি চাই দলগুলো এক সঙ্গে বসে রাজনৈতিক এ সংকট অলোচনা করে সমাধান করুক। এতে সাধারণ জনগণ ভোগান্তিতে পড়বে না।"
এদিকে মগবাজার মোড়, শাহবাগ, শ্যামলী, কল্যাণপুর সহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বেশ সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।
মোহাম্মদপুরে অবরোধের তেমন কোন প্রভাব নেই। রাস্তায় গণপরিবহন ও অন্যান্য যানবাহনের উপস্থিতি ভালো। তবে ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ কিছুটা কম। এ এলাকার কিছু দোকানপাটও খুলেছে সকালে।