বন্ড লাইসেন্সের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে তিন বছর করতে যাচ্ছে এনবিআর
রপ্তানিকারকদের বন্ড লাইসেন্সের মেয়াদ বিদ্যমান দুই বছরের জায়গায় এক বছর বাড়িয়ে তিন বছর করতে যাচ্ছে ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ (এনবিআর)।
কার্যবিবরণী অনুসারে,গত ১৯ অক্টোবর রাজস্ব বোর্ড এক সভায় লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করে।
এই পদক্ষেপ উদ্যোক্তাদের জন্য কিছুটা ব্যবসায় সহায়ক হবে বলে মনে করছেন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, তিন বছরের জন্য বন্ড লাইসেন্সের মেয়াদের সুবিধা পেতে হলে আলোচ্য সময়ের মধ্যে অন্তত দুই বছরের অডিট থাকতে হবে এবং ওই সময়ের মধ্যে অন্তত এক বছরের রপ্তানি থাকতে হবে।
অবশ্য বন্ড সুবিধার আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর অডিট না করে দুই বছর পর পর করার দাবি থাকলেও তা এখনও অনুমোদন করেনি এনবিআর।
তাই ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এই শর্ত দিয়ে বন্ড সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা রপ্তানিকারদের জন্য কোনো সুবিধা বয়ে আনবে না।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)- এর এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমাদের দাবি ছিল প্রতি বছরের স্থলে দুই বছর পর পর অডিট করা। কেননা এর ফলে হয়রানি ও বাড়তি খরচ করতে হয়। কিন্তু তা না করে কেবল বন্ড লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ানোয় হয়রানি কমবে না।"
এছাড়া তিন বছরের লাইসেন্সের সময়ে রপ্তানি করার শর্তও যৌক্তিক নয় বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, "কোনো কারণে যদি কেউ রপ্তানি করতে ব্যর্থ হন, তাহলে কী হবে? লাইসেন্স বাতিল হবে? যদি তা হয়, তাহলে চতুর্থ বছরে গিয়ে কেউ যদি রপ্তানি করতে চান, তাহলে আবার লাইসেন্স নিতে হবে। তার অর্থ হলো-- আবার 'খরচের' বিষয়।"
"এগুলো সবই টাকা খাওয়ার ধান্দা," বলেন তিনি।
অবশ্য এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লাইনেন্স নবায়নের মেয়াদ বাড়ালে নন-কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়তে পারে এবং এতে রাজস্ব ঝুঁকির আশঙ্কাও থাকে।
রপ্তানিকারকরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় পণ্য আমদানি করে নির্দিষ্ট গুদামে রেখে তা রপ্তানি করার সুযোগ পান। শর্ত হলো- ট্যাক্স সুবিধায় আনা কাঁচামাল দিয়ে পণ্য তৈরি করে রপ্তানি করতে হবে। এটি বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা বা বন্ড সুবিধা হিসেবে পরিচিত।
দেশের তৈরি পোশাকসহ কিছু শিল্প খাত এই সুবিধা পেয়ে আসছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, তদারকির ঘাটতিতে এক্ষেত্রে বড় ধরনের অনিয়ম হচ্ছে এবং শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা কাঁচামাল কিংবা তৈরি পণ্য স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে, যার ফলে শুল্ক পরিশোধ করে আনা একই পণ্য দিয়ে তৈরি করা স্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তারা অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছেন।