ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: লক্ষ্মীপুরে পল্লীবিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষতি; আমন ধান নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে পল্লীবিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ সময় ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে কয়েক হাজার একর আমন ও শীতকালীন শাকসবজি। এতে বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। তবে কৃষি বিভাগ শনিবার পর্যন্ত কৃষির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় শেষ করতে পারেনি।
শনিবার ( ১৮ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পল্লীবিদ্যুতের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো জাকির হোসেন তাদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানান।
এ সময় তিনি বলেন, ঝড়ে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুতের ৩৩ কেভি ৭টি লাইন আংশিক, ১১কেভি ফিডার লাইনের ৪৬টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে ১৮৭৫টি স্পটে তার ছিড়ে গেছে এবং শতাধিক খুটি ভেঙ্গে পড়েছে। এ সময় প্রায় ১ হাজার মিটার নষ্ট হয়।
ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য মাঠে কাজ করছে পল্লীবিদ্যুতের কর্মীরা।
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় জেলার বেশির ভাগ এলাকায় শনিবার দুপুর পর্যন্ত মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিদ্যুৎ নির্ভর অটোরিকশা চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর, সদর, কমলনগর, রামগতি উপজেলার ১০-১২ জন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ায় জেলার প্রতিটি উপজেলায় কয়েক হাজার হেক্টর ধান জমিতে নুইয়ে পড়েছে। ফলে ধান কাটার আগ মুহূর্তে এতে ক্ষতির শঙ্কা করছেন কৃষকরা।
এছাড়া, শীতকালীন সবজিরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. জাকির হোসেন বলেন, বহু ক্ষেতে আমন ধানের গাছ ভেঙে পড়েছে। অনেক আমন ক্ষেত ও সবজি ক্ষেতে পানি জমে আছে। পানি দ্রুত নেমে গেলে ধানসহ ফসলের ক্ষতি কম হবে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে এখনও কাজ করছে কৃষি বিভাগ। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে কৃষি বিভাগের ক্ষতির হিসেবে দেওয়া যাবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে লক্ষ্মীপুরে ৮৩ হাজার ৫০৯ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। শীতের সবজির আবাদ হয়েছে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। ক্ষেতের আমন ধান এখনো কাঁচা। এ পর্যন্ত ৬ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।
এদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া জানান, ঝড়ে ১৬১টি বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫০টি কাঁচাঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে।