‘সবকিছুর একটা লিমিট আছে’- মুশফিক ইস্যুতে পাপন
বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে মুশফিকুর রহিমের 'অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড' আউট হওয়া নিয়ে একটি প্রতিবেদন করে বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর টিভি। যেখানে নির্ভরযোগ্য দলিল, উপযুক্ত তথ্য ছাড়াই ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়ানো হয় মুশফিকের নাম। এই ঘটনায় আজ একাত্তর টিভিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
বিসিবিও এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের পর মাঠেই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বিসিবি সভাপতি। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ পাপন। তার মতে, এটা সাংবাদিকতা নয়। যেকোনো বিষয়ে যে একটা সীমা থাকে, সেটাও মনে করালেন বিসিবি প্রধান।
এ বিষয়ে বিসিবির পদক্ষেপ জানতে চাইলে পাপন বলেন, 'যে ঘটনার কথা বলছেন, জিনিস পরিবর্তন হচ্ছে। একটা সময় ছিল মিথ্যা তথ্য দিলেই মানুষ বেশি খেত, গ্রহণযোগ্য ছিল। কিন্তু এসব মিথ্যাচার করতে করতে এমন অবস্থা যে, মানুষ এখন উল্টো কথাও বলছে। তারা নিয়মিত বলছে, এরা তো ক্রিকেটকে ধংস করার জন্য নেমেছে। তো আমরা সেটা জানি। এই জিনিসটাই তো আমরা চাচ্ছি, এটার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। জানুক, তারপর বিসিবির যা করার, তা তো করবেই।'
মুশফিক আইনি নোটিশ পাঠালেও অভিভাবক সংস্থা বিসিবি এখনও কোনো বিবৃতিও দেয়নি। অতীতেও বাংলাদেশ ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অনেকে নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে খবর প্রকাশ করার পরও চুপ থেকে গেছে বিসিবি। এটা তাহলে বিসিবির উদারতা? এমন প্রশ্নের উত্তরে পাপন বলেন, 'উদারতা নয়, সত্যিটা মানুষের কাছে এমনিতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবকিছুর একটা লিমিট আছে। যখন লিমিটটা ক্রস করে যায়, তখন মানুষ বোঝে আসলে এটা সাংবাদিকতা না অন্য কিছু।'
আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বিসিবি ব্যবস্থা নেবে জানিয়ে পাপন বলেন, 'আমি পরশুদিন দেশে এসেছি, কালকেই প্রথম এসেছি বোর্ডে। কালই আমরা বসছিলাম, বোর্ডে কয়েক ঘণ্টা ছিলাম। আমি উনাদের সঙ্গে বসেছি, কথা বলেছি। আমি আমার মতামত তাদের জানিয়ে দিয়েছি। আপনারা কয়েকটা দিন অপেক্ষা করুন। আমরা কী করছি, না করছি তা আপনারা জেনে যাবেন।'
ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে গত ৬ ডিসেম্বর করা প্রতিবেদনটি ফেসবুক থেকে কিছুক্ষণ পরই সরিয়ে দেয় টেলিভিশন চ্যানেলটি। পরের দিন নিজেদের অফিসিয়াল পেস থেকে দুঃখ প্রকাশ করে একটি পোস্ট দেয় তারা। কিন্তু প্রশ্ন তোলা হয়, দুঃখ প্রকাশেই কি সব দায়বদ্ধতা পালন করা হয়ে যায়? বিসিবি সভাপতি বলেন, 'এখানে দুটো পার্টি আছে, একটা ভিকটিম, আরেকটা আমরা, যাদের উপর ভিকটিমরা নির্ভর করে।'
'আমরা তো ক্রিকেটে অন্তত অভিভাবক হিসেবে দাবি করতে পারি। দুটি পার্টিরই ভূমিকা আছে। ভিকটিমের কাজটা ভিকটিম করেছে। ভিকটিম যদি কিছু না করে, তাহলে কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। অন্য বিষয়গুলোগুলোতে আমাদেরকে যদি কিছু না জানায়, তাহলে কিছু করার থাকে না। আমি আজ এসে শুনেছি, এটা নিয়ে হয়তো স্টেপ নিয়েছে মুশফিক। এখন পদক্ষেপ নেবে, যা করণীয় বিসিবি করবে।' যোগ করেন তিনি।
বিসিবির মুখপাত্র হিসেবে বেশিরভাগ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে থাকেন পাপন। গত ৭-৮ মাসে সেভাবে কথা না বলায় যোগাযোগের ঘাটতিতে সংশয় তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। বিসিবির দায়িত্বশীল পরিচালকরা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সেভাবে কথা না বলায় তাদেরকে এ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন বলেও জানান পাপন।
তিনি বলেন, 'আগে একটা সময় ছিল, যখন আমি আরও বেশি যুক্ত ছিলাম এ সমস্ত ব্যাপারে। আমি নিয়মিত আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতাম। এই ৭-৮ মাস যখন আমি বন্ধ করেছি, বিসিবির সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বিসিবি থেকে কেউ কথাই বলছে না। কাল ওনাদের (পরিচালক) সঙ্গে বসেছিলাম। বললাম "কী হলো, আপনারা চুপচাপ বসে আছেন কেন।" আমি নাই, কাউকে তো বলতে হবে। না হলে তো দ্বিধা থাকতেই পারে।'