তারল্য সংকট নিয়ে পাঁচ ইসলামি ব্যাংককে সতর্ক করা হয়েছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
তারল্য সংকটে থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংককে ২০ কার্যদিবসের মধ্যে চলতি হিসাবের ঘাটতি অর্থ সমন্বয় করতে বলে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসিকে সতর্কতামূলক চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি বলেন, 'তাদেরকে সতর্কতামূলক চিঠি দেয়া হয়েছে। সতর্কতা মানি পেমেন্ট সেবা বাতিলের সিদ্ধান্ত না।'
মেজবাউল হক আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় এ নিয়ে চিঠি দিলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ।
ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর কাঠামোগত সমস্যার কারণে এসব ব্যাংক তারল্য সংকটে পড়েছে। এ নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। মেজবাউল হক জানান, আগামীতে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, 'এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য। এরপর বহিস্থ চাপ থেকে বের হয়ে এলে সংকটে পড়া ব্যাংকের সুশাসন নিয়ে কাজ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।'
মুখপাত্র বলেন, ২০ কর্মদিবসের মধ্যে ঘাটতি সমন্বয় না করা হলে অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ হবে কি না, তা পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে। এর আগেও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংককে ৭০০ কোটি টাকার সহায়তা দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকের চলতি হিসাব ঋণাত্মক হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সহায়তা দেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে সমন্বয় করে নেয়া হয়। এটি চলমান প্রক্রিয়া।
গত ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঁচ ইসলামি ব্যাংককে চিঠি দেয়া হয়। তাতে বলা হয়, চিঠি পাওয়ার ২০ কর্মদিবসের মধ্যে চলতি হিসাবের ঋণাত্মক স্থিতি সমন্বয় করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, 'আপনাদের চলতি হিসাবের স্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে যে, চলতি হিসাবের স্থিতি দীর্ঘদিন যাবৎ ঋণাত্মক যা স্বাভাবিক ব্যাংকিং প্রক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিষয়টি বারংবার আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও আপনাদের পক্ষ হতে এ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
'পত্র প্রাপ্তির ২০ কর্মদিবসের মধ্যে আবশ্যিকভাবে আপনাদের চলতি হিসাবের ঋণাত্মক স্থিতি সমন্বয়ের জন্য আপনাদেরকে পরামর্শ প্রদান করা হলো।'
চিঠিতে আর বলা হয়, 'নিরধারিত সময়ের মধ্যে সমন্বয়ে ব্যর্থ হলে পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আপনাদের সম্পাদিত ক্লিয়ারিং স্টেটমেন্টের জন্য নির্ধারিত হিসাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণ চুক্তি মোতাবেক আপনাদেরকে সকল বা নির্দিষ্ট কোনো ক্লিয়ারিং প্ল্যাটফর্ম থেকে বিরত রাখা হবে।'