খরচ বাঁচাতে গণবিবাহের আয়োজন করছে আফগানরা
আফগানিস্তানে ৫০ জন দম্পতিকে নিয়ে একটি গণবিবাহের আয়োজন করা হয়েছে। স্বল্প আয়ের আফগান দম্পতিরা বিয়েতে উচ্চ খরচ এড়াতে এভাবেই গণবিবাহের রীতি বেছে নিচ্ছেন। দেশটির রাজধানী কাবুলের মানুষদের মধ্যে ধীরে ধীরে এ অনুষ্ঠানগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। খবর বিবিসির।
কাবুল ভিত্তিক একটি দাতব্য সংস্থা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। তাদের পক্ষ থেকে নবদম্পতিদের নতুন বিবাহিত জীবন শুরু করতে উপহার হিসেবে কার্পেট ও অন্যান্য গৃহস্থালী সামগ্রীও দেওয়া হয়।
২০২১ সালে তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর নতুন করে পুনরত্থান হওয়া পূণ্য প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রণালয় (মিনিস্ট্রি ফর দ্য প্রোপাগ্যাশন অফ ভার্চ্যু এন্ড দ্য প্রিভেনশন অফ ভাইস) হতে একজন কর্মকর্তা বিয়ের ঐ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তালেবান কর্তৃক নাচ-গান নিষিদ্ধ হওয়ায় অনুষ্ঠান শুরু করা হয় কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে।
স্থানীয় গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, অনুষ্ঠানে কনেদেরকে আলাদা ঘরে রাখা হয়েছিল এবং মধ্যাহ্নভোজের পরেই তাদেরকে সবার সামনে আনা হয়।
বর ও কনেদের তারপর সবুজ ফিতা এবং লাভ আকারের লাল প্লাস্টিকের গোলাপ দিয়ে সজ্জিত গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৮ বছর বয়সী রুহুল্লা রেজায়ি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, তার একার পক্ষে নিজের বিয়ের সমস্ত খরচ বহন করা সম্ভব না। যুবকটি ঘোর প্রদেশের হাজারা শিয়া মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। প্রতিদিন কাজ করে তিনি মাত্র ৩৫০ আফগানি আয় করেন।
রুহুল্লা রেজায়ি বলেন, "একটি ঐতিহ্যবাহী আফগান বিয়েতে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই লাখ আফগানি খরচ হয়। কিন্তু এই বিয়েতে আমার মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার আফগানির মধ্যেই সব খরচ হয়ে যাবে।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা এই বিয়েতে দুই পরিবারের মাত্র ৩৫ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। অন্যথায় এই সংখ্যা তিনশো বা চারশোও হতে পারতো!'
গণবিবাহের এই কর্মসূচিতে অনেক বরকেই উচ্ছ্বসিত হতে দেখা যায়। কাবুল প্রদেশের ২৩ বছর বয়সী কৃষক সামিউল্লাহ জামানি তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, "আমি তিন বছর ধরে এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছি। হবু বউকে দেখার জন্য আমার আর তর সইছে না!'