ওয়াশিং মেশিন নষ্ট হয়েছে? ল্যাপটপ, মোবাইল? মেরামতে খরচ দেবে সরকার!
আপনার ওয়াশিং মেশিন কিংবা ইলেক্ট্রিক কেটলিটি কী ভেঙে গেছে? ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনটি কি আর কাজ করছে না? যদি এমনটা হয়েই থাকে আর আপনি যদি অস্ট্রিয়াতে থাকেন, তাহলে এসব পণ্যের মেরামত করানো নিয়ে চিন্তার কোনো কিছু নেই। কারণ, এগুলো মেরামতের জন্য সরকারই আপনাকে অর্থ দেবে। খবর বিবিসির।
সম্প্রতি অস্ট্রিয়ার সরকার ইলেক্ট্রনিক পণ্য মেরামতের জন্য রিপেয়ার বোনাস ভাউচার স্কিম চালু করেছে। এর উদ্দেশ্য হলো জনগণকে পুরনো ইলেক্ট্রনিক পণ্যগুলো ফেলে দেওয়া থেকে বিরত রাখা, বরং এগুলো মেরামতের বিষয়ে আগ্রহী করে তোলা। এ স্কিমের আওতায় ইলেক্ট্রনিক পণ্য মেরামতের জন্য সর্বোচ্চ ২০০ ইউরো (২১৯ মার্কিন ডলার) দেবে সরকার।
রাজধানী ভিয়েনার একটি কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের মেরামতের দোকান হেলফারলাইনে এরিক নামে একজনকে দেখা গেল। তার ল্যাপটপটি ভেঙে গেছে। তিনি সেটি মেরামত করাচ্ছেন। অস্ট্রিয়ার রিপেয়ার ভাউচার স্কিমের আওতায় ল্যাপটপটি সারানোর জন্য তাকে মোট খরচের অর্ধেকটা দিতে হচ্ছে। বাকি অর্থ দেবে সরকার।
এরিক বলেন, 'ল্যাপটপটি বেশ পুরনো। নতুন একটি কেনার বদলে আমি এটি মেরামত করাতে এনেছি।'
এরিক ইতোমধ্যেই তার একটি পুরনো সিডি প্লেয়ার মেরামত করাতে রিপেয়ার বোনাস স্কিমের সুবিধা পেয়েছেন। তিনি জানান, এ স্কিমের কারণে কোনো জিনিস ফেলে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়েছে।
এ স্কিম চালু হওয়ার পর থেকে দোকানগুলোতে পুরনো জিনিস মেরামতের জন্য গ্রাহকদের ভিড় বেড়েছে। দোকানটিতে লুকাস নামের একজন এরিকের ল্যাপটপ মেরামতের কাজ করছিলেন। তার সামনে টেবিলে বহু কম্পিউটার ও ফোনের বাক্স দেখা গেল, যেগুলো মেরামতের জন্য রাখা হয়েছে।
হেলফারলাইনের প্রধান নির্বাহী ক্লিমেন্স শ্মিদগ্রাবার বলেন, 'স্কিমটির কারণে তার ব্যবসা বেড়েছে। বহু মানুষ তাদের বিভিন্ন জিনিস মেরামতের জন্য নিয়ে আসছে। এটি চালু হওয়ার পর থেকে আমাদের আয় দ্বিগুণ হয়েছে। আমরা এটি নিয়ে খুশি। এ স্কিমের কারণে গ্রাহক, স্থানীয় ব্যবসা ও পরিবেশ সবকিছুর জন্যই লাভজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।'
তিনি আরো বলেন, 'এ স্কিমের কারণে গ্রাহকদের নতুন পণ্য কিনতে হচ্ছে না। এতে তাদের খরচ বেঁচে যাচ্ছে। সেই সাথে ব্যবসা বাড়ার পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক বজ্র্য তৈরি হওয়া থেকেও বাঁচছে পরিবেশ।'
এ স্কিমের সুবিধা পাওয়ার জন্য গ্রাহকদের প্রথমে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে একটি ভাউচার ডাউললোড করতে হবে। তারপর মেরামতের দোকানটিতে অগ্রিম অর্থ প্রদান করতে হবে। এর তিন থেকে চার সপ্তাহ পর গ্রাহক তার খরচের অর্ধেক অর্থ ফেরত পাবেন।
অস্ট্রিয়ার সরকারের এই স্কিম কোভিড রিকভারি ফান্ড থেকে অর্থায়ন করছে। এটি কেবল বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি মেরামতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
ভিয়েনায় এ ধরনেরই আরো কয়েকটি স্কিম চালু রয়েছে। যেগুলোর সাহায্যে গ্রাহকরা পুরনো কাপড়, সাইকেল বা আসবাবপত্র মেরামতের জন্য অর্থ পেয়ে থাকে।