মিয়ানমার সীমান্তে সংঘাত ইস্যুতে সব বাহিনী ও প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে: জেলা প্রশাসক
বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের পাশে মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'বিজিবি, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সবার্ত্মক সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। আজকে এখানে এসে আপাতত কোনো প্রকার ঝুঁকি দেখছি না। যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি আমরা সুন্দরভাবে মোকাবিলা করতে পারব।'
আসন্ন এসএসএসি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন করে তিনি বলেন, 'জরুরি মুহূর্তে প্রয়োজনে যদি কেন্দ্র স্থানান্তর করতে হয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প কেন্দ্রের কথা বিবেচনায় নিয়েছি। জনসাধারণের মধ্যে কোনো ধরনের আতঙ্ক যেন না থাকে সে ব্যাপারে কাজ করা হচ্ছে।'
জেলা প্রশাসক বলেন, 'বিগত তিনদিনে সীমান্তের ওপারে ১৭–১৮টি মর্টারশেল শব্দ শোনা গেছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। গত পরশুর ঘটনায় সীমান্তের শূন্যরেখায় আব্দুর রহিম নামক এক ব্যক্তির বাড়ির পাশে একটি [মর্টার শেলের] খোসা এসে পড়েছে। গতকাল সন্ধ্যায়ও সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া গেছে। আজকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ দেখা যায়নি।'
বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমানায় পড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তৈরি মূল ট্রানজিট ক্যাম্পগুলো অনেকাংশে প্রস্তুত হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, 'ঘুমধুম ইউনিয়নে সীমান্ত এলাকায় তৈরি করা দুটি মূল ট্রানজিট ক্যাম্প অস্থায়ীভাবে ব্যবহার করার জন্য শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়কে হস্তান্তর করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যা নির্দেশনা দেবে সেভাবে প্রত্যাবাসনের কাজ শুরু করব।'
সীমান্ত পরিদর্শনে আসা জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সবার সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। 'বিজিবিসহ সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। পুলিশি যে ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলো আরও ঢেলে সাজানো ও জোরদার করা হয়েছে,' বলেন তিনি।
ঘুমধুম ইউনিয়নে ১ নম্বর ওয়ার্ডের তুমব্রু পাড়ার বাসিন্দা কান্ত কুমার সেন জানান, 'বিজিপি ক্যাম্প (মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী) আমাদের বাড়ির পাশে। আবার হঠাৎ করে কখন কী হয় এ ভয়ে মাকে বান্দরবানে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি।'
একই এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ আলম বলেন, সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি ঘটনা কখনও লাগাতার ঘটে। আবার কখনও হঠাৎ হঠাৎ করে হয়। তিনি বলেন, 'সীমান্তবাসী নিজের এলাকা ছেড়ে আর কোথায় যাবে। ভয় পেয়ে হলেও নিজের ভিটেমাটিতে থাকতে হচ্ছে।'
জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পরিদর্শন দলে উপস্থিত ছিলেন নাইক্ষ্যংছড়ি ইউএনও মোহাম্মদ জাকারিয়া, ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাকারিয়া এবং ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্যরা।