উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির তৃণমূলকে আকৃষ্ট করতে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেয়নি আ.লীগ: বিএনপি
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না দেওয়া বিষয়টিকে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের নির্বাচনে অংশ নিতে আকৃষ্ট করার কৌশল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো ধরনের নির্বাচনে না যাওয়ার সেই সিদ্ধান্তে এখনও অনমনীয় ও অপরিবর্তনীয় বলে জানান দলটির নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডকে বলেন, 'দলীয় প্রতীক ব্যবহারের আইনটি সরকার চাইলেই সংসদে পাশ করে বাতিল করতে পারে, কিন্ত তা করেনি। শুধুমাত্র বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় এবং দেশের জনগণ ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ায় দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ প্রতীক ব্যবহার না করার 'অপকৌশল' নিয়েছে এবং বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিভিন্ন চাপ ও প্রলোভন দেখিয়ে নির্বাচনে নেয়ার ফাঁদ তৈরি করেছে বর্তমান সরকার। যদিও বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, তারপরও যদি এখন যাওয়ার ঘোষণা দেয়, সাথে সাথে আওয়ামী লীগ আবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার ঘোষণা দেবে।'
সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের পর ২০১৪ সালে দেশের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা হয়। আইন অনুযায়ী, বর্তমানে দলগুলোকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকসহ বা ছাড়া প্রার্থী দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান টিবিএসকে বলেন, এ সরকারের অধীনে যেকোনো নির্বাচনের ফলাফলই সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং পূর্বনির্ধারিত।
'আওয়ামী লীগ স্বভাবজাতভাবে সহিংস। তাদের অধীনে অতীতের প্রতিটি নির্বাচনে তারা বিরোধী প্রার্থীদের ওপর হামলা, মারধর, সহিংসতা ও কেন্দ্র দখল করে ভোট কারচুপি করেছে,' বলেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'অতীতের স্থানীয় সরকার নির্বাচন পর্যালোচনা করলেও দেখা যায়, এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে গিয়ে বিএনপির ক্ষতি ছাড়া খুব একটা লাভ নেই। বিএনপি নির্বাচনে গেলে ভোট কারচুপি করবে, কোথাও কোথাও ভোট কারচুপি করে জিততে না পারলেও বিএনপির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় নিপীড়ন করে পদ থেকে বরখাস্ত করবেই। সুতরাং, অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করলেও বলা যায়, এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া ক্ষতি ছাড়া কোনো লাভ নাই।'
রিজভী আরও বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিএনপির কেউ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী হলে আগের মতো এবারও কঠোর সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গত ২২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভা শেষে আসন্ন উপজেলা, সিটি, পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী না দেওয়ার ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, আসন্ন যষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন।