প্রথম স্মার্টফোন, টাচস্ক্রিন, ব্ল্যাকবেরির পতন... ৪০ বছরে মোবাইল ফোনের যত বিবর্তন
১৯৮৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রথম মোবাইল ফোন ছাড়া হয়েছিল। গত ৪০ বছরের ইতিহাসে মোবাইল ফোন আকারে বড় থেকে ছোট হয়ে আবার বড় হয়েছে।
প্রথম ফোন
১৯৮৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মার্কিন কোম্পানি মটোরোলা বিশ্বের প্রথম মোবাইল ফোন বাজারে ছাড়ার অনুমোদন পায়। ফোনটির নাম ছিল 'ডায়নাট্যাক ৮০০০এক্স'।
ছবিতে মটোরোলার সাবেক প্রধান ডিজাইনার রুডি ক্রলোপের ডান হাতে মোবাইলটি দেখা যাচ্ছে। ৮০০ গ্রাম ওজনের ফোনটি ১৩ ইঞ্চি লম্বা ছিল। দাম ছিল প্রায় ৪ হাজার ডলার বা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা।
প্রথম স্মার্টফোন
১৯৯৬ সালে 'নোকিয়া কমিউনিকেটর ৯০০০' বাজারে এসেছিল। এটিই ছিল প্রথম ফোন যেখানে কম্পিউটারের সব কাজ করা যেত। কারণ এতে কিবোর্ড ছিল, ছিল ভালো মানের স্ক্রিন। ইমেল করা, ওয়েবসাইট দেখা, লেখা, স্প্রেডশিট ব্যবহার সব করা যেত এই ফোনে।
এসএমএস
এখন আমরা মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করি। কিন্তু একসময় শর্ট মেসেজিং সার্ভিস বা এসএমএস পাঠানো হতো। একেকটি এসএমএস পাঠাতে টাকা দিতে হত। ১৬০ বর্ণের বেশি লেখা যেত না।
আকার ছোট
চলতি শতাব্দীর শুরুতে ছোট আকারের মোবাইল ফোন তৈরির দিকে নজর দিয়েছিল নির্মাতারা। মটোরোলা কোম্পানি এমন ফোন বের করেছিল, যা ব্যবহারের আগে ও পরে 'ফ্লিপ' করা যেত। ওই সময় ডিসপ্লের আকার বড় করার চেষ্টাও দেখা গেছে।
টাচস্ক্রিন
২০০৭ সালে অ্যাপল প্রথম আইফোন বাজারে নিয়ে আসে। এতে কিবোর্ডের জায়গায় টাচস্ক্রিন এসেছিল, যা ছিল প্রথম ঘটনা। এছাড়া ফোনে একটি মিউজিক লাইব্রেরি ছিল। ফলে এমপিথ্রি প্লেয়ারের আর প্রয়োজন ছিল না।
ব্ল্যাকবেরির পতন
একসময় ব্যবসায়ীদের পছন্দের ফোন ছিল ব্ল্যাকবেরি। বলা যায়, এটিই ছিল প্রথম স্মার্টফোন, যা বহুল ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু টাচস্ক্রিনের যুগ শুরু হওয়ার পর কানাডার ব্ল্যাকবেরি কোম্পানি সেই ট্রেন্ড ধরতে অনেক দেরি করে ফেলে। ফলে কোম্পানিটি আর টিকতে পারেনি।
সবার কাছে ফোন
জার্মানির স্ট্যাটিস্টা সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে অন্তত একটি মোবাইল ফোন থাকা মানুষের সংখ্যা ৪৬০ কোটি। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। মোবাইলের কারণে ল্যান্ডলাইন যোগাযোগ অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। এখন পথ চেনা, ছবি তোলা, তথ্য ও বিনোদনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে মোবাইল ফোন।
বড় আকার
মানুষ এখন মোবাইলে ভিডিও দেখতে পছন্দ করে। তাই বড় ডিসপ্লের মোবাইল ফোনের চাহিদা বেড়েছে। ফলে স্মার্টফোনের আকার আবার বড় হচ্ছে।
আবার 'ফ্লিপ' ফোন
স্যামসাং ও মটোরোলা আবার ফ্লিপ ফোন নিয়ে এসেছে। ফোন ফ্লিপ করে খোলার পর দুই অর্ধের টাচস্ক্রিনের মধ্যে কোনো প্রান্ত বা জয়েন্ট দেখা যায় না। অর্থাৎ অতীতের মতো বড় আকারের ফোন ও ফ্লিপ করা যায়, এমন ফোন আবার ফিরে আসছে।