রাজধানীর সব পার্ক ও খেলার মাঠের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
ছয় মাসের মধ্যে ঢাকা মহানগরীর সমস্ত পার্ক ও খেলার মাঠের পূর্ণাঙ্গ তালিকা চেয়ে ঢাকার পার্ক ও খেলার মাঠে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণের মেয়র, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রধানকে নগরীর সব পার্ক ও খেলার মাঠের তালিকা তৈরি করে আদালতে দাখিলের জন্য ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
পার্ক ও খেলার মাঠে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের পাশাপাশি বিদ্যমান পার্ক ও খেলার মাঠগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখার এবং আদেশ পালনের পর ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা একটি রিট আবেদনে ওপর প্রথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এছাড়াও জনসাধারণের ব্যবহার্য পার্ক ও খেলার মাঠে বাণিজ্যিকীকরণ, অননুমোদিত স্থাপনা নির্মাণ, শ্রেণি পরিবর্তন এবং দখল সংবিধান ও প্রচলিত আইনের পরিপন্থি হওয়ায় কেন তা বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
চার সপ্তাহের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব; স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব; ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র; রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনে বেলা বলেছে, আয়তন বিবেচনায় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে খেলার মাঠ দরকার অন্তত ৬১০টি, কিন্তু রয়েছে মাত্র ২৩৫টি, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১২৯টি ওয়ার্ড থাকলেও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) উল্লেখ রয়েছে যে ৪১টি ওয়ার্ডে কোনো খেলার মাঠ নেই।
এর ফলে ঢাকার মোট জনসংখ্যার ২৭.৮২ শতাংশ তরুণ খেলার মাঠের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিভিন্ন সময় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে পার্ক বা উদ্যান রয়েছে মাত্র ২৭টি। এর মধ্যে ৬টি পার্ক বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ইজারা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডে পার্ক রয়েছে মাত্র ২৩টি। বিদ্যমান এসব পার্ক ও খেলার মাঠের অধিকাংশেই নেই সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার। ফলে নাগরিকরা বঞ্চিত হচ্ছে নির্মল বায়ু সেবন, ব্যায়াম ও হাঁটাচলার অধিকার থেকে।
বেলা জানায়, ঢাকা শহরের সব খেলার মাঠ ও পার্ক রক্ষায় জনস্বার্থে মামলাটি দায়ের করে তারা।