জ্যাকস-মঈনে রেকর্ড গড়ে জিতল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
লিটন কুমার দাস ও উইল জ্যাকসের ঝড়ো শুরু। ষাট ছুঁয়ে লিটন থামলেও তাণ্ডব জারি রাখলেন জ্যাকস, তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। বেধে দেওয়া সুরে তাল মিলিয়ে ২২ গজে সাইক্লোন বইয়ে দিলেন মঈন আলী। এই তিন ব্যাটসম্যানের ব্যাটে রেকর্ড সংগ্রহ গড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। পরে বল হাতে রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমানদের তোপের পর প্রতিপক্ষের শেষের গল্প লেখার দায়িত্ব নিলে খুনে হাফ সেঞ্চুরি করা মঈন। দারুণ এক হ্যাটট্রিকে নিশ্চিত করলেন কুমিল্লার বড় জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭৯ রানে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আট ম্যাচে ছয়টি জিতলো বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ১২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে আছে শিরোপা প্রত্যাশী দলটি। নয় ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিন নম্বর দল ঘরের মাঠে হারে শুরু করা চট্টগ্রাম।
টস হারে আগে ব্যাটিং করতে নামে কুমিল্লা। দাপুটে শুরুর পর তাণ্ডব চালাতে থাকেন লিটন ও ম্যাচসেরা জ্যাকস। লিটন হাফ সেঞ্চুরি করে থামলেও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন জ্যাকস। শেষ দিকে চট্টগ্রামের বোলারদের দিক ভুলিয়ে টর্নেডো ইনিংস খেলেন মঈন, তুলে নেন অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরিও। এই তিন জনের ব্যাটে ৩ উইকেটে ২৩৯ রান তোলে কুমিল্লা। যা বিপিএলের ইতিহাসে যৌথভাবে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড। ২০১৯ আসরে রংপুর রাইডার্সও ২৩৯ রান করে।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় চট্টগ্রামও শাসন করে ব্যাটিং করতে থাকে। ৮ ওভার পর্যন্ত ঠিক পথেই ছিল ঘরের মাঠের দলটি। কিন্তু এখান থেকে রিশাদের তোপের যে দিক হারায় চট্টগ্রাম, আর ঠিক পথের দেখা মেলেনি। রিশাদ, মুস্তাফিজদের পর উইকেট বৃষ্টি নামান হ্যাটট্রিক হিরো মঈন। ১৭তম ওভারের প্রথম তিন বলে তিন উইকেট নিয়ে চট্টগ্রামকে গুটিয়ে দেন ইংল্যান্ডের এই অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে ঝড় তোলা জ্যাকস ফিল্ডিংয়েও ছিলেন দুর্বার, পাঁচটি ক্যাচ নেন তিনি। ১৬.৩ ওভারে ১৬৬ রানে অলআউট হয় চট্টগ্রাম।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা পায় চট্টগ্রাম। উদ্বোধনী জুটিতে ৭.৩ ওভারে ৮০ রান তোলেন জশ ব্রাউন ও তানজিদ হাসান তামিম। ২৪টি বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪১ রান করে তামিম বিদায় নেওয়ার পর খেই হারায় দলটি। দ্রুত রান তুললে নিয়মিত ধারায় উইকেট হারাতে থাকে চট্টগ্রাম। ২৫ রানের মধ্যে ৫টি উইকেট হারায় তারা। ব্রাউন ২৩ বলে ৩৬, টম ব্রুস ৭ বলে ১১, শাহাদাত হোসে দিপু ৮ বলে ১২ ও কার্টিস ক্যাম্ফার ৫ রান করে ফিরে যান।
এরপর সৈকত আলী ও অধিনায়ক শুভাগত হোমই যা লড়েছেন। সৈকত ১১ বলে একটি চার ও ৫টি ছক্কায় ঝড়ো ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন। ১৩ বলে ৩টি চারে ১৯ রান করেন শুভাগত। ১৭তম ওভারে টানা তিন বলে শহিদুল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন ও বিলাল খানকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক করেন মঈন। বিপিএলের অষ্টম বোলার হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। ৩.৩ ওভারে ২৩ রান খরচায় ৪টি উইকেট নেন ইংলিশ এই অলরাউন্ডার। ৪ ওভারে ২২ রানে রিশাদও নেন ৪ উইকেট। খরুচে মুস্তাফিজ ৩ ওভারে ৪৬ রানে ২টি উইকেট পান।
এর আগে কুমিল্লাকে রান পাহাড়ে তোলার প্রধান কারিগর জ্যাকস ৫৩ বলে ৫টি চার ও ১০টি ছক্কায় ১০৮ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন। অধিনায়ক লিটন ৩১ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬০ রান করেন। শেষ দিকে চট্টগ্রামের বোলারদের কোণঠাসা করে ২৪ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৫৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন মঈন। চট্টগ্রামের শহিদুল ২টি ও সৈকত আলী একটি উইকেট নেন।