ঈদের ছুটিতে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম থেকে যাতায়াত বন্ধের পরামর্শ টেকনিক্যাল কমিটির
কোভিড-১৯ সংক্রমণ বিস্তার রোধে ঈদের ছুটির সময় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম থেকে অন্যান্য স্থানে যাতায়াত বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে সরকারের কোভিড-১৯ ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি কমিটি। আজ শুক্রবার (১০ জুলাই) কমিটির ১৪তম অনলাইন সভায় এ সংক্রান্ত বেশকিছু প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়।
এরপর এদিন সন্ধ্যায় ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা ও অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রস্তাবনাগুলো সম্পর্কে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণ এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এ অবস্থায় ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধ জীবনযাত্রায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টেকনিক্যাল কমিটি।
কমিটি ঢাকা ও তার আশেপাশের এলাকায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের পরামর্শ দেয়। ঈদ-উল-আজহাতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে পশুর হাট স্থাপন না করার সুপারিশ করা হয়। এক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কোরবানির পশু কেনাবেচার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অন্যান্য স্থানে সংক্রমণ প্রতিরোধ নীতিমালা পালন সাপেক্ষে কোরবানির পশুর হাট বসানো যেতে পারে। হাট স্থাপন ও পশু জবাই এর ক্ষেত্রে; কোরবানির পশুর হাট শহরের অভ্যন্তরে স্থাপন না করে- খোলা ময়দানে হতে হবে। যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সংক্রমণ প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
এছাড়া বয়স্ক (৫০ বয়শোর্ধ) এবং অসুস্থ ব্যক্তির পশুর হাটে যাওয়া থেকে বিরত থাকা নিশ্চিত করতে হবে। পশুর হাটে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার পৃথক রাস্তা রাখা, পশুর হাটে আগমনকারি সকল ব্যক্তির মাস্ক পরিধান করা বাধ্যতামূলক করা এবং কোরবানির পশু বাড়ীতে জবাই না করে শহরের বাহিরে সিটি করপোরেশন দ্বারা নির্ধারিত স্থানে করার পরামর্শ দেয় টেকনিক্যাল কমিটি।
কমিটির প্রস্তাবনায়, কোভিড-১৯ পরীক্ষার সংখ্যা ও মানোন্নয়নের জন্য পরীক্ষাগারের সংখ্যা বৃদ্ধির চেয়ে বিদ্যমান ল্যাবরেটরিগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতি জোর দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে, অটো-এক্সট্র্যাকশন মেশিন এর সহযোগিতায় পরীক্ষাগারে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভব, বলে জানানো হয়। পাশাপাশি কোভিড-১৯ পরীক্ষার নমুনা দেওয়া থেকে পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
জাতীয় কমিটি তাদের প্রস্তাবনায় এন্টিজেন ভিত্তিক কোভিড-১৯ পরীক্ষার অনুমতির জন্য ঔষধ প্রশাসনকে পরামর্শ দেয়া হয়, এতে করে দ্রুত পরীক্ষার সুযোগ প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া আরটি পিসিআর টেস্টিং কিট একই প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে নানা উৎস থেকে সংগ্রহের ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। এতে প্রয়োজনীয় কিটের সংকট এড়ানো যাবে।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন প্রস্তুতের বিষয়টিকে জাতীয় কারিগরি পরামর্শ কমিটি স্বাগত জানিয়েছে। তবে ভ্যাকসিন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে অবশ্যই সরকার, বিএমআরসি ও ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদনক্রমে এবং ভ্যাকসিন প্রস্তুতিতে আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।