২টির বেশি সন্তান নয়, বহুবিবাহ বন্ধ করতে হবে: ‘বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত’ মুসলিমদের আসামের মুখ্যমন্ত্রী
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, যেহেতু এটি আসামের মানুষের সংস্কৃতি নয়, তাই 'বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত' বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমদের উচিত 'দুইটির বেশি সন্তান না নেওয়া এবং বহুবিবাহ করা বন্ধ করা।'
রাজ্যটিতে বসবাসকারী 'বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত' অভিবাসী মুসলমানদের ওপর কিছু শর্ত আরোপের সময়' শনিবার (২৩ মার্চ) তিনি আরও বলেছেন, 'তারা যদি ভারতীয় হতে চায়, তাহলে তারা নাবালিকা মেয়েদের বিয়ে দিতে পারবে না।'
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়েছে, বিশ্ব শর্মা বলেছেন, 'যদি আপনি চান যে আপনাকে কেউ ভারতীয় বলুক, তাহলে আপনার সন্তানদের মাদ্রাসায় না পাঠিয়ে চিকিৎসক ও ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য শিক্ষা দিন।'
তিনি আরও বলেছেন, 'তাদের মেয়েদেরও স্কুলে পাঠানো শুরু করা উচিত এবং বাবার সম্পত্তিতে তাদের অধিকার দেওয়া উচিত।'
বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানরা 'সাতরা'য় (বৈষ্ণব মঠ) বসতি স্থাপন করে কীভাবে নিজেদের ভারতীয় দাবি করতে পারেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'এগুলোই এ রাজ্যের ভারতীয় লোকজন ও তাদের মধ্যে তফাত। যদি তারা এসব প্রথা ছাড়তে পারে এবং আসামের জনগণের সংস্কৃতি আত্মস্থ করতে পারে, তাহলে এক সময় তারাও ভারতীয় হয়ে উঠতে পারবে।'
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পর দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রাজ্য আসাম। ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, রাজ্যটির মোট জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশেরও বেশি মুসলিম।
রাজ্যের এই মুসলিম জনগোষ্ঠী দুটি স্বতন্ত্র জাতিগোষ্ঠীর– বাংলা ভাষাভাষী ও 'বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত' অভিবাসী মুসলিম এবং আরেকটি হলো অসমিয়াভাষী ভারতীয় মুসলিম।
বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের কোনো ইতিহাস নেই রাজ্যের এমন অসমিয়াভাষী প্রায় ৪০ লাখ মুসলিমকে আসাম মন্ত্রিসভা ২০২২ সালে 'আদিবাসী অসমিয়া মুসলিম' হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তাদের মধ্যে রয়েছে গোরিয়া, মোরিয়া, দেশি, জুলাহ ও সৈয়দ সম্প্রদায়।
রাজ্যটিতে অসমিয়াভাষী আদিবাসী মুসলমানের সংখ্যা মোট মুসলিম জনসংখ্যার মাত্র ৩৭ শতাংশ, যেখানে অভিবাসী বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানের সংখ্যা ৬৩ শতাংশ।