এশিয়া কাপ না হলে বিসিবির ক্ষতি সাড়ে ২৫ কোটি টাকা
করোনাভাইরাসের প্রকোপে এলোমেলো হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচি। বেশিরভাগ সিরিজ, টুর্নামেন্ট স্থগিত হয়ে গেছে। স্থগিত হওয়ার মিছিলে সর্বশেষ যোগ হয়েছে এশিয়া কাপ। দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট আসরটি কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আগামী বছরের জুনের দিকে আসরটি আয়োজন করার চেষ্টা করবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। এ জন্য এখন থেকেই সুবিধামতো সময়ের সন্ধানে আছে দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। কিন্তু এশিয়া কাপ শেষ পর্যন্ত না হলে বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)।
অনেক সিরিজ স্থগিত হয়ে যাওয়াও আগামী বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ত সূচি থাকবে। প্রতিটি দলই চাইবে নিজেদের স্থগিত হয়ে যাওয়া সিরিজ খেলে নিতে। এর প্রভাব পড়তে পারে আগামী বছর আয়োজন করতে চাওয়া এশিয়া কাপে। শেষ পর্যন্ত কোনো কারণে এশিয়া কাপ না হলে বিসিবির আর্থিক ক্ষতি হবে ৩ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
অবশ্য কেবল বিসিবিরই নয়, এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া প্রতিটি দলেরই সাড়ে ২৫ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হবে। যে ৩ মিলিয়ন ডলারের কথা বলা হচ্ছে, এই অর্থ আসরে অংশ নেওয়া বাবদ প্রতিটি দল প্রাইজমানি হিসেবে পেয়ে থাকে। আসরটি না হলে স্বাভাবিকভাবেই এই ৩ মিলিয়ন ডলার প্রাইজমানি পাবে কোনো দল।
এর সঙ্গে আরও আর্থিক ক্ষতির হিসাব রয়েছে। আইসিসির প্রতিটি টুর্নামেন্টেই টাইটেল স্পন্সর থেকে বড় অঙ্কের অর্থ মেলে প্রতিটি দেশের। সঙ্গে থাকে আরও স্পন্সরসহ ব্রডকাস্ট থেকে পাওয়া অর্থের বিষয়গুলো। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হবে। যদিও আপাতত এত কিছু মাথায় নিচ্ছে না বিসিবি।
ক্ষতির হিসাব করতে গিয়ে শুধু টুর্নামেন্টের প্রাইজমানির ব্যাপারটিই উল্লেখ করলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, এশিয়া কাপ না হলে টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া বাবদ ৩ মিলিয়ন ডলার পাওয়া যাবে না। তবে আসরটি বাতিল না হওয়ায় আশাবাদী বিসিবি।
নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'আসরটি বাতিল করা হয়নি। এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। আসরটি আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে, সেভাবেই সবকিছু এগোচ্ছে। তবে কোনো কারণে এশিয়া কাপ না হলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। অংশ নেওয়া বাবদ প্রতিটি দল ৩ মিলিয়ন ডলার করে পায়। এশিয়া কাপ না হলে এই অর্থ আমরা পাব না।'
এশিয়া কাপ আয়োজন করতে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে এসিসি, চলেছে অনেক দেন-দরবার। যদিও কোনো কিছুই কাজে আসেনি। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় আসরটি স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।
করোনাভাইরাসের কারণে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, কোয়ারেন্টিনে থাকার বাধ্যবাধকতা, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও সামাজিক দূরত্বের প্রয়োজনীয়তার বিষয়গুলো বিবেচনা করে আসরটি স্থগিত করা হয়। স্থগিত ঘোষণার দিনই জানানো হয়, আগামী বছর জুনের দিকে এশিয়া কাপ আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে এসিসির।
আগামী সেপ্টেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এবারের এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। যদিও এশিয়া কাপের মূল আয়োজক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু দেশটিতে ভারত সফর করতে না চাওয়ায় আসরটি সরিয়ে নেওয়া হয়। এসিসি অবশ্য তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে জানিয়েছে, এশিয়া কাপের আয়োজক হবে শ্রীলঙ্কা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২১ সালে এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হবে। সম্ভাব্য সময় হিসেবে জুন মাসকে বেছে নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট আলোচনার মাধ্যমে আয়োজক স্বত্ত্ব অদল-বদল করে নিয়েছে। ২০২১ সালে এশিয়া কাপ আয়োজন করবে শ্রীলঙ্কা।