ফেরত পাঠানো হলো মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্যকে
মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দেশটির ২৮৮ জন সেনা ও বিজিপি সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে দু'দেশের প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিটিএ ঘাটে তাদের হস্তান্তর করা হয়। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে টাগবোটে করে তাদের তুলে দেওয়া হয় গভীর সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমারের জাহাজে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাটে কঠোর নিরাপত্তা বলয়। চারদিকে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের অবস্থান। ঘিরে ফেলা হয়েছে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের পুরো এলাকাটি। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আসা ১১টি বাস ভোর সাড়ে ৫টায় কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া প্রত্যাবাসন ঘাটে পৌঁছায়।
তারপর মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির ২৮৮ জন সদস্যের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক হয়। মিয়ানমারের পক্ষে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ও বিজিপির ৫ সদস্য এবং বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। ঘণ্টাব্যাপী যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শেষে সকাল ৭টায় মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির সদস্যদের টাগবোটে তুলে দেওয়া হয়। এরপরই মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপিবাহী টাগবোটটি রওনা হয় গভীর সাগরে। এসময় টাগবোটটির সামনে ও পেছনে কঠোর নিরাপত্তার দায়িত্বে নেয় কোস্টগার্ড। এরপর সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমারের জাহাজে তাদের তুলে দেয়া হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, প্রথম দফায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার ইনানীস্থ নৌবাহিনীর জেটি মিয়ানমারের সেনা, বিজিপি ও কাস্টমস কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জনকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর গত দেড়মাসে নতুন করে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির আরও ২৮৮ জন। তাদেরকে নানা প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তাদেরকে গভীর সাগরে মিয়ানমারের জাহাজে তুলে দেওয়া হয়েছে। তারা এখন তাদের দেশে ফিরে যাচ্ছেন।
এদিকে পুরো কার্যক্রম শেষে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েসহ প্রতিনিধি দলকে বিদায় জানায় বিজিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা।
তবে, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল বা বিজিবির কোনো কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে কিছু বলতে রাজি হননি।
অন্যদিকে বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে দেশটির জাহাজে করে দেশে ফিরেছে ১৭৩ জন বাংলাদেশি। ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার জেলার, ৩০ জন বান্দরবান জেলার, সাতজন রাঙ্গামাটি জেলার এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ি, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে।