গণছুটিতে এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীরা, ৩০ জনকে বরখাস্ত, বাকিদের দেয়া হলো আল্টিমেটাম
ভারতের বিমান পরিবহণ সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস ৩০ জন কেবিন ক্রুকে বরখাস্ত করেছে। এয়ারলাইনটির প্রায় ৩০০ জন কর্মচারী অসুস্থতার কথা বলে ফোন বন্ধ রাখার একদিন পরে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। এর ফলে বড় আকারের ফ্লাইট বিপর্যয়ে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। চাকরি থেকে বরখাস্ত লোকের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
কর্তৃপক্ষের বরাতে সূত্র জানিয়েছে, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্মচারীদের আজ বিকেল ৪টার মধ্যে কাজে যোগদান না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে।
টাটা গ্রুপের মালিকানায় থাকে ভারতের পতাকাবাহী বিমান পরিবহণ সংস্থাটি আজ (৯ মে) ৭৬ টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য এটি একটি বড় আর্থিক ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে যেহেতু এটির পরিবহণ খরচ তুলনামূলক কম।
ক্রুদের বরাতে সূত্র জানিয়েছে, সংস্থাটির কর্মীরা নতুন নিয়োগের শর্তাবলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। কর্মীরা তাদের সাথে সমানভাবে আচরণ না করার অভিযোগ এনেছেন।
তারা দাবি করেছেন, জ্যেষ্ঠ পদের জন্য সাক্ষাৎকার ঠিকমতো দেয়া সত্ত্বেও কিছু কর্মী নিম্নপদের চাকরির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ক্রু সদস্যরা তাদের ক্ষতিপূরণ প্যাকেজেও কিছু পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়েছেন। এয়ারলাইনটি এআইএক্স কানেক্ট (পূর্বে এয়ারএশিয়া ইন্ডিয়া) এর সাথে একীভূত হওয়ার মধ্যবর্তী সময়ে এ উন্নয়নগুলো ঘটছে৷
এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস সংকট টাটা গ্রুপের জন্য নতুন সমস্যা কারণ পূর্ণ-পরিষেবা ক্যারিয়ার ভিস্তারার পাইলটরা গতমাসে রোস্টারিং এবং তাদের বেতন প্যাকেজ পরিবর্তনসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল।
এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একজন মুখপাত্র গতকাল বলেছেন, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ক্রুদের সাথে আলাপ করে গণছুটির কারণ জানার চেষ্টা করছে এবং যাত্রীদের ভোগান্তি কমানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ আজ (৯ মে) কেবিন ক্রু সদস্যদের নিয়ে একটি বড় সভা করার পরিকল্পনা করেছে।
৩০ জন ক্রুকে বরখাস্ত করা চিঠিতে বলা হয়েছে, "কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই গণছুটি নেওয়ার সিদ্ধান্ত পূর্ব-নির্ধারিত এবং এটি সমন্বিতভাবে কাজ করা বিরত থাকার দিকে স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে। এর কারণে প্রচুর সংখ্যক ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছিল যার ফলে পুরো সময়সূচি ব্যাহত হয়েছে, যা কোম্পানির সম্মানিত যাত্রীদের জন্য প্রচণ্ড অসুবিধার কারণ হয়েছিল। আপনার কাজটি কেবল জনস্বার্থের জন্যই ক্ষতিকর নয় বরং বিব্রতকর ও কোম্পানির জন্য গুরুতর আর্থিক ক্ষতির কারণ।"
এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন থেকে অব্যবস্থাপনা এবং অসম আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে। নয়াদিল্লির আঞ্চলিক শ্রম কমিশনার অশোক পেরুমল্লা সংস্থাটির বিরুদ্ধে শ্রম আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন করার অভিযোগ এনেছেন।
অশোক পেরুমল্লা মনে করেন, কর্মীদের সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য এবং চলমান সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য শ্রম কমিশনারের দেয়া পরামর্শগুলো মেনে চলা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের জন্য জরুরি।
কর্মীদের অভিযোগের সমাধান করার জন্য ও এইচআর বিভাগের কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য একটি উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি গঠন করা এবং সমস্ত কর্মীদের সাথে ন্যায্য আচরণ নিশ্চিত করার জন্য একটি গঠনমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অশোক পেরুমল্লা।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়