ভিয়েতনামে ফের সংক্রমণ, পর্যটন শহরে সর্বোচ্চ সতর্কতা
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/07/16/vietnam_3.jpg)
ভিয়েতনামের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র দানাংয়ে এপ্রিলের পর স্থানীয়ভাবে এই প্রথম নতুন করে চারজন কোভিড-১৯ রোগী পাওয়া গেছে। এরপরই শহরটিতে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই দেশটি নতুন করে সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।
সোমবার ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যম বিবিসি তাদের এক খবরে এসব তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, কোনো পর্যটক আগামী ১৪ দিনের জন্য দানাংয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ৩০ জনের বেশি লোক কোথাও জমায়েত হতে পারবে না। অপ্রয়োজনীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না। আর ৮০ হাজারেরও বেশি পর্যটককে নিজ নিজ শহরে ফেরানোর জন্য অতিরিক্ত ফ্লাইটও চালু করেছে দেশটি। তারা দেশে ফিরে কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটি করোনা ভাইরাস পরীক্ষা এবং কেন্দ্রীয় কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তাদের করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। এপ্রিলের পর তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ভিয়েতনাম স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনা ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
দেশটির মহামারি নিয়ন্ত্রণে সাফল্য বিশ্বব্যাপী আলাদা করে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। সব মিলিয়ে ৪১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/05/15/vietnam2.jpg)
বিবিসি জানিয়েছে, ভিয়েতনাম যখন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, ঠিক তখনই দেশটিতে স্থানীয়ভাবে ফের নতুন করে করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটল।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ফ্লাইটের ওপর দেশটির নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল থাকলেও বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও দক্ষ কর্মীরা মহামারীর পুরোটা সময়জুড়েই ভিয়েতনামে প্রবেশ করতে পেরেছেন, কিন্তু দেশটিতে প্রবেশ করার পর তাদের বাধ্যতামূলকভাবে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়েছে।
ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নুগেইন জুয়ান ফুচ সোমবার বলেন, দানাংয়ের বাসিন্দাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের প্রয়োজনীয় সেবা বন্ধ করা হয়েছে। তবে এখনই শহরটি পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করা হবে না।
এদিকে নতুন সংক্রমণের প্রথম রোগীর (কেস-৪১৬) বয়স ৫৭ বছর। যিনি 'ফ্লু'র কিছু লক্ষণ নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি এখন ভেন্টিলেশনে আছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে এ বিষয়ে জানিয়েছে, তার অবস্থা গুরুতর।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি কোথা থেকে সংক্রমিত হয়েছেন, তা জানা যায়নি। আর তিনি সম্প্রতি এই শহর ছেড়ে কোথাও যাননি।
এরপর ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ৫০ ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা হয়। ওই লোকের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা ১০০ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়, তবে সব পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/05/15/vietnam.jpg)
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে হাসপাতালগুলোতে নতুন এই সংকট মোকাবেলার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাজধানী হ্যানয়ের কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের ফের জনসম্মুখে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে। সেই সঙ্গে রবিবার যে ঘরোয়া ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল তাও স্থগিত করা হয়েছে।
নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর-ভিয়েতনামের জন্য এই সময়ে এসে বড় একটি ধাক্কা বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই খবরে। কারণ করোনা ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে সফলতার জন্য বেশ প্রশংসা পাচ্ছিল দেশটি।
দেশটিতে প্রথম যখন করোনায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়, ঠিক তখনই দেশটি পর্যটকদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশের সরকার। যদিও সেই দেশের কোনো নাগরিক দেশে প্রবেশ করলে ১৪ দিনের কোয়ারিন্টেনে থাকতে হত। এরপর করোনা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে তাকে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে হত।
দেশটির 'সর্বাধিক বিখ্যাত রোগী' একজন ব্রিটিশ ব্যক্তি, যিনি ভেন্টিলেটরে ৬৮ দিন অতিবাহিত করেছিলেন। আর তিনি এই মাসের শুরুর দিকে সুস্থ হয়ে তিনি বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন।