কাজাখস্তানের সমভূমিতে প্রায় ২০০ বছর পর ফিরল বুনো ঘোড়া!
প্রায় ২০০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কাজাখস্তানের বিস্তীর্ণ সমভূমিতে দেখা মিলবে বুনো শাভালস্কির ঘোড়ার। বন্য ঘোড়ার সর্বশেষ এই প্রজাতিটিকে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অঞ্চলটিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। খবর বিবিসির।
মূলত প্রাগ চিড়িয়াখানা থেকে জুনের শুরুতে মধ্য এশিয়ার দেশটিতে সাতটি প্রজেওয়ালস্কির ঘোড়া পাঠানো হয়। গবেষকরা বিবিসিকে জানান, ঘোড়াগুলি বেশ ভালো আছে। এগুলো সমতল ভূমিতে ঘোরাঘুরি করছে এবং একে অপরের সাথে মিলিত হচ্ছে।
প্রাগ চিড়িয়াখানার মুখপাত্র ফিলিপ মাশেক বলেন, "এটি একটি বিপন্ন প্রজাতি; যা পূর্বপুরুষের দেশে ফিরিয়ে আনা হলো। প্রজাতিটি ১৯৬০-এর দশকে বনাঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। শেষবার এদেরকে মঙ্গোলিয়ায় দেখা গিয়েছিল...তাই এটি একটি দুর্দান্ত ঘটনা।"
সাম্প্রতিক দশকগুলিতে শাভালস্কির ঘোড়াগুলি ধীরে ধীরে মঙ্গোলিয়া ও চীনের বনাঞ্চলে ছাড়া হয়েছে। তবে কয়েকশত বছরের পর কাজাখস্তানে প্রাণীটিকে ফিরিয়ে আনার ঘটনা এবারই প্রথম।
গবেষকরা সেন্ট্রাল ইউরোপের বনভূমি থেকে ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় প্রজাতিটির কিছু ঘোড়া নিয়ে যায়। যেখানে চিড়িয়াখানায় তাদের বংশবৃদ্ধি করা হয়।
এক্ষেত্রে ১৮৭৯ সালে যখন প্রজেওয়ালস্কি ঘোড়ার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়, তখন ঘোড়াগুলি শুধু পশ্চিম মঙ্গোলিয়ার একটি ছোট অংশে পাওয়া যেত। মানুষ ও গবাদিপশুর সাথে প্রতিযোগিতা এবং পরিবেশ পরিবর্তনের সাথে সাথে মানিয়ে নিতে না পেরে প্রাণীটি প্রায় বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় ছিল।
এক্ষেত্রে হুমকি বিবেচনায় প্রাণীটির অস্তিত্ব রক্ষায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তখন প্রাগ চিড়িয়াখানা প্রাণীটির বংশবৃদ্ধির দায়িত্ব নেয়।
এক্ষেত্রে চলতি মাসের শুরুতে কাজাখস্তানে প্রথম চালানে মোট সাতটি ঘোড়া পাঠানো হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে কমপক্ষে আরও ৪০টি ঘোড়া দেশটিতে পাঠানোর লক্ষ্য রয়েছে।
এই সম্পর্কে চিড়িয়াখানাটির ডিরেক্টর মিরোস্লাভ বোবেক বলেন, "ঘোড়াগুলো কাজাখস্তানে নিয়ে আসার ঘটনা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা যে সাতটি ঘোড়া পাঠিয়েছি তা শত শত বছরের মধ্যে প্রথম।"
শাভালস্কির ঘোড়া আধুনিক গৃহপালিত ঘোড়াগুলির তুলনায় আকারে খাটো। প্রাগ চিড়িয়াখানা গত দেড় দশক ধরে মধ্য এশিয়ায় (প্রধানত মঙ্গোলিয়ায়) ঘোড়াগুলিকে ফিরিয়ে আনতে কাজ করেছে। এক্ষেত্রে ২০২২ সালে কাজাখস্তানের স্থানীয় সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করার পর তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান