১৭ বছরের অপেক্ষা ঘুচবে ভারতের নাকি প্রোটিয়াদের চোকার তকমার অবসান?
প্রায় এক মাসের ক্রিকেট যজ্ঞ শেষ হতে যাচ্ছে আজ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। বার্বাডোজে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টা ৩০ মিনিটে।
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা দুই দলই ফাইনালে উঠেছে অপরাজিত থেকে। আট ম্যাচ খেলে সবগুলো জিতেছে প্রোটিয়ারা, অন্যদিকে ভারতের আট ম্যাচের একটি পরিত্যক্ত হয়েছে, বাকি সাতটি জিতেছে রোহিত শর্মার দল। এটি দক্ষিণ আফ্রিকার যেকোনো বিশ্বকাপেই প্রথম ফাইনাল। আর ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ১০ বছর পর।
২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সংস্করণ জিতেছিল ভারত। এরপর ২০১৪ সালে আরেকবারই খেলেছে ফাইনাল। আজ ১৭ বছরের শিরোপা খরা ঘোচানোর সুযোগ রোহিত-কোহলিদের সামনে। এই দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মাই কেবল ছিলেন ২০০৭ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সেই দলে৷ এবারও দুর্দান্ত ফর্মে আছেন এই ডানহাতি ওপেনার। রোহিতের ফর্মে থাকা ভারতের জন্য যেমন সুখবর, তেমনি খারাপ খবর কোহলির বাজে ফর্ম।
রান খরায় ভুগছেন বিরাট কোহলি, নিজের প্রায় ১৬ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এই কথাটা খুব বেশি শুনতে হয়নি ভারতের তারকা ব্যাটসম্যানকে। ২০২৩ বিশ্বকাপেই রেকর্ড গড়ে হয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সেরা রান সংগ্রাহক হওয়া কোহলি যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন এবারের আসরে।
কোহলি ফর্মে না থাকার পরও ভারত উঠে গেছে ফাইনালে। দলের আরেক ওপেনার ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা টেনে নিচ্ছেন ভারতকে। কিন্তু ফাইনাল জিততে হলে কোহলিরও জ্বলে ওঠা জরুরি। এবারের বিশ্বকাপে একটি বিব্রতকর রেকর্ড গড়েছেন ভারতের তারকা ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক আসরে কমপক্ষে পাঁচ ইনিংস ব্যাট করা ওপেনারদের মধ্যে কোহলির গড়ই সবচেয়ে কম। ১০.৭ গড়ে ৭৫ রান করেছেন কোহলি। ছাড়িয়ে গেছেন এই বিশ্বকাপেই বাংলাদেশের তানজিদ হাসান তামিমের ১০.৮ গড়কে।
তবে বোলিং ইউনিটে ভারত অদম্য। দুই পেসার জস্প্রিত বুমরাহ আর আর্শদীপ সিং তো আছেনই, সঙ্গে দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব ও অক্ষর প্যাটেল মিলে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন প্রতিপক্ষের ওপর। জ্বলে উঠতে পারেন হার্দিক পান্ডিয়া কিংবা রিশভ পন্তদের কেউও। সবমিলিয়ে ভারতের দিকে জয়ের পাল্লা ভারী বেশি।
অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার এটি প্রথম ফাইনাল। চোকার তকমা ঝেড়ে ফেলার মোক্ষম সুযোগ এটি। সেটি পারতে হলে তাদেরকে খেলতে হবে দুর্দান্ত। এবারের বিশ্বকাপে আট ম্যাচের সবকটিই জিতলেও অনেক ম্যাচই ভাগ্যের জোরে প্রোটিয়াদের পক্ষে গেছে। ফাইনালে যেটি নাও হতে পারে৷ তাই ব্যাটিং-বোলিং এবং ফিল্ডিংয়েও নিখুঁত থাকতে হবে এইডেন মার্করামের দলকে৷
দক্ষিণ আফ্রিকা শিরোপা জিততে মরিয়া নিজেদের সাবেক কিংবদন্তিদের জন্যও। আফগানদের হারিয়ে ফাইনালে পা রাখার পর দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এইডেন মার্করাম তো বলেই দিয়েছেন, হানসি ক্রনিয়ে, শন পোলক, ল্যান্স ক্লুজনার, এবি ডি ভিলিয়ার্স—যারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিশ্বকাপ জেতাতে পারেননি, তাদের জন্যই জিততে চান শিরোপা। মার্করামের ভাষায়, 'তারা এই খেলার কিংবদন্তি। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের কিংবদন্তি। আমার দৃষ্টিতে, তারা ফাইনাল খেললেন কি খেললেন না, তা বড় বিবেচ্য নয়। কারণ, তারাই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলতে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন।'
১৭ বছর পর আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা উদযাপন করবে ভারত নাকি প্রথমবার কোনো বিশ্বকাপ জিতে নিজেদের দায় মোচন করবে দক্ষিণ আফ্রিকা? আজ বার্বাডোজেই জানা যাবে সব প্রশ্নের উত্তর।