যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে যেসব বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকের ওপর নজর থাকবে
আজ (৪ জুলাই) শুরু হওয়া যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ও বিরোধী লেবার পার্টির মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও বিভিন্ন জরিপের পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি রেকর্ড ব্যবধানে জয় পেতে যাচ্ছে।
চলমান নির্বাচনে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী যেমন অংশ নিয়েছেন, তেমনি নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অন্তত ৩৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের কেউ কেউ ভিন্ন রাজনৈতিক দলের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, আবার কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
লেবার পার্টির অধীনে নতুন করে মনোনয়ন পেয়েছেন চার সাবেক এমপি
লেবার পার্টির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চারজন প্রার্থী ইতোমধ্যেই সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তাদের আবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন: বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি নির্বাচনী এলাকা থেকে রুশনারা আলী, ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাক্টন থেকে রুপা হক, হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন থেকে টিউলিপ সিদ্দিক এবং পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস নির্বাচনী এলাকা থেকে আফসানা বেগম।
লেবার পার্টির আধিপত্য
নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আট প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে।
নতুন মনোনীত চার লেবার প্রার্থীরা হলেন: উইথাম থেকে রুমি চৌধুরী, সাউথ নর্থহ্যাম্পটনশায়ার থেকে রুফিয়া আশরাফ, গর্ডন অ্যান্ড বুকান থেকে নুরুল হক আলী এবং ব্রিগ অ্যান্ড ইমিংহাম থেকে নাজমুল হোসেন।
ব্রিটেনের ওয়ার্কার্স পার্টি
ব্রিটেনের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিনিধিত্ব করছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ছয় প্রার্থী। তারা হলেন: ইলফোর্ড সাউথের গোলাম টিপু, বেডফোর্ডেr প্রিন্স সাদিক চৌধুরী, হ্যাকনি সাউথের মোহাম্মদ শাহেদ হোসেন, আলট্রিনচাম অ্যান্ড সেলের ফয়সাল কবির, ম্যানচেস্টার রুশোলমের মোহাম্মদ বিলাল এবং স্ট্রাটফোর্ড অ্যান্ড বো-এর হালিমা খান।
কনজারভেটিভ পার্টির প্রতিনিধিত্ব
ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই প্রার্থীকে মনোয়ন দিয়েছে। আতিক রহমান উত্তর লন্ডনের টটেনহ্যাম থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং সৈয়দ সাইদুজ্জামান ইলফোর্ড সাউথ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অন্যান্য দল
রিফর্ম পার্টি ইলফোর্ড সাউথ থেকে রাজ ফরহাদকে মনোনীত করেছে। আর লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো-থেকে রাবিনা খানকে মনোনীত করেছে।
নাজ আনিস মিয়া ডানফার্মলাইন অ্যান্ড ডলার থেকে স্কটিশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গ্রিন পার্টিতে তিনজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী রয়েছেন: সাঈদ সিদ্দিকী ইলফোর্ড দক্ষিণ থেকে, সাঈদ শামসুজ্জামান শামস ওল্ডহ্যাম ওয়েস্ট অ্যান্ড রয়টন থেকে এবং শারমিন রহমান লেস্টার সাউথ (দক্ষিণ) থেকে।
সোশ্যালিস্ট পার্টির মমতাজ খানম ফোকস্টোন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এগারোজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ওয়াইস ইসলাম হলবর্ন এবং সেন্ট প্যানক্রাস থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর আজমল মাসরুর, সুমন আহমেদ এবং স্যাম উদ্দিন বেথনাল গ্রিন এবং স্টেপনি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এহতেশামুল হক পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস থেকে, ওমর ফারুক ও নিজাম আলী স্ট্র্যাটফোর্ড অ্যান্ড বো থেকে, নূরজাহান বেগম ইলফোর্ড সাউথ থেকে, হাবিব রহমান নিউক্যাসল সেন্ট্রাল ওয়েস্ট থেকে, আবুল কালাম আজাদ বেক্সহিল অ্যান্ড ব্যাটে থেকে এবং রাজা মিয়া ওল্ডহাম ওয়েস্ট, চ্যাডারটনে অ্যান্ড রায়টন থেকে।
এ বছরের যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে হাউস অফ কমন্সের ৬৫০টি আসনের জন্য ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিটি আসনে কমপক্ষে পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে একটি একক আসনের জন্য ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৩১৭টি আসনে ৪৫৯ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং ৩৫টি দল মাত্র একজন প্রার্থীকে মনোয়ন দিয়েছে।