রাজনৈতিক স্বার্থ থাকা উৎস থেকে আর্থিক সহযোগিতা নেবেন না: কোটা আন্দোলন সমন্বয়কদের ১০ নির্দেশনা
কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে ক্রাউডফান্ডিংয়ের পরামর্শ দিয়েছেন আন্দোলনের সমন্বয়কেরা। তবে রাজনৈতিক স্বার্থ আছে, এমন কারও কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা না নিতে বলা হয়েছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'-এর অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে আন্দোলন নিয়ে ১০টি নির্দেশনা দেন।
'সরাসরি ক্রাউডফান্ডিং করুন, কোনো অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করবেন না। অর্থের নিয়মিত হিসেব রাখুন এবং সমন্বয়ক দলের কাছে হিসেব ক্লিয়ার রাখুন। কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ নেবেন না। কারও কাছ থেকে বেশি অঙ্কের টাকা নেবেন না,' ফেসবুক পোস্টে লেখেন তিনি।
আন্দোলন সবসময় শান্তিপূর্ণ ও অহিংস হবে উল্লেখ করে আন্দোলনে কোনো পক্ষ অনুপ্রবেশ করে যাতে স্যাবোটেজ [নাশকতা] করতে না পারে, এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
'যেভাবে আন্দোলন পরিচালনা করবেন' শীর্ষক ওই পোস্টে নাহিদ বলেন, 'আন্দোলনের স্বার্থে বিতর্কিত বা রাজনৈতিকভাবে প্রশ্ন উঠতে পারে, এমন কাউকে নেতৃত্ব পর্যায়ে রাখবেন না।'
আন্দোলনের নেতৃত্বদানের জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, জেলা ও মহানগর পর্যায়ে আলাদা করে সমন্বয়ক কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া আন্দোলনকে একক বা মূল নেতৃত্বের ওপর নির্ভরশীল না রেখে সবসময় বিকল্প নেতৃত্ব প্রস্তুত রাখতে বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলামের দেওয়া অন্যান্য নির্দেশনাগুলো হলো:
- অভ্যন্তরীণভাবে সংগঠিত থাকুন, কিন্তু আন্দোলনকে কোনো সাংগঠনিক রূপ দেবেন না। কমিটি শুধু শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য।
- যে স্থানে কর্মসূচি করবেন, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যোগাযোগ করতে চাইলে তাদের সঙ্গে কোঅপারেট [সহযোগিতা] করুন। কিন্তু সব সিদ্ধান্ত আপনারাই নেবেন; কোনো ধরনের আপস করা যাবে না।
- কারও ওপর কোনো আঘাত বা হুমকি এলে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করুন। ভয় পাবেন না, পিছিয়ে যাবেন না। এখানে গোপনীয়তার কিছু নেই। আমাদের দাবি ও বক্তব্য সুস্পষ্ট ও যৌক্তিক।
- বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনকে আন্দোলনে যুক্ত করুন। কর্মসূচিতে সাংস্কৃতিক আয়োজন রাখুন। জেলা ও মহানগরের নাগরিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
- কর্মসূচির আগে মাইকিং ও লিফলেটের মাধ্যমে ব্যাপক গণসংযোগ করুন। [বিশ্ববিদ্যালয়ের] হলের রুমে রুমে, লাইব্রেরিতে প্রচার করুন।
- গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখুন। মিডিয়ার সামনে বুঝে-শুনে কথা বলুন, যাতে মূল বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ থাকে। প্রোগ্রামে ও মিডিয়ায় আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এ রকম বক্তব্য বা স্লোগান দেবেন না।
- ঢাকার সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মসূচি রাখার চেষ্টা করুন। 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' ব্যানার যারা ব্যবহার করবেন, তারা অবশ্যই ঢাকার সঙ্গে আলোচনা করে নেবেন।