সেন্টমার্টিনে পর্যটক সংখ্যা সীমিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি টোয়াব-এর
সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের সংখ্যা এবং অবস্থানের সময়সীমা সীমিত করার সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন (টোয়াব)। সংগঠনটি সতর্ক করে জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত পর্যটন শিল্পে বড় ধরনের ক্ষতি বয়ে আনবে।
এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা বাতিল, ট্যুর অপারেটর সেবার উপর ভ্যাট প্রত্যাহার এবং ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড আইনের বিধিমালায় উল্লিখিত জামানত বাতিল ও বিভিন্ন অসংগতি দূরীকরণের দাবি জানিয়েছেন টোয়াবের নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টোয়াব সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, "আমাদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে করে পর্যটন শিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সাধারণ উদ্যোক্তারা সর্বস্বান্ত হয়ে যাবেন।"
তিনি আরও বলেন, "সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বাস করে, যাদের সবাই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। সেন্টমার্টিনে পর্যটন বন্ধ হলে তারা সবাই বেকার হয়ে যাবেন।"
রাফেউজ্জামান উল্লেখ করেন, "পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞার কারণেও পর্যটন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং উদ্যোক্তাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।"
সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের পক্ষ থেকে সেন্টমার্টিনে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করে রাত্রি যাপনসহ যাবতীয় বিধি-নিষেধ ব্যতিরেকে পর্যটন চালু রাখা এবং টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে বিকল্প পথ তৈরি করার দাবি জানানো হয়।
সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান জানান, ট্যুর অপারেটরদের নিবন্ধনের নতুন গেজেটে যে নিয়মগুলো চালু করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ট্যুর অপারেটর ও গাইডদের জন্য ৫০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি, ১০ লাখ টাকার ব্যাংক সার্টিফিকেট এবং ৩ লাখ টাকার ব্যাংক জামানত প্রদান করা।
তিনি বলেন, "এটি অধিকাংশ ট্যুর অপারেটরের জন্য বাস্তবসম্মত নয় এবং নতুন উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে প্রবেশ করতে নিরুৎসাহিত করবে।"
রাফেউজ্জামান আরও বলেন, "ট্যুর অপারেটর সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট তুলে দেওয়া উচিত, যাতে দেশের পর্যটন শিল্প আরও বিকশিত হতে পারে।"
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা ও বুয়েটের শিক্ষার্থী আয়াজ উদ্দিন বলেন, "আমাদের দ্বীপের শিক্ষার হার এখনও ২০ শতাংশের নিচে। দ্বীপের মানুষের জীবনযাত্রা পুরোপুরি পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল।"
তিনি আরও বলেন, বর্তমান ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং জটিল প্রক্রিয়াগুলো পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করবে।
টোয়াবের সাবেক সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশি বলেন, "দ্বীপের পরিবেশ বাঁচাতে মানুষের জীবন ধ্বংস করা গ্রহণযোগ্য নয়। আধুনিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশদূষণ বন্ধ করা সম্ভব। দ্বীপে প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। জেনারেটর বন্ধ করতে সৌরবিদ্যুতে জোর দেওয়া সম্ভব।"