সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বয়সসীমা বাড়াবে নরওয়ে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ন্যূনতম বয়সসীমা ১৩ থেকে বাড়িয়ে ১৫ বছর করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে নরওয়ে। তরুণদের ওপর অনলাইনের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগের কারণে আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার কথা জানিয়েছে দেশটি।
নরওয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরুদ্ধে প্রচারণা আরও জোরদার করেছে, যা নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইউনাস গার স্তুরে-এর মতে, "শিশুদের মস্তিষ্কের বিরুদ্ধে কাজ করছে।"
নতুন নিয়মে নেটফ্লিক্স এবং অন্যান্য স্ট্রিমিং সাবস্ক্রিপশন পরিষেবাগুলোর ওপর ১৫ বছরের কম বয়সীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
শিশুদের "অ্যালগরিদমের ক্ষমতা" থেকে রক্ষা করা এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী।
নরওয়েতে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের জন্য সর্বনিম্ন বয়সসীমা ১৩ বছর। তবে এই নিয়ম সত্ত্বেও, দেশটির ৯ বছর বয়সী অর্ধেকেরও বেশি শিশু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বলে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ভিজিকে স্তরে বলেন, "এটি একটি শক্তিশালী বার্তা দেয়। শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষতিকর কনটেন্ট থেকে সুরক্ষা দিতে হবে। আমরা জানি এটি একটি কঠিন লড়াই কারণ এখানে শক্তিশালী প্রভাব কাজ করছে। কিন্তু এখানেই রাজনীতির প্রয়োজন।"
এই উদ্যোগে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন সংশোধন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোরর জন্য একটি বয়স যাচাইকরণ ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে নরওয়ের, যার উদ্দেশ্য শিশুদের অনলাইনে ক্ষতিকর কনটেন্ট থেকে সুরক্ষিত রাখা।
স্তরে বলেন,"এটি শিশুদের মনোযোগ একমুখী ও স্থবির করতে পারে কারণ পর্দায় সবকিছু খুব দ্রুত ঘটে।"
নরওয়ের পরিবার বিষয়ক মন্ত্রী শিয়ার্স্টি তুপ্পে বলেন, এই পদক্ষেপটি মূলত বাবা-মায়েদের সহায়তা করতেই নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, "প্রযুক্তি জায়ান্টদের সাথে যুদ্ধে বাবা-মায়েরা একা দাঁড়াতে পারেন না। সে কারণেই আমরা কঠোর আইন প্রণয়নের কথা ভাবছি। এর মাধ্যমে বাবা-মায়েদের আত্মবিশ্বাসের সাথে 'না' বলার ক্ষমতা দেওয়া হবে। অনেক বাবা-মা এটা চান, কিন্তু পারেন না।"
ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া সহ বিভিন্ন দেশ স্ক্রিন আসক্তি কমানো ও শিশুদের জন্য অনুপযুক্ত কনটেন্টে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার জন্য নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার মধ্যেই নতুন করে নরওয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বয়সসীমা বাড়ালো।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ফ্রান্সের ২০০টি স্কুলে "ডিজিটাল বিরতি" ব্যবস্থা চালু শুরু হয়েছে, যেখানে ১৫ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের স্কুল চলাকালীন স্মার্টফোন ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে।
রাশিয়াতেও সেপ্টেম্বর মাসে এ সংক্রান্ত নিয়ম চালু হয়েছে। রুশ শিক্ষার্থীদের স্কুলে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে, স্বাস্থ্য বা জীবনের ঝুঁকির মতো জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে।