টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা এখন চীনের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি
বিশ্বব্যাপী অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকের মূল মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ঝ্যাং ইমিং এখন চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। খবর বিবিসি'র।
৪১ বছর বয়সী ঝ্যাং ২০২১ সালে কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর পদ ছেড়ে দিলেও এখনও প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২০ শতাংশ মালিকানা তার হাতে রয়েছে। হুরুন রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রকাশিত শীর্ষ ধনীর তালিকা অনুসারে, তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৪৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি।
চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে একাধিক দেশে টিকটক ব্যবহারে বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। যদিও টিকটক এবং এর মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স দাবি করে যে তারা চীনা সরকারের প্রভাবমুক্ত, তবু যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে কোম্পানিটির মালিকানা পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটি কার্যকর না হলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের চাপে থাকা সত্ত্বেও গত বছরে বাইটড্যান্সের বৈশ্বিক মুনাফা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ঝ্যাং-এর সম্পদ বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে।
হুরুন প্রধান রুপার্ট হুগওয়ারফ বলেন, "২৬ বছরে চীনের ১৮তম নতুন শীর্ষ ধনী হলেন ঝ্যাং ইমিং। তুলনামূলকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট, জেফ বেজোস এবং ইলন মাস্কসহ মাত্র চারজন শীর্ষ ধনী রয়েছেন।"
ধনীদের তালিকায় ঝ্যাং ইমিং ও পোনি মা
চীনের প্রযুক্তি খাতের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় শুধু ঝ্যাং ইমিং নন; রয়েছেন টেনসেন্টের প্রধান পোনি মা-ও, যার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন পাউন্ড। তবে এই ধনকুবেরদের সম্পদ বৃদ্ধির কারণ কেবল তাদের কোম্পানির সাফল্যের জন্য নয়; চীনের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তালিকার অধিকাংশেরই গত বছরে সম্পদ কমেছে।
হুরুনের তথ্যমতে, তালিকায় থাকা প্রায় ৭০ শতাংশ ধনীদের সম্পদ গত বছর হ্রাস পেয়েছে, যেখানে সম্পদ বেড়েছে মাত্র ৩০ শতাংশের।
ঝ্যাং ইমিং কীভাবে শীর্ষ ধনীদের মধ্যে জায়গা পেলেন?
হুরুনের প্রধান রুপার্ট হুগওয়ারফের মতে, চীনের অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের সঙ্কটে এ নিয়ে তৃতীয় বছর টানা ধনী তালিকা সংকুচিত হয়েছে। গত বছরে তালিকার মোট ব্যক্তি সংখ্যা ১২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১১০০ জনে, যা ২০২১ সালের সর্বোচ্চ সংখ্যার তুলনায় ২৫ শতাংশ কম।
তথ্য অনুযায়ী, শাওমির মতো স্মার্টফোন নির্মাতাদের জন্য এটি একটি ভালো বছর ছিল, কিন্তু গ্রিন ফুয়েলের (পরিবেশবান্ধব জ্বালানি) বাজারে বেশ চ্যালেঞ্জ দেখা গেছে। সোলার প্যানেল, লিথিয়াম ব্যাটারি এবং ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতারা তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছেন, ফলে মজুদ বেড়ে গেছে এবং শুল্ক-চাপে বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
২০২১ সালের তুলনায় সোলার প্যানেল নির্মাতাদের সম্পদ ৮০ শতাংশ কমে গেছে, ব্যাটারি নির্মাতাদের সম্পদ প্রায় অর্ধেকে এবং ইভি বা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতাদের সম্পদ প্রায় এক-চতুর্থাংশ কমে গেছে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন