হাসিনা ও তার দোসরদের যারা পুনর্বাসনের কথা বলেন, তারাও হাসিনার মতো ক্ষমতালোভী: সারজিস
হাসিনা ও তার দোসরদের যারা পুনর্বাসনের কথা বলেন, তারাও হাসিনার মতো ক্ষমতালোভী বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারগুলোর মধ্যে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সারজিস বলেন, 'খুনি হাসিনা সারা জীবন শুধু নিজের পরিবারের গান গাইতে গাইতে ক্ষমতাটাকে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে রেখেছিলেন। যেখানে গেছেন, সেখানেই তাঁর পরিবার নিয়ে কান্নাকাটি করেছেন। তাঁর পরিবারের ১৮ জন মানুষ, আর এই দুই হাজার জন মানুষ না! এঁদেরকে খুন করার সময় তাঁর বুকটা একটু কাঁপেনি। আজ আমার যে ভাই শহীদ হয়েছে, যে বোন শহীদ হয়েছে, সেই শহীদ পরিবারের মা–বাবা, ভাই–বোনকে আমরা কীভাবে সান্ত্বনা দেব?'
তিনি বলেন, 'খুনি হাসিনা সারাজীবন ১৯৭৫ সালের গল্প বলে ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করার চেষ্টা করেছেন। এখন তিনি দুই হাজার মানুষকে কীভাবে খুন করলেন? তিনি যদি দরদ বোঝেন, তাহলে এ খুনগুলো কীভাবে করতে পারলেন? যে রাজনৈতিক প্লাটফর্মকে সামনে রেখে তারা এ কাজগুলো করেছে, তাদের কোনো অধিকারই নেই এই বাংলাদেশে চলার।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় এই সমন্বয়ক আরও বলেন, 'এসবের জবাব খুনি হাসিনাকে দিতে হবে, খুনি হাসিনার দোসরদের জবাব দিতে হবে। আর এই বিষয়গুলো সমাধান না হওয়া পর্যন্ত, বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই বাংলাদেশে তাদের পুনর্বাসনের কথা যারা বলে, আমরা মনে করি খুনি হাসিনার মতো তারাও আরেক ধরনের ক্ষমতালোভী।
সারজিস বলেন, 'খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের পুনর্বাসনের প্রশ্নই আসে না। আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও আমরা এটা করতে দেব না।'
অনুষ্ঠানে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বরিশাল বিভাগের ৭৯ শহীদ পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সারজিস বলেন, 'জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে "শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ" কর্মসূচির আওতায় প্রাথমিকভাবে আমরা পাঁচ লাখ টাকা করে চেক দিচ্ছি। এটা মাত্র শুরু, কেউ যেন মনে না করে এটাই শেষ। তাদের যত দিন যা কিছু প্রয়োজন, সেই যৌক্তিক চাহিদা পূরণের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। সেটা শুধু আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে নয়, সেটা শহীদ পরিবারের একজনকে চাকরি দিয়ে হোক, তাদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে হোক কিংবা সম্মানীর ব্যবস্থা করে হোক।'
তিনি বলেন, 'এর আগে তিনটি বিভাগে এই অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ বিভাগ হিসেবে আজ আমরা বরিশালে এসেছি। এই সহায়তা নিছক অর্থ নয়, এটা শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন। আমাদের প্রত্যেক শহীদ পরিবারের বাড়িতে যাওয়া উচিত। তবে সেটা করতে অনেক সময় প্রয়োজন হওয়ায় আপাতত বিভাগীয় পর্যায়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা তাদের কাছে যাব, তাদের পাশে থাকব।'