ছুটি কাটাতে ইরাকে যাচ্ছেন পশ্চিমা পর্যটকরা
টমি ড্রিসকিল নামের হাওয়াইয়ের একজন ইউটিউবার ভ্রমণপিপাসু হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি তিনি বাগদাদ ভ্রমণ করেছিলেন। এটিকে তিনি বেশ অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
চলতি বছরের ইরাক ভ্রমণ শেষে টমি সিএনএন ট্র্যাভেলকে বলেন, "জায়গাটি বেশ শান্তিপূর্ণ। তবে রাস্তায় গুলিতে বিদীর্ণ কিছু ভবনও দেখতে পেয়েছি। যা পূর্বের যুদ্ধ পরিস্থিতির অন্ধকার সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। যখন কি-না রাস্তার ধারে পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকাও সম্ভব হতো না।"
যদিও বর্তমানে একদিকে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে অপরদিকে টমির মতো বহু পশ্চিমা পর্যটক সম্প্রতি ইরাক ভ্রমণের দিকে ঝুঁকছেন।
ব্যাবিলনের প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ, মেসোপটেমিয়া সভ্যতার অস্তিত্ব ও কুর্দিস্তানের পাহাড়সহ প্রচুর দর্শনীয় স্থান ইরাকে রয়েছে। এজন্য দেশটিকে অনেকেই 'সভ্যতার দোলনা' বলে। এখানেই প্রাচীন সুমেরীয়রা চাকা তৈরি করেছিল। কিংবা বিশ্বের প্রথম লেখার উপকরণের সৃষ্টি ইরাক থেকেই। এখানে ৫,৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে থাকা শহরও আবিষ্কৃত হয়েছে।
যদিও নিরাপত্তাজনিত কারন দেখিয়ে বহু দেশ ইরাক ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়ে থাকে। একইসাথে মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে উদ্বিগ্ন কিছু ভ্রমণকারীদেরও দেশটিতে ভ্রমণে আপত্তি রয়েছে। কেননা ইরাকের সরকার চলতি বছরে সমকামিতা সম্পর্কে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। একইসাথে বিতর্কিত এক সংশোধনীর খসড়া তৈরি করেছে যাতে বাল্যবিবাহের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
যেসব দেশ ইরাক ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়ে থাকে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইরাককে 'লেভেল ৪' অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যাতে কি-না সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, সশস্ত্র সংঘাত কিংবা অস্থিরতার হুমকির মতো উদ্বেগের কথা বলে দেশটিতে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস ইরাকের উত্তরে আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চল ব্যতীত অন্য সমস্ত অঞ্চলে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়ে থাকে। কুর্দিস্তানে স্বতন্ত্র সংস্কৃতি ও ভাষা রয়েছে; যা ২০০৫ সাল থেকে স্বাধীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ ও দখলের প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে ভ্রমণ না করার পরামর্শ প্রদানে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। দেশটিতে সাদ্দাম হোসেনের রেজিমের পতন করতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ব্যাপকহারে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এদিকে ২০১৪ সালে আইএসআইএস এর উত্থান ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের ওপর বর্বরতা চালানোর অভিযোগ রয়েছে; যাকে গতবছর যুক্তরাজ্য গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে।
টমি ছোটবেলায় ইরাক যুদ্ধে সংবাদ দেখেছেন। তবে দেশটি ভ্রমণ না করার পরামর্শ থাকলেও তিনি কৌতূহলের জায়গা থেকে দেশটি ভ্রমণ করেছেন। সেখানে মোট ১২ দিন টমি থেকেছেন; ট্যুর অপারেটরের সাহায্য বিভিন্ন জায়গা ঘুরেছেন।
টমি বলেন, "আমার ভ্রমণ তালিকায় বহু বছর ধরে ইরাক ছিল। আমি সবসময় অপ্রীতিকর স্থানগুলির প্রতি আকৃষ্ট হই। বিশেষ করে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট যেসব জায়গায় নাগরিকদের ভ্রমণের বিরুদ্ধে পরামর্শ দিয়ে থাকে। রাজনৈতিক বিষয়গুলো বাদ দিলে আমি ক্রমাগত আমাদের সকলের মধ্যে একটি সাধারণ মানবতাবোধ খুঁজে পেয়েছি। আমি মনে মনে ধরে নিয়েছিলাম ইরাক সম্ভবত একই হবে।"
২০১৭ সালে আইএসআইএস এর পতনের পর ইরাকে কিছুটা হলেও স্থিতিশীলতা এসেছে। যদিও এখনো গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে নানান সময়ে বিমান হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। একইসাথে ইরাকি বাহিনী সাথে মিলে যৌথ অভিযানের মাধ্যমে গোষ্ঠীটিকে নির্মূলের চেষ্টা করা হচ্ছে।
২০২১ সাল থেকে ইরাক সরকার ৩০টি দেশের নাগরিকদের জন্য বাগদাদ বিমানবন্দরে পৌঁছে সরাসরি ভিসা প্রাপ্তির সুবিধা চালু করে। যার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এরপর থেকেই দেশটির পর্যটন খাত চাঙ্গা হতে শুরু করে।
কুর্দিস্তান ক্রনিকলের রিপোর্ট অনুযায়ী, কুদিস্তান রিজিওনাল গভর্মেন্ট ট্যুরিজম বোর্ড ২০৩০ সালের মধ্যে ২ কোটি পর্যটক আকৃষ্ট করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এক্ষেত্রে গতবছর পর্যটকদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশই ছিল বিদেশি।
বাড়ছে ভ্রমণের চাহিদা
আন্তর্জাতিক ট্যুর অপারেটরগুলোর তথ্যমতে, ইরাক ভ্রমণে মানুষ ধীরে ধীরে আরও বেশি আগ্রহী হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লুপিন ট্র্যাভেল ২০১৪ সালে ইরাকের কুদিস্তানে ট্যুর চালু করে। একইসাথে ২০১৮ সালে ফেডারেল ইরাকেও তারা ভ্রমণ সুবিধা শুরু করে।
লুপিন ট্র্যাভেলসের ট্যুর ম্যানেজার রবার্ট কাইলি মলিনা বলেন, "ইরাক ভ্রমণে মানুষের আগ্রহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেতে দেখছি। বিশেষ করে ফেডারেল ইরাকে; যেখানে বাগদাদ, ব্যাবিলন ও মসুলের মতো জায়গা রয়েছে। প্রতি বছর চাহিদা দ্বিগুণ হচ্ছে। দুই বছর আগে আমরা একটি ট্রিপ শুরু করেছিলাম। এরপর গত বছর দুটি ট্রিপ এবং এই বছর চারটি ট্রিপ।"
ভ্রমণের সময় ঝুঁকির মাত্রা কমিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টিই ট্যুর অপারেটরদের জন্য সবচেয়ে বড় কাজ বলে মনে করেন মলিনা। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো ভ্রমণকৃত দেশটির স্থানীয় পর্যায়ে থাকা নানা নেটওয়ার্কের সাথে যোগাযোগ করে। এরপর যাতায়াতের সম্ভাব্য রুট ঠিক করে ট্যুর চলাকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে।
বাগদাদের বাসিন্দা আলী আল মাখজমি ২০১৬ সালে বিল উইকেন্ড প্রতিষ্ঠা করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল দেশটির ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলিতে পর্যটনকে পুনরুজ্জীবিত করা। কেননা ইরাক হাজার হাজার বছরের মানব ইতিহাসের আবাসস্থল হওয়া সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে বেশ অবহেলিত ছিল।
মাখজমি বলেন, "প্রতি বছর আগত পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। চাহিদাও বাড়ছে। কিন্তু এখানে যে ভ্রমণ করা যায় সেটা অনেকেই জানে না।"
মাখজমি মনে করেন, ইরাকে হোটেল ও পর্যটন অবকাঠামোতে অভূতপূর্ব বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে উদীয়মান এই পর্যটন শিল্পের প্রধান চ্যালেঞ্জ দেশটির নেতিবাচক ভাবমূর্তি।
গ্রুপ করে নারীদের ভ্রমণ
সার্বিক দিক বিবেচনায় শুধু নারীরা গ্রুপ করে ঘুরতে যাওয়ার জন্য ইরাক খুব একটা সুবিধাজনক জায়গা নয়। তবে আয়ারল্যান্ডের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর জ্যানেট নিওয়েনহাম অবশ্য এটিকেই সম্ভব করেছেন। ২০২১ সালে তিনি প্রথম ইরাক ভ্রমণে বেশ মুগ্ধ হন। এরপর থেকে তিনি শুধু নারীদের সাথে নিয়ে তার কোম্পানি জ্যানেটস জারনিজস এর মাধ্যমে দেশটিতে ভ্রমণ করেন।
নানা দেশ ভ্রমণে জ্যানেট নানারকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বাগদাদ তার জন্য ব্যতিক্রম। ভ্রমণের প্রথম দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগীত উৎসবে তার যোগ দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। যা তিনি বেশ উপভোগ করেন।
জ্যানেট ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে নারীদের একটি গ্রুপ নিয়ে প্রথম ইরাক ভ্রমণ করেন। এটিকে তিনি পুরোদমে একটি 'রোলার কোস্টার' ট্রিপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
জ্যানেট বলেন, "আমার কাছে মনে হয়, এটিই ছিল ইরাকে ভ্রমণে যাওয়া নারীদের প্রথম গ্রুপ। আমরা এতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলাম। শিয়া ধর্মাবলম্বীদের জন্য পবিত্র স্থান কারবালায় আমাদের হিজাব পরে যেতে হয়েছিল। একইসাথে লিপস্টিক কিংবা নেইল পলিশ ব্যবহারও নিষেধ ছিল।"
২০১৭ সাল পর্যন্ত মসুল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএস এর নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাই এই অঞ্চলটিতে এখনো ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা রয়েছে। একইসাথে বোমা হামলায় মুখোমুখি হওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ও রয়েছে।
জ্যানেট জানান, পুরো ভ্রমণে লোকাল গাইডেরা তাদের নিরাপত্তাজনিত বিষয়টি দেখেছেন। মসুলে ভ্রমণের ক্ষেত্রে তাদের বেশ লম্বা প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়েছিল।
ইরাকে ভ্রমণের জন্য জ্যানেটের কাছে এখন অনেকেই অনুরোধ করে থাকেন। তিনি বলেন, "এটি এমন একটি জায়গা যেটি ঘুরে আসার পর মনে হয় জীবন বদলে দেওয়ার মতো এক অভিজ্ঞতা হয়েছে।"
ধর্মীয় দিক থেকে ভ্রমণ
ইরাকের ধর্মীয় স্থাপনাগুলো বহু আগে থেকেই খ্রিস্টানসহ বহু মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এখনো ইডেন গার্ডেনের মতো স্থাপনায় খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা গিয়ে থাকেন। যেটি বিখ্যাত টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর কাছাকাছি অবস্থিত।
২০২১ সালে পোপ ফ্রান্সিস ইরাকের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় ভ্রমণ করেছিলেন। এমনকি দেশটির পিরামিড সদৃশ সুমেরিয়ান জিগুরাতে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে চার্চ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।
সার্জিও আর্স নামের এক স্প্যানিশ ইউটিউবার বিশ্বের নানা দেশ ভ্রমণ করেন। তিনি চলতি বছরের শুরুর দিকে বিল উইকেন্ডের সাথে ইরাক ভ্রমণ করেছিলেন। সেক্ষেত্রে তিনি দেশটির ধর্মীয় ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য দেখে মুগ্ধ হন।
সারজিও বলেন, "সামারার গ্রেট মসজিদ আপনার অবশ্যই ভ্রমণ করা উচিত। শিয়া মাজারগুলি আপনি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দেখবেন। শুধু সৌন্দর্য ও বিশদ স্থাপত্যশৈলীর জন্য নয়। বরং এগুলোর প্রতি তাদের বিশ্বাস ও ভক্তির জন্যও।"
চলতি বছর কারবালার ঘটনা স্মরণে ইমাম হোসেন ও আল-আব্বাসের মাজারে ২ কোটি ১৩ লাখ মানুষ গিয়েছিলেন। যেখানে সারজিও সুইডেন, যুক্তরাজ্য, ইরান, কুয়েত, পাকিস্তান ও ভারত থেকে আগত তীর্থযাত্রী দেখেছেন। সেখানে তিনি ইরাকিদের অথিতিয়েতায় মুগ্ধ হয়েছিলেন। সকলেই তাকে খাবার, পানি কিংবা বিশ্রামের আমন্ত্রণ জানাচ্ছিলেন।
ট্রেকিং
যুক্তরাজ্যের ট্যুর কোম্পানি আনটেমড বর্ডার ২০১৬ সাল থেকে ইরাকে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সময়ের সাথে সাথে দেশটির পর্যটন শিল্প বদলে যাচ্ছে বলে মনে করেন কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা জেমস উইলকক্স।
তিনি বলেন, "আমরা যখন নিজেদের কার্যক্রম শুরু করি, তখন একটি বড় অঞ্চল আইএসআইএস এর দখলে ছিল। পর্যটকেরা কেবল পাঁচ জনের মতো গ্রুপ করে শুধু ফেডারেল ইরাকে ঘুরতে পারতেন। তাদের ভিসা প্রক্রিয়াও জটিল ছিল। কিন্তু এখন ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা পর্যটনে বৈচিত্র্য আনারও চেষ্টা করেছি। যেখানে যুক্ত হয়েছে ট্র্যাকিং কিংবা স্কাই ট্যুরিংয়ের মতো বিষয়গুলো।"
আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তানের স্থানীয় পর্যটন বোর্ডের তথ্যমতে, অঞ্চলের রাজধানী আর্বিলে চলতি বছরের প্রথমার্ধে ২০ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেছে৷ এই প্রবণতা বজায় থাকলে বছর শেষে এই সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। যা গত বছরের তুলনায় বেশ ঊর্ধ্বমুখী।
ইরাকের পর্যটন শিল্প এখনও শুরুর দিকে রয়েছে। তবে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠন চলমান থাকায় ভ্রমণে অনেক সময় নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
লুপিন ট্র্যাভেলের মোলিনা সিএনএনকে বলেন, "পর্যটন এলাকাগুলি রক্ষণাবেক্ষণের অধীনে থাকা অস্বাভাবিক নয়। সেক্ষেত্রে প্রায়শই স্বল্প নোটিশে ঐ জায়গাগুলি বন্ধ করা হত। কয়েক দশক ধরে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলিতে ঠিকভাবে অর্থ ব্যয় করা হয়নি। একইসাথে অনেক নিদর্শন; যেমন বিখ্যাত ইশতার গেট একসময় ব্যাবিলনে ছিল। এটি এখন ইরাকি জাদুঘরের পরিবর্তে বার্লিনের এক জাদুঘরে রয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইরাকি গবেষক সারাহ সানবার মনে করেন, পর্যটনের মাধ্যমে বাইরের মানুষেরা ইরাকের প্রকৃত অবস্থা দেখতে পাচ্ছেন। একইসাথে গত কয়েক দশক ধরে মিডিয়ায় ইরাককে যুদ্ধ ও সহিংসতার অঞ্চল বলে প্রচারের বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন।
সারাহ সানবার বলেন, "২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক আক্রমণের পর থেকে বর্তমানে দেশটি সর্বোচ্চ স্থিতিশীল অবস্থা পার করছে। নিরাপত্তাজনিত অবস্থা আগে চেয়ে ভালো উন্নতি হয়েছে। পকেটচুরির মতো বিষয়গুলো এখন দেখা যায় না বললেই চলে। ইরাকিরা আতিথেয়তা ও উদারতার জন্য বিখ্যাত। পর্যটকদের তাই এখানে খুশিমনে আমন্ত্রণ জানানো হয়।"
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান