তাদের হাত বন্ধ করার আমরা কে: নারীদের কাজের প্রসঙ্গে জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান নারীদের কাজের সুযোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেছেন, 'যুদ্ধের কঠিন ময়দানে আল্লাহর রাসুল যদি নারীদের জন্য কর্মক্ষেত্র তৈরি করে দিয়ে থাকেন, তাহলে আমরা কে তাদের হাত বন্ধ করার।'
আজ শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেখানে আমাদের মা-বোনেরা ঘরে সুরক্ষিত থাকবেন, কর্মস্থলে সুরক্ষা পাবেন, রাস্তাঘাটেও সুরক্ষিত থাকবেন। তাদের দিকে কোনো খারাপ লোক চোখ তুলে তাকানোর ফুরসত পাবে না। তারা ইজ্জতের সঙ্গে, মর্যাদার সঙ্গে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।'
জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেবে না বলে অপপ্রচার চালানো হয় বলে উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, 'আমাদের ব্যাপারে ইসলামের প্রতিপক্ষ শক্তিরা অপপ্রচার চালায়। বলে, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেবে না। যদিও দেয়ও, জোর করে বোরকা পরাবে।'
তিনি আরও বলেন, 'জোর করা লাগবে না। যে দেশে ইসলাম কায়েম হবে, সে দেশে মায়েরা আনন্দের সঙ্গে তাদের সম্মানের ও মর্যাদার পোশাক পরবেন। তারপরও কোনো মা, কোনোও বোন যদি এই পোশাকের বাইরে থাকেন, আমরা কথা দিচ্ছি, নিশ্চয়তা দিচ্ছি, কারও ওপর জোর খাটানো হবে না। কারণ, এই দেশে শুধু মুসলমানেরা বসবাস করেন না। অন্য ধর্মের লোকেরাও বসবাস করেন।'
তিনি বলেন, 'তারা (অন্য ধর্মাবলম্বীরা) যেহেতু আমাদের ধর্ম গ্রহণ করেননি, তাদের জন্য ইসলামের প্রেসক্রাইব (নির্দেশিত) করা পর্দা প্রযোজ্য নয়। তারা (অন্য ধর্মাবলম্বীরা) যদি ইসলামের সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন, সেটা ভিন্ন কথা। ইসলাম গ্রহণের জন্য কাউকে বাধ্য করা হবে না।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, 'আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে মসজিদ যেমন পাহারা দেওয়া লাগবে না, তেমনি মন্দির, গির্জাও পাহারা দেওয়া লাগবে না। সকল ধর্মের লোকেরা তাদের আপন ধর্ম শান্তিতে পালন করবে।'
তিনি বলেন, চব্বিশের বিজয় এমনি এমনি আসেনি। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর দিনের বেলায় লগি-বৈঠা দিয়ে খুনিরা আদম হত্যায় মেতেছিল। মানুষের মরদেহের ওপর তারা লাফিয়েছিল।
তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেন, 'আমাদের দেশটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি চমৎকার বাগান। কিন্তু বাগানে মাঝে মাঝে হুতুম প্যাঁচা ঢুকে পড়ে। হুতুম প্যাঁচাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা সম্প্রীতি রক্ষা করতে চাই।'
কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির উপাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম। সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আজিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা ইজ্জত উল্লাহ, সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, মুহাদ্দিস রবিউল বাসার, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির শেখ নূরুল হুদা প্রমুখ।